Bangla News Dunia, Pallab : বর্তমানে স্মার্টফোন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। আড্ডা থেকে অফিসিয়াল কাজ—সবই এখন হয় WhatsApp-এর মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। কিন্তু বর্তমানে এই WhatsApp-ই হয়ে উঠছে সরকারি পরিষেবার অন্যতম মাধ্যম। এবার ঘরে বসেই WhatsApp ব্যবহার করে আপনি পেয়ে যেতে পারেন জন্ম সনদ (Birth Certificate) কিংবা বিয়ের সার্টিফিকেটও (Marriage Certificate)। তবে ভাবতে অবাক লাগলেও, বাস্তবে এটি সম্ভব করেছে। আর এই উদ্যোগের পেছনে আছে ভারতের এক গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের সরকার।
আজকের সমস্যাটা কী?
মনে করুন আপনার বা আপনার সন্তানের জন্ম সনদ হারিয়ে গেছে, বা বিয়ের সার্টিফিকেটের প্রয়োজন রয়েছে, যেটি কোথাও খুঁজে পাচ্ছেন না। আপনি আগে জানতেন, এগুলোর জন্য আপনাকে যেতে হবে মিউনিসিপ্যাল অফিস বা গ্রাম পঞ্চায়েত। সেখানে লম্বা লাইন, অসংখ্য কাগজপত্র, ঘুরতে ঘুরতে অফিসারদের কাছে অনুরোধ করা তো আছেই, কখনও আবার ঘুষের অভিযোগ—সব মিলিয়ে এক বিরক্তিকর ও সময় নষ্টকারী প্রক্রিয়া ছিল। অনেকেই এই ঝামেলার জন্য প্রয়োজনীয় নথি তোলাই এড়িয়ে যেতেন অনেকেই।
কীভাবে WhatsApp হতে পারে সমাধান?
বর্তমানে WhatsApp-এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হল এটি প্রত্যেকের মোবাইলে থাকবেই। আর যেহেতু এটি ব্যবহার করাও অতি সহজ, তাই গ্রামের প্রান্তিক মানুষ থেকে শহরের টেকি যুবক—সবাই এটি ব্যবহার করে থাকেন। আর বর্তমানে WhatsApp-এর মাধ্যমেই যদি প্রয়োজনীয় নথি মেলে, তাহলে তা শুধু সময় সাশ্রয় নয়, বরং সরকারের ওপর মানুষের আস্থা আরও বেড়ে যাবে।
এই পরিষেবা কী কী সার্টিফিকেটের জন্য?
এই পরিষেবার মাধ্যমে আপনি মূলত নিচের দুটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথি পেতে পারেন—
- ✅ জন্ম সার্টিফিকেট (Birth Certificate)
- ✅ বিয়ের সার্টিফিকেট (Marriage Certificate)
এই দুটি নথি সাধারণত জীবনযাত্রার নানা ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয়ে দাড়িয়েছে:
- স্কুলে ভর্তি
- পাসপোর্ট আবেদন
- ভিসার জন্য
- আইনত পরিচয় প্রমাণ
- সম্পত্তির উত্তরাধিকার
- বিদেশে যাওয়ার সময়
তাই বর্তমানে এই সার্টিফিকেট যদি বাড়িতে বসে WhatsApp-এ পাওয়া যায়, তবে তা সাধারণ নাগরিকদের জন্য এক বিশাল সুবিধা পেতে পারেন।
WhatsApp-এ কীভাবে পাবেন এই সার্টিফিকেট? ধাপে ধাপে জানুন
এই পরিষেবা গ্রহণ করতে আপনাকে সরকারের একটি নির্দিষ্ট WhatsApp নম্বরে যেতে হবে (যেটি সরকার নির্ধারণ করবে)। তারপরে যা যা করতে হবে—
- WhatsApp নম্বরে “Hi” লিখে মেসেজ পাঠান
এরপর স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি মেনু সামনে আসবে। - মেনু থেকে সার্টিফিকেট নির্বাচন করুন
এরপর আপনি চাইলে জন্ম অথবা বিয়ের সার্টিফিকেট বেছে নিতে পারেন। - প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে
- নাম
- জন্ম তারিখ বা বিয়ের তারিখ
- আবেদন নম্বর (যদি থাকে)
- জন্মস্থান বা বিয়ের রেজিস্ট্রেশন এলাকা
- তথ্য যাচাইয়ের জন্য কিছু সময় দিতে হবে
সমস্ত তথ্য যাচাই করে প্রশাসন সেই নথির ডিজিটাল কপি প্রস্তুত করে দিবেন। - PDF ফাইল ডাউনলোড করুন WhatsApp-এ
সমস্ত কিছু ঠিকঠাক থাকলে, আপনার WhatsApp-এই চলে আসবে সার্টিফিকেটের এক PDF ফাইল।
এই পরিষেবার সবচেয়ে বড় সুবিধাগুলো কী কী?
এই উদ্যোগের মাধ্যমে সাধারণ নাগরিকরা একাধিক সুবিধা পেয়ে যাবেন –
- 📌 সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে: অফিসে দৌড়াদৌড়ি, কাগজপত্র জোগাড়, যানজট, ট্র্যাভেল খরচ—সব বাদ পড়বে।
- 📌 লাইনে দাঁড়ানোর দরকার নেই: একজন ব্যক্তি এখন তার ঘরে বসেই এক ক্লিকে গুরুত্বপূর্ণ নথি পেয়ে যেতে পারবেন সহজেই।
- 📌 ডিজিটাল প্রমাণ হিসাবে গ্রহণযোগ্য: এই সার্টিফিকেটগুলো ডিজিটালি সই করা থাকবে এবং সব সরকারি ও বেসরকারি জায়গায় বৈধ হবে।
- 📌 নিরাপদ তথ্য প্রেরণ: WhatsApp-এর এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন থাকায় তথ্য লিক হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।
- 📌 সবার নাগালে পরিষেবা: স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট থাকলেই যেকোনও ব্যক্তি এই সুবিধা নিতে পারবেন সহজেই ।
এই পরিষেবার মাধ্যমে সরকারি দপ্তরের কাজেও গতি আসবে
শুধু নাগরিক নয়, এই ডিজিটাল পরিষেবা সরকারি কর্মীদের জন্যও আশীর্বাদ। কারণ:
- অফিসে ভিড় অনেক কমবে
- নথিপত্রের হারানো বা ভুল এন্ট্রির সম্ভাবনা অনেক কমবে
- ফিজিক্যাল ফাইলের বোঝা অনেক কমবে
- প্রশাসনিক স্বচ্ছতা বাড়তে পারে
- ডিজিটাল আর্কাইভিং সহজ হয়ে থাকে
সরকারও চাইছে, কাগজের ব্যবহার কমিয়ে ডিজিটাল ডকুমেন্টের ওপর নির্ভরতা যেন বাড়ে।