পুজোর আগে সুসংবাদ ! রাজ্যে ফ্রি চাল-আটা অন্য রাজ্যে নগদ ১০০০ টাকা, কারা কোন কার্ডে কী পাবেন ?

By Bangla News Dunia Desk - Pallab

Published on:

সাধারণ মানুষের জন্য সেপ্টেম্বর মাসটি একাধিক জনকল্যাণমূলক উদ্যোগ নিয়ে এসেছে এক রাজ্য সরকার। এবার শুধু বিনামূল্যে রেশন নয় পাশাপাশি রেশন কার্ডধারীদের জন্য রয়েছে নগদ আর্থিক সহায়তা ও বিশেষ পুজোর প্যাকেজ দিতে চলেছে। ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তর রেশন বরাদ্দের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।এর পাশাপাশি কেন্দ্র সরকার এবং সংশ্লিষ্ট রাজ্যও রেশন কার্ডধারীদের জন্য আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছে।

সরকারের এই পুরো উদ্যোগের মধ্যে লক্ষ্য একটাই— রাজ্যের ও রাজ্যের বাইরের রেশন গ্রাহকদের কাছে খাদ্যসুরক্ষা ও আর্থিক স্বস্তি পৌঁছে দিতে হবে। আসুন বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক— সেপ্টেম্বর ২০২৫-এ কোন রেশন কার্ডে কতটা খাদ্যসামগ্রী পাওয়া যাবে, আর কারা পাচ্ছেন নগদ টাকার সুবিধা।

আগস্ট মাসের মতই সেপ্টেম্বরেও সংশ্লিষ্ট সরকার নিশ্চিত করেছে, সমস্ত শ্রেণির রেশন কার্ডধারীদের ফ্রি রেশন সামগ্রী দেওয়া হবে। এতে সাধারণ মানুষ যেমন উপকৃত হচ্ছেন, তেমনি গ্রামীণ ও দুর্গম এলাকার পরিবারগুলিও বিশেষভাবে স্বস্তি পেতে চলেছেন। তবে এবার বরাদ্দের পরিমাণে কিছুটা পরিবর্তন হলেও, প্রায় সব শ্রেণির কার্ডে চাল, গম বা আটা পেতে চলেছে।

অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনা (AAY) কার্ডধারীরা বরাবরের মতোই এবারও সর্বোচ্চ পরিমাণ রেশন পেতে চলেছেন। সেপ্টেম্বর মাসে প্রতিটি AAY পরিবারের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ২১ কেজি চাল সঙ্গে ১৩.৩০০ কেজি আটা বা বিকল্প হিসেবে ১৪ কেজি দরে গম। যারা জঙ্গলমহল বা পাহাড়ি অঞ্চলে থাকেন, তাদের জন্য বরাদ্দ বাড়িয়ে দেওয়া হবে।

এই সুবিধা নিম্ন আয়ের পরিবারের জন্য বিশেষ সহায়ক হতে পারে। বহু পরিবার শুধুমাত্র এই বরাদ্দে এক মাসের খাদ্যচাহিদার বড় অংশ মেটাতে পারেন।

Priority Household (PHH) ও Special Priority Household (SPHH) কার্ডধারীদের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৩ কেজি চাল সঙ্গে ২ কেজি গম অথবা সমপরিমাণ আটা পাবেন। এতে যেমন ন্যূনতম খাদ্যসুরক্ষা নিশ্চিত হচ্ছে, তেমনি নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলির পরিবারের মধ্যেও স্বস্তি আসতে চলেছে।

এদিকে সরকার ঘোষণা করেছে, জঙ্গলমহল ও দুর্গম অঞ্চলে এই বরাদ্দের সঙ্গে অতিরিক্ত চালও দেওয়া হবে। এসব অঞ্চলে সড়ক সংযোগ দুর্বল হওয়ায় সরকারের এই পদক্ষেপ অত্যন্ত প্রশংসাযোগ্য হতে পারে।

রাজ্যের নিজস্ব খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্প RKSY-I-এর আওতায় থাকা পরিবারগুলি সেপ্টেম্বর মাসে পাচ্ছেন ৫ কেজি ফ্রী চাল। এই কার্ডধারীদের জন্য গম বা আটা না থাকলেও, চালের নিরবিচারে বরাদ্দ যথেষ্ট সুরক্ষা পেতে পারে। সাধারণত গ্রামীণ অঞ্চলের পরিবারগুলিই এই কার্ডের আওতায় আছেন।

এদিকে সরকার জানিয়েছে, পরিবারে সদস্য সংখ্যা বেশি হলে পরিমাণ কিছুটা বাড়ানো হতে পারে, তবে সেটি স্থানীয় রেশন ডিলার এবং খাদ্য দপ্তরের নির্ধারিত মানদণ্ড অনুসারে হবে।

RKSY-II কার্ডধারীরা সাধারণত রাজ্য সরকারের অন্তর্গত সীমিত সুবিধাপ্রাপ্ত পরিবার রয়েছে। এই কার্ডধারীদের জন্য প্রতি মাসে ২ কেজি চাল বরাদ্দ হয়েছে। যদিও এটিকে অনেকেই কম মনে করা হচ্ছে, তবুও এটা অস্বীকার করা যায় না যে অন্তত ন্যূনতম খাদ্যসামগ্রী সরবরাহের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা যাবে।

এই কার্ডধারীদের জন্য ভবিষ্যতে বরাদ্দ বাড়ানো হবে কিনা— সে নিয়ে এখনো কোনো সরকারি ঘোষণা করে জানানো হয়নি।

পাহাড়ি এলাকা, জঙ্গলমহল এবং সিঙ্গুরের মতো দুর্গম এলাকায় থাকা AAY, PHH, SPHH এবং RKSY-I কার্ডধারীদের জন্য বাড়তি চাল ও আটা বরাদ্দ করেছে সরকার। এই পদক্ষেপ সরকারি নীতির অন্তর্গত সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠা করার একটি বড় উদাহরণ হতে পারে।

এদিকে রাজ্য সরকার জানিয়েছে, দুর্গম অঞ্চলে সঠিকভাবে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছনোর জন্য বিশেষ পরিবহণ ব্যবস্থাও করা হয়েছে এবং প্রয়োজনে হেলিকপ্টার ব্যবহারের কথাও বিবেচনা করা হচ্ছে।

অন্য রাজ্যে এবার শুধু ফ্রি রেশন নয়, নগদ টাকাও মিলতে চলেছে। ওড়িশা সরকার ঘোষণা করেছে যে সেপ্টেম্বর মাসে রাজ্যের প্রত্যেক রেশন কার্ডধারীকে নগদ ১০০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দিবে। এই টাকা সরাসরি তাঁদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত কর হবে বলে জানানো হয়।

এই ঘোষণার ফলে ওড়িশার জনগণের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। অনেক পরিবার এই টাকা দিয়ে পুজোর কেনাকাটা করতে পারে, পড়াশোনা বা ঋণ মেটানোর পরিকল্পনা করতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

আমরা সকলে জানি সামনে দুর্গাপুজো। সেই কথা মাথায় রেখে রাজ্য সরকার বিভিন্ন রেশন কার্ডধারীদের জন্য ‘পুজো স্পেশাল প্যাকেজ’ চালু করতে চলেছে। এই প্যাকেজে একদিকে খাদ্যসামগ্রী যেমন থাকছে, অন্যদিকে থাকছে নগদ সহায়তাও পাবেন। বন্যা পরিস্থিতি ও বাজারমূল্যের ঊর্ধ্বগতি মোকাবিলার জন্য সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

সেপ্টেম্বর ২০২৫-এর রেশন তালিকা ও আর্থিক সহায়তার প্যাকেজ নিঃসন্দেহে বাংলার এবং ওড়িশার সাধারণ মানুষের জন্য আনন্দের বার্তা বহন করছে। যখন একদিকে মূল্যবৃদ্ধি তুঙ্গে, তখন রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের এই যৌথ পদক্ষেপ প্রতিটি পরিবারকে একটি স্বস্তির পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছে।

Bangla News Dunia Desk - Pallab

মন্তব্য করুন