Bangla News Dunia, দীনেশ : ‘আমি পাকিস্তানে যেতে চাই না’। ভারতীয় প্রশাসনের কাছে মিনতির সুরে এমনটাই বলছেন সারদা বাই। কিন্তু কে এই সারদা বাই? আর কেনই এমন আকুতির সুর তাঁর গলায়?
সারদা বাই থাকেন ওডিশায়। তাঁর ভরা সংসারে রয়েছে ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনি। তাঁরা সকলেই ভারতীয়। কিন্তু ভারতীয় তকমা থুরি নাগরিকত্ব জোটেনি শুধু সারদার। কিন্তু কেন? এর উত্তর খুঁজতে হলে আমাদের পিছিয়ে যেতে হবে কয়েক দশক আগে।
আরো পড়ুন : কখন “টিউমার’ ক্যান্সারে পরিনত হয় ? জানুন সঠিক তথ্য
ফ্লাশব্যাকে সময়টা ১৯৭০, পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের সুক্কুর শহরে জন্মেছিলেন সারদা (তাঁর পাকিস্তানি পাসপোর্ট অনুযায়ী)। এরপর কেটে যায় ১৭ টা বছর। ১৯৮৭ সাল, নিজের ৬ সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে ৬০ দিনের ভিসায় পাকিস্তান থেকে ভারতে চলে আসেন সারদার বাবা। কিন্তু তারপর আর ফিরে যাননি। ওডিশার কোরাপুট জেলায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন তাঁরা। এরপর বালঙ্গিরের এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করে সারদা বাই হয়ে যান সারদা কুকরেজা। এটি প্রায় ৩৫ বছর আগের কথা। এরপর ধীরে ধীরে তাঁদের ছেলে মেয়ে হয়। হয় নাতি নাতনিও। কিন্তু এরই মধ্যে ভারতের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করলেও তা মেলেনি, ফলে খাতায় কলমে তিনি রয়ে গিয়েছেন পাকিস্তানি।
আরও পড়ুন : জানুন প্রবল গরমে সান স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয় ?
সময় বেশ ভালোভাবেই কেটে যাচ্ছিল। কিন্তু সারদার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে গত শনিবার। কারণ সেদিন বালঙ্গির জেলা পুলিশ তাঁকে ভারত ছাড়ার জন্য একটি নোটিশ পাঠায়। পুলিশ সুপারের পাঠানো এই নোটিশে বলা হয়েছে, রেকর্ড অনুসারে ভারতে থাকার জন্য তাঁর দীর্ঘমেয়াদী ভিসা নেই। তাই অবিলম্বে তাঁকে এই দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে। তিনি যদি তা না করেন তবে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে শুধু সারদা নন,ভুবনেশ্বরে একজন, কটকে তিনজন এবং বালাসোরে একজনকেও এই ধরনের নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন : অস্ত্রোপচার নাকি হোমিওপ্যাথি ? জানুন কোন পথে টিউমার থেকে স্থায়ী সমাধান
আর এই নোটিশ দেখে যেন আকুলপাথারে পড়েছেন ৫৫ বছরের সারদা। সরকারের কাছে তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন তাঁকে যেন তাঁর পরিবারের থেকে আলাদা না করা হয়। কারণ তাঁর যে কেউ নেই পাকিস্তানে। কাউকেই যে তিনি চেনেন না ওখানে। তিনি বলেন, ‘এখানে আসার পর থেকে আমি ভারতকেই আমার দেশ বলে মনে করি। আমার পরিবারের সকলে ভারতে থাকে। আমি পাকিস্তানে যেতে চাই না। আমি এখানে আসার পর থেকে কখনও পাকিস্তানের কারও সঙ্গে কথা বলিনি। কাউকে ফোন পর্যন্ত করিনি।’ সারদা আরও জানিয়েছেন যে, তাঁর আধার কার্ড রয়েছে। রয়েছে ভারতীয় ভোটার কার্ডও। তিনি নাকি নিয়মিত ভোটও দেন। কিন্তু বহুকাল আগে ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেও তা মেলেনি।
এই বিষয়ে পুলিশের বক্তব্য, তাঁরা সারদার সমস্যাটা বুঝতে পারলেও তাঁদের কিছুই করার নেই এই ক্ষেত্রে। বালঙ্গির জেলার এক পুলিশ কর্তা এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা ভারত সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওদের দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার নোটিশ জারি করেছি। যদি তাঁরা তা না করেন, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’