Bangla News Dunia, Pallab : পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC) কর্তৃক আয়োজিত SLST (রাজ্য স্তরীয় নিয়োগ পরীক্ষা) নিয়ে বিতর্ক যেন থামছেই না। ২০১৬ সালের যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা আবার একবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন, এবার আদালত অবমাননা মামলা নিয়ে। ২১শে আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া একটি নির্দেশ না মানার অভিযোগ উঠেছে কমিশনের বিরুদ্ধে, যা নিয়ে রাজ্যজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
মামলার প্রেক্ষাপট
ঘটনার সূত্রপাত ২১শে আগস্ট, যেদিন সুপ্রিম কোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দেয়। নির্দেশে বলা হয়েছিল, ২০১৬ সালের যে সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা ৪৫% নম্বর পেয়েছিলেন, তাদের পরীক্ষায় বসার সুযোগ দিতে হবে। এর থেকেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছিল যে, প্রয়োজনে কমিশন পরীক্ষার দিন পিছিয়ে দিতে পারে (“shall be postponed”), যাতে এই পরীক্ষার্থীরা প্রস্তুতির জন্য পর্যাপ্ত সময় পান।
কিন্তু অভিযোগ, SSC এই নির্দেশের একটি অংশ মেনে নিলেও, অন্য অংশটি সম্পূর্ণ উপেক্ষা করেছে। কমিশন ২রা সেপ্টেম্বরের মধ্যে নতুন করে ফর্ম পূরণের সময়সীমা দেয় এবং ঠিক তার পরের দিনই অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করার কথা জানায়। পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ৭ই সেপ্টেম্বর। এই সিদ্ধান্তে যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অভিযোগ ও দাবি
চিন্ময় মণ্ডলের নেতৃত্বে শিক্ষক-শিক্ষিকারা একগুচ্ছ দাবি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন। তাদের মূল অভিযোগগুলি হল:
- প্রস্তুতির অভাব: ফর্ম পূরণের পরেই পরীক্ষায় বসতে হলে প্রস্তুতির জন্য কোনো সময়ই পাওয়া যাবে না। একদিকে স্কুলের চাকরি, অন্যদিকে পরীক্ষার চাপ -এই দুই সামলে ওঠা প্রায় অসম্ভব।
- সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য: আদালত পরীক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার কথা বললেও, কমিশন সেই নির্দেশকে গুরুত্ব দেয়নি।
- শূন্যপদের সংখ্যা: ২০১৬ সালের শূন্যপদ কোনোভাবেই কমানো বা বাতিল করা যাবে না।
- পৃথক নির্বাচন প্রক্রিয়া: নতুন এবং “অকলঙ্কিত” (untainted) প্রার্থীদের জন্য আলাদা নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করতে হবে, কারণ একসঙ্গে পরীক্ষা হলে তা অন্যায্য হবে।
- গ্রেস মার্কস: যদি আলাদা পরীক্ষা সম্ভব না হয়, তাহলে Untainted শিক্ষকদের প্যানেলে স্থান নিশ্চিত করার জন্য গ্রেস মার্কস দিতে হবে।
- ছুটির সদ্ব্যবহার: সামনেই পুজোর ছুটি, এই সময়টা পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য কাজে লাগানো যেতে পারে। তাই পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার দাবি আরও জোরালো হচ্ছে।
কমিশনের অবস্থান
অন্যদিকে, স্কুল সার্ভিস কমিশন নিজেদের অবস্থানে অনড়। তারা ৭ই এবং ১৪ই সেপ্টেম্বর পরীক্ষা নিতে বদ্ধপরিকর। কমিশনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে, তারা সমস্ত প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে এবং এই মুহূর্তে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। এই বিষয়ে তারা একটি IA (Intervention Application) ফাইল করেছে এবং আদালতে নিজেদের যুক্তি পেশ করবে।