বুধে চালু আমেরিকার অতিরিক্ত শুল্কনীতি ! মাথা নত করতে নারাজ মোদী

By Bangla News Dunia Dinesh

Published on:

Bangla News Dunia, Pallab : বিশ্বজুড়ে বাণিজ্যমহলে বিস্তর জল্পনার পর শেষ পর্যন্ত ২৭ অগাস্ট ভারতীয় সময় সকাল ৯টা ৩১ থেকে ভারতের ওপর আমেরিকার অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ  শুল্ক (Tariff) চাপানো কার্যকর হতে চলেছে। এখন সব মিলিয়ে বুধবার থেকে ভারতীয় পন্যের ওপর আমেরিকায় ৫০ শতাংশ আমদানি শুল্ক শুরু হয়ে গেল।

রাশিয়ার (Russia) থেকে ভারত (India) তেল কিনে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রাশিয়াকে সাহায্য করছে। এমন অভিযোগ এনে ভারতকে রাশিয়া থেকে তেল না কেনার হুমকি দেয় আমেরিকা। বলা হয়, এরপরও ভারত ওই দেশ থেকে তেল কিনলে ভারতীয় পন্যের ওপর আমেরিকা (America) চড়া শুল্ক আরোপ করবে। কিন্তু ভারত আমেরিকার ওই হুমকিকে উপেক্ষা করে জানায় দেশের স্বার্থে কোন চাপের কাছে মাথা নত করবে না ভারত। এরপর ২৫ শতাংশ করে দুইবারে মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপায় ট্রাম্প (Trump) প্রশাসন।

মঙ্গলবার ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানো নিয়ে সরকারি ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করছে হোয়াইট হাউস (White House)। সেখানে জানানো হয়েছে, বুধবার থেকে আমেরিকায় রপ্তানি করা ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক নেওয়া হবে।

এদিকে ট্রাম্প প্রশাসনের ৫০ শতাংশ শুল্ক ও ভারত-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তার আবহে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) অর্থ ও বাণিজ্যমন্ত্রী, উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিক এবং অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

বৈঠকে বর্তমান অবস্থায় আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকা এবং আর্থিক বৃদ্ধির গতি ধরে রাখার বিষয়ে বিকল্প পথ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

তবে ভারতের তরফে আমেরিকার এই শুল্কনীতি নিয়ে একাধিক বার অবস্থান পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন পরিসংখ্যান দিয়ে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, রাশিয়ার তেল কেনা নিয়ে ভারতের সমালোচনাকারী দেশগুলি রাশিয়ার সঙ্গে জোরকদমে বাণিজ্য করে যাচ্ছে।, ২০২৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং রাশিয়ার মধ্যে ৬৭,৫০০ কোটি ইউরোর দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য হয়েছে। ২০২৩ সালে বাণিজ্য হয়েছে ১৭,২০০ কোটি ইউরোর, এই হিসাব ভারত-রাশিয়ার মোট বাণিজ্যের চেয়ে অনেক বেশি। শুধু তাই নয়, ২০২৪ সালে ইউরোপের প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানির পরিমাণও ১৬৫ লক্ষ টনে গিয়ে পৌঁছেছে, যা ২০২২ সালের রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে।

এছাড়াও রাশিয়া থেকে সার, খনিজ, রাসায়নিক, লোহা, ইস্পাত ও বিভিন্ন যন্ত্রপাতি আমদানি করে ইউরোপ। পিছিয়ে নেই আমেরিকাও। রাশিয়ার কাছ থেকে তারা পরমাণু শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লোরাইড, প্যালাডিয়াম ও রাসায়নিক কেনে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহেও সেই আমদানি অব্যাহত রয়েছে। আমেরিকার এই শুল্ক-হুমকি যে ভারত মেনে নেবে না তা ইতিমধ্যে বেশ কয়েক দফায় স্পষ্ট করে দিয়েছে নয়াদিল্লি।

তবে ট্রাম্প প্রশাসনের ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর ফলে প্রায় ৪০০০ কোটি ডলারের (প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ কোটি টাকা) রপ্তানি ধাক্কা খাবে। তবে দেশের ভেতরের বাজারে কেনাকাটা বাড়ালে সেই ধাক্কা কিছুটা সামাল দেওয়া যেতে পারে বলে মনে করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এর পাশাপাশি নতুন লগ্নি টানার রাস্তা খুললেও শুল্ক ধাক্কা কিছুটা সামলানো যেতে পারে বলে মত অর্থনীতিবিদদের।

Bangla News Dunia Dinesh

মন্তব্য করুন