Bangla News Dunia, Pallab : পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্কের কেন্দ্রে হয়ে রয়েছে। এবার এই বিষয়টি নতুন মোড় নিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের সরাসরি হস্তক্ষেপের মাধ্যমে। আদালতের নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পালকে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে, যা রাজ্যের হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। শিক্ষক নিয়োগের একের পর এক ধাক্কা পর্ষদ সভাপতির।
মামলার পটভূমি
২০২২ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াকে ঘিরে একাধিক অভিযোগ সামনে আসে। বিশেষ করে, D.El.Ed ও B.Ed যোগ্যতার প্রার্থীদের নিয়ে নীতিগত দ্বন্দ্ব তীব্র হয়ে উঠেছে। এদিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী এই নিয়োগে D.El.Ed ডিগ্রিধারীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা থাকলেও অভিযোগ ওঠে যে, পর্ষদ সেই নির্দেশ যথাযথভাবে মানেনি। এর ফলে অনেক যোগ্য D.El.Ed প্রার্থী সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
কেন আদালতের তলব
ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। এই মামলার মূল অভিযোগ—পর্ষদ আদালতের পূর্ববর্তী নির্দেশ পালন করেনি। এর মধ্যে অন্যতম ছিল যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রার্থীদের তালিকা প্রস্তুত করা এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন করা। এদিকে আদালত বিষয়টিকে গুরুতর মনে করে পর্ষদ সভাপতিকে সশরীরে হাজির হতে নির্দেশ দেয়।
D.El.Ed বনাম B.Ed যোগ্যতার দ্বন্দ্ব
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরেই D.El.Ed (Diploma in Elementary Education) ও B.Ed (Bachelor of Education) ডিগ্রিধারীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা কঠিন হারে চলছে।
- D.El.Ed ডিগ্রিধারী: সাধারণত প্রাথমিক শিক্ষার জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত এবং ক্লাস I থেকে V পর্যন্ত পড়ানোর জন্য উপযুক্ত ধরা হয়ে থাকে।
- B.Ed ডিগ্রিধারী: এই ডিগ্রি সাধারণত উচ্চ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের জন্য হলেও পূর্ববর্তী নিয়োগে এদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী প্রাথমিক স্তরের নিয়োগে প্রথমে D.El.Ed প্রার্থীদের সুযোগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল, তবে অভিযোগ রয়েছে যে বাস্তবে তা হয়নি।
চাকরিপ্রার্থীদের প্রতিক্রিয়া
এদিকে আদালতের এই তলবের খবর ছড়িয়ে পড়তেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের চাকরিপ্রার্থীরা নতুন আশার আলো দেখছেন। অনেকের মতামত অনুযায়ী, আদালতের হস্তক্ষেপে এবার হয়তো প্রকৃত যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে এবং অন্যায়ভাবে বঞ্চিত প্রার্থীরা ন্যায়বিচার পাবেন।