১৫ মাসেই নজিরবিহীন রায় ! নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণ-খুনে দোষী সাব্যস্ত বাবা, মৃত্যুদণ্ড দিল আদালত

By Bangla News Dunia Dinesh

Published on:

Bangla News Dunia, Pallab : ১৪ বছরের নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণ করে খুনে দোষী সাব্যস্ত বাবার মৃত্যুদণ্ডের (Death penalty) নির্দেশ দিলেন বিচারক (Minor girl rape and murder case)। মাত্র ১৫ মাসের মধ্যে বিচার করে আসানসোল আদালতে (Asansol) বুধবার এই নজিরবিহীন রায় ঘোষণা করেছেন স্পেশাল পকসো কোর্টের বিচারক সুপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মামলার সরকারি আইনজীবীর দাবি, এই প্রথম আসানসোল আদালতে দোষী সাব্যস্ত কোনও আসামির মৃত্যুদণ্ডের সাজা হল। তাও আবার মাত্র ১ বছর ৩ মাসের মধ্যে।

আরও পড়ুন : WBSSC SLST ফর্ম Category Update শুরু, দেখুন সহজ উপায়

জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছিল ২০২৪ সালের ১২ মে। অন্যান্য দিনের মতোই সেদিন রাতেও বার্নপুরের বাসিন্দা ওই নাবালিকা তার মা, বাবা ও ভাইবোনের সঙ্গে ঘুমিয়েছিল। কিন্তু পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে মা দেখেন মেয়ের মুখ পর্যন্ত চাদরে ঢাকা। সন্দেহ হতেই চাদর সরিয়ে দেখেন নিথর হয়ে পড়ে রয়েছে মেয়ে। এরপর বিষয়টি নিজের স্বামীকে বলেন। কিন্তু তাঁর স্বামী জানিয়ে দেন এব্যাপারে পুলিশ বা কাউকে বলার দরকার নেই। কিন্তু তাতে রাজি হননি নাবালিকার মা। এরপরই তিনি চিৎকার করে সবাইকে ডাকেন। এমনকি পেশায় টোটোচালক হওয়া সত্ত্বেও ওই নাবালিকার বাবা নিজের মেয়েকে টোটোতে করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাননি। এরপর নাবালিকার মা অন্য একজনের টোটোতে করে মেয়েকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকরা ওই নাবালিকাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের পর জানা যায়, নাবালিকাকে গলায় দড়িজাতীয় কিছু চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। তার আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এরপরই পরের দিন ওই নাবালিকার মা হিরাপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এই ঘটনায় নিজের স্বামীর জড়িত থাকার সন্দেহও প্রকাশ করেন তিনি। এরপরই হিরাপুর থানার পুলিশ নাবালিকার বাবাকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে পকসো আইনের ৬ নং( ধর্ষণ), ভারতীয় দন্ডবিধির ৩০২ নং (খুন) ২০১ নং (তথ্য প্রমাণ লোপাট) ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছিল।

গত সোমবার স্পেশাল পকসো কোর্টের বিচারক সুপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায় তদন্তকারী অফিসারের দেওয়ার তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ও সওয়াল-জবাব শেষে নির্যাতিতার বাবাকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন। আর এদিন সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে বিচারক দোষী সাব্যস্তর বিরুদ্ধে পকসো আইনের ৬ নং ও আইপিসির ৩০২ নং ধারায় ফাঁসির নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে আইপিসির ২০১ নং ধারায় ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশও দিয়েছেন। এছাড়াও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ারও নির্দেশ দেন বিচারক। এই জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। বিচারক আরও নির্দেশ দিয়েছেন যে, রাজ্য সরকারকে ভিকটিম কমপেনসেশান ফান্ড থেকে মৃতার মাকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে। এই মামলায় মৃতার মা, বেশ কয়েকজন আত্মীয়, হাসপাতালের চিকিৎসক, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ সহ মোট ১৬ জন সাক্ষী দিয়েছিলেন। মামলা চলাকালীন অভিযুক্ত ব্যক্তি (বর্তমানে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত) আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নিজের দোষ স্বীকার করেছিলেন।

এদিন সরকারি আইনজীবি বলেন, ‘এই মামলার তদন্তকারী অফিসার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আদালতে ধৃতের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছিলেন। নাবালিকার শরীরে এমন কিছু প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল, যেগুলোর ফরেনসিক পরীক্ষার সঙ্গে তার বাবার ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট মিলে যায়। এছাড়াও যে দড়ির ফাঁস দিয়ে নাবালিকাকে খুন করা হয়েছিল, তাও তার বাবার দেখানো জায়গা থেকেই উদ্ধার হয়েছিল।’

আরও পড়ুন : FD, RD এর থেকে বেশি সুদ ! এলআইসি জীবন লক্ষ পলিসি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য

Bangla News Dunia Dinesh

মন্তব্য করুন