Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- পাহাড় আর জঙ্গলে ঘেরা জম্মু-কাশ্মীরের কিশতওয়ার জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম চাসটি ৷ মাচাইল মাতার মন্দিরে যাওয়ার পথে ছোট এই গ্রাম ৷ বৃহস্পতিবার, 14 অগস্ট মেঘভাঙা বৃষ্টিতে হড়পা বানে ভেসে গিয়েছে গ্রামটি ৷ প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৃত একাধিক ৷ কিন্তু কথায় আছে, “রাখে হরি তো মারে কে!” এবার তারই প্রমাণ মিলল সেখানে ৷ প্রায় 30 ঘণ্টা পর কাদামাটির নীচ থেকে এক ব্যক্তিতে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করলেন উদ্ধারকারীরা ৷
উদ্ধার হওয়া ব্যক্তির নাম সুভাষ চন্দ্র ৷ মাচাইল মাতার ভক্তদের জন্য দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে এলাকায় একটি লঙ্গরখানা চালাচ্ছেন তিনি ৷ হড়পা বানে ভেসে গিয়েছে তাঁর সবকিছু ৷ ভেসে যান তিনিও ৷ অবশেষে প্রায় 30 ঘণ্টা পর ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয় ৷ আশ্চর্যজনক এই ঘটনাকে মাচাইল মাতার আশির্বাদ বলে ব্যাখ্যা করেছেন অনেকে ৷
শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, ভয়াবহ প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে 60 জনের ৷ প্রশাসনিক তথ্য অনুযায়ী, বানের জলে ভেসে গিয়েছে গ্রামটির অন্তত 16টি বাড়ি এবং সরকারি ভবন, 3টি মন্দির এবং 4টি কারখানা-সহ সেনার আউট পোস্ট ৷ ঘটনার তিন দিন পর, রবিবারও এলাকায় উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে এসডিআরএফ, এনডিআরএফ এবং সেনার যৌথ দল ৷
সার্বিক পরিস্থিতি এবং উদ্ধারকাজ খতিয়ে দেখতে শুক্রবার কিশতওয়ার পৌঁছন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমার আবদুল্লা ৷ শনিবার সকালে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামটির সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন তিনি ৷ কথা বলেন স্থানীয়দের সঙ্গে ৷
উদ্ধারকাজ দেখতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় বিরোধ দলনেতা সুনীল শর্মা ৷ সুভাষকে উদ্ধারের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ডোগরি ভাষায় একটি প্রচলিত প্রবাদ রয়েছে- ভগবান যাকে রক্ষা করেন, তাঁকে কেউ হত্যা করতে পারবে না ৷ দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে ভক্তদের নিস্বার্থভাবে খাবারের জোগান দিচ্ছেন সুভাষ ৷ সেই কারণে তাঁর প্রাণ রক্ষা করেছেন মাচাইল মাতা ৷”
বিরোধী নেতার কথায়, আনন্দের বিষয়টি হল লঙ্গর নির্মাণ করে ভক্তদের মুখে ফের অন্ন তুলে দেবেন সুভাষ ৷ তাঁর কথায় “তাঁর প্রাণ বাঁচিয়ে জীবনের মূল্যবান উপহার দিয়েছেন মাচাইল মাতা ৷” এমনকী জম্মুর সাংবাদিক বৈঠকে সুভাষের কথা উল্লেখ করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডাঃ জিতেন্দ্র সিংও ৷ জানান, ঘটনার সময় এলাকায় প্রায় 1 হাজার থেকে 1 হাজার 500 জন ভক্ত এলাকায় উপস্থিত ছিলেন ৷ সুভাষের লঙ্গরখানায় ছিলেন 200 থেকে 300 জন ভক্ত ৷
উধামপুরের বাসিন্দা সুভাষ দায়িত্ব সহকারে ভক্তদের সেবা করে আসছেন কয়েক বছর ধরে ৷ প্রতি বছর মাচাইল মাতার যাত্রা শুরুর আগেই এলাকায় লঙ্গরখানা নির্মাণ করেন তিনি এবং তাঁর বাকি সহকারীরা ৷ দুর্গম পাহাড়ি রাস্তায় কয়েক কিলোমিটার ট্রেক করে ওঠার পর প্রতিদিন প্রায় কয়েকশো ভক্ত তাঁর লঙ্গরখানায় পাত পেড়ে খাবার খান ৷ এমনকী, দুর্যোগের দিনও লঙ্গরখানায় উপস্থিত ছিলেন বহু ভক্ত ৷ ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে যান বহু ভক্ত ৷
শুক্রবার লঙ্গরখানা এলাকায় ধ্বংসস্তূপের নীচে উদ্ধারকাজ চালান সেনা, এনডিআরএফ, এসডিআরএফ এবং স্থানীয়রা ৷ সেই সময় সুভাষকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেন তাঁরা ৷ তাঁর পাশেই 4 জনের দেহ উদ্ধার করা হয় ৷ এক সেনা আধিকারিক বলেন, “উদ্ধারকাজ শুরুর পর এই প্রথম কাউকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৷ এটি ভগবানের আশির্বাদ ছাড়া আর কিছু নয় ৷” শনিবার আরও 4 জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ৷
আরও পড়ুন:- মাত্র ১২ টাকায় পাবেন ৩ লাখ টাকার সুবিধা। দুর্দান্ত স্কিম চালু করলো এই ব্যাংক
আরও পড়ুন:- ‘গুজরাত ফাইলস করার দম হল না ?’ বিবেককে তোপ কুণালের