Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- চালু ব্র্যান্ডের অন্তত ১৮৫টি ব্যাচের ওষুধকে মানোত্তীর্ণ নয় বলে জানাল কেন্দ্র। এর মধ্যে দু’টি ইঞ্জেক্টেবল ওষুধের নমুনায় মিলেছে শুধু জল। আবার বহুল প্রচলিত ও জনপ্রিয় চারটি ব্র্যান্ডের জাল ওষুধও ধরা পড়ল বাজারে।
যার মধ্যে রয়েছে সেফিক্সিম অ্যান্টিবায়োটিকের জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ট্যাক্সিম–ও ট্যাবলেট, কালশিটে ও ফোলার ব্যথা সারানোর অব্যর্থ মলম থ্রম্বোফব জেল এবং কোলেস্টেরল–ট্রাইগ্লিসারাইডের ওষুধ রোসুভাস–এফ১০ ও রোসুভাস–এফ২০।
এই ব্র্যান্ডগুলির প্রস্তুতকারক সংস্থা যথাক্রমে অ্যালকেম, জ়াইডাস হেলথকেয়ার ও সান ফার্মা অবশ্য কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে, এই ব্যাচের ওষুধগুলি তারা তৈরি করেনি। অর্থাৎ স্পষ্ট, কোনও অসাধু সংস্থা ওই সব চালু ব্র্যান্ডের জাল ওষুধ বানিয়ে বাজারে ছেড়ে দিয়েছিল।
গুণমান পরখ করার জন্য বাজার থেকে ওষুধের র্যান্ডম নমুনা তুলে তা সরকারি ল্যাবে টেস্ট করা হয়। জুনেও হয়েছিল সেই পরীক্ষা। তার পরই চালু ব্র্যান্ডের অন্তত ১৮৫টি ব্যাচের ওষুধকে মানোত্তীর্ণ নয় বা এনএসকিউ (নট অফ স্ট্যান্ডার্ড কোয়ালিটি) বলে জানাল কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রেল অর্গানাইজ়েশন (সিডিএসসিও)।
এর মধ্যে ৫৫টি ব্যাচের ওষুধ কেন্দ্রীয় সরকারি ল্যাবে এবং বাকি ১৩০টি ব্যাচের ওষুধ বাংলা–সহ বিভিন্ন রাজ্য সরকারের ড্রাগ ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়েছিল। একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে সিডিএসসিও শুক্রবার জানিয়ে দিয়েছে অভিযুক্ত ওষুধগুলির ব্যাচ নম্বর, যাতে সব পক্ষ এ ব্যাপারে ওয়াকিবহাল হতে পারে। জানানো হয়েছে, জাল ওই ওষুধ চারটির ব্যাচ নম্বরও।
জাল বা স্পুরিয়াস ওষুধ বলে চিহ্নিত হয়েছে যে চারটি ব্র্যান্ড, সেগুলির মধ্যে ট্যাক্সিম–ও (ব্যাচ নম্বর ২৪৪৬০৯৬৭) বিহার, থ্রম্বোফব জেল (ব্যাচ নম্বর আই৪০৪১৩৮) দিল্লি এবং রোসুভাস–এফ১০ (ব্যাচ নম্বর এসআইএফ২৬৭৬এ) ও রোসুভাস–এফ২০ (ব্যাচ নম্বর এসআইএফ২৭৩৬এ) সংগ্রহ করা হয়েছিল তেলঙ্গনার বাজার থেকে।
প্রস্তুতকারক সংস্থারা যেহেতু জানিয়ে দিয়েছে, ওই চারটি ব্যাচের ওষুধ তারা তৈরি করেনি, ফলে কোন সংস্থা সেগুলি তৈরি করেছিল, তা নিয়ে খোঁজখবর করা শুরু করেছে কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
বাংলা–সহ বিভিন্ন রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোলের তরফে অচিরেই নির্দেশিকা প্রকাশ করা হবে, যাতে এই দু’টি ব্যাচের পাশাপাশি ১৮৫টি এনএসকিউ ব্যাচের ওষুধের ব্যাচ নম্বরগুলি ডিসপ্লে করা হয় পাইকারি ও খুচরো ওষুধের আউটলেটে।
আপত্তিকর এনএসকিউ ওষুধের তালিকায় রয়েছে বেশ কয়েকটি চালু ব্র্যান্ড। সেগুলি মূলত ক্যালসিয়াম, বমির ওষুধ ওন্ডাসেট্রন, গ্যাস–অম্বলের ওষুধ র্যাবিপ্রোজ়োল ও প্যান্টোপ্রাজ়োল, অ্যান্টিবায়োটিক সিপ্রোফ্লক্সাসিন, স্টেরয়েড বিটামিথাজ়োন, ডায়াবিটিসের ওষুধ সিটাগ্লিপটিন প্লাস মেটফর্মিন, ডিটক্সের ওষুধ বুপ্রিনর্ফিন, অ্যালার্জির ওষুধ ফেক্সোফিনাডিন ইত্যাদির ব্যাচ।
রয়েছে স্টেরয়েড ডেক্সামিথাজ়োন, রক্তপাত বন্ধের ওষুধ টিএক্সএ, অ্যান্টিফাঙ্গাল ক্লট্রিমাজ়োল কানের ড্রপ, উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ টেলমিসার্টান, অ্যান্টিবায়োটিক সেফোট্যাক্সিম ও অ্যামিকাসিন, পেনকিলার ডাইক্লোফিন্যাকের মতো ব্যাচও।
তবে সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই সেফোট্যাক্সিম ইঞ্জেকশনের (ব্যাচ নম্বর ১১৭২) পাশাপাশি ক্যান্সারের ওষুধ ডোসিট্যাক্সেল ইঞ্জেকশনের (ব্যাচ নম্বর ডিএক্সটি২০২৪১২০৪০) নমুনায় মিলেছে শুধু জল! বিশেষজ্ঞরা চিন্তিত, এই ওষুধ যাঁরা ব্যবহার করেছেন অজান্তে, তাঁদের রোগের কোনও উন্নতি তো হয়ইনি, অবনতি হয়েছে নির্ঘাত।
আরও পড়ুন:- ৩ বছরে ১১১০% রিটার্ন, সোমবারও লগ্নিকারীদের নজরে রেলের এই স্টক
আরও পড়ুন:- কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন ? মুক্তি পেতে সহজ কিছু উপায় জেনে নিন