Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- জুমার (শুক্রবার) নমাজ না পড়লেই জেল। এমনই আইন চালু হলো মালয়েশিয়ার তেরিংগানু রাজ্যে। সোমবার এই খবর জানিয়েছেন রাজ্যের তথ্য, দাওয়াত ও শরিয়াহ সশক্তিকরণ মন্ত্রী মোহম্মদ খালিল আবদুল হাদি।
তেরিংগানু সরকার গোটা রাজ্যেই শরিয়াহ আইন লাগু করতে চায়। সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, উপযুক্ত কারণ ছাড়া জুমার নমাজে যোগ না দিলে ৩ হাজার রিঙ্গিত (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৬১,৭৮০ টাকা) পর্যন্ত জরিমানা কিংবা ২ বছরের জেল হতে পারে। এমনকী জেল ও জরিমানা দুটোই হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
এই প্রসঙ্গে মন্ত্রী মোহম্মদ খালিল আবদুল হাদি বলেন, ‘শুধু ধর্মীয় উদ্দেশে জুমার নমাজ পড়া হয় না, এটা মুসলিমদের আনুগত্য প্রকাশেরও মাধ্যম। এই কথা সবাইকে মনে করিয়ে দেওয়াই আইনের মূল উদ্দেশ্য।’
তেরিংগানুতে এর আগে টানা তিনিবার জুমার নমাজ না পড়লে শাস্তির বিধান ছিল। এ বার প্রত্যেক জুমাতেই নমাজ পড়ার বিধান চালু হলো। রাজ্যের শাসক দল তথা প্যান-মালয়েশিয়ান ইসলামিক পার্টি চিন্তাধারার দিক থেকে কট্টর বলেই পরিচিত। তারাই এই আইন লাগু করেছে।
তেরিংগানুর জনসংখ্যা প্রায় ১২ লাখ। এর মধ্যে ৯৯ শতাংশের বেশি মালয় মুসলমান। এটাই মালয়েশিয়ার একমাত্র রাজ্য যেখানে কোনও বিরোধী দল নেই। ২০২২ সালের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন প্যান-মালয়েশিয়ান ইসলামিক পার্টি রাজ্যের সব ক’টি (৩২টি) আসনেই জিতেছিল।
২০২৭ সালে তেরিংগানুতে নির্বাচন হওয়ার কথা। তাই ভোটকে পাখির চোখ করেই প্যান-মালয়েশিয়ান ইসলামিক পার্টি ঘুঁটি সাজাচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।
শুধু তাই নয়। ধর্মীয় অপরাধের ক্ষেত্রে গুরুতর শাস্তি দেওয়ার পক্ষে বরাবর সওয়াল করে এসেছে প্যান-মালয়েশিয়ান ইসলামিক পার্টি। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্যে নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক আরও শক্তিশালী করাই তাদের লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের জমানায় ধর্মীয় গোঁড়ামি কয়েক গুণ বেড়েছে বলে অভিযোগ কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের। মাস কয়েক আগেই মালয়েশিয়ার শতাব্দী প্রাচীন একটি মন্দিরের জায়গায় মসজিদ তৈরি করা হয়। তার উদ্বোধনও করেন প্রধানমন্ত্রী।
তবে এই আইনের ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে মালয়েশিয়াতেই। আজ়িরা আজ়িজ নামে এক আইনজীবী সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে লিখেছেন, ‘এই আইন কোরানের নীতির বিরুদ্ধে।’ আবার কারও দাবি, অবিলম্বে এই আইন না পাল্টালে মালয়েশিয়াও তালিবানি রাজ্যে পরিণত হবে।