পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য একটি নতুন পদোন্নতির নীতি তৈরির সক্রিয় পরিকল্পনা করছে, যা রাজ্যের শিক্ষা ক্ষেত্রে একটি বড় পরিবর্তনের সূচনা করতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য কোনো পদোন্নতির সুযোগ না থাকায়, এই নতুন উদ্যোগটি শিক্ষক মহলে আশার সঞ্চার করেছে।
বর্তমান পরিস্থিতি ও নতুন নীতির প্রয়োজনীয়তা
এখনও পর্যন্ত, প্রাথমিক শিক্ষকরা ১০, ১৮, এবং ২০ বছর চাকরি করার পর অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট পেতেন, কিন্তু এটিকে পদোন্নতি বলা চলে না। বর্তমানে, একজন প্রাথমিক শিক্ষকের কর্মজীবনে পদোন্নতির একমাত্র সুযোগ হলো প্রধান শিক্ষক হওয়া, যার ফলে মাসিক বেতন মাত্র ৪০০ টাকা বৃদ্ধি পায়। এই সামান্য বেতন বৃদ্ধির কারণে অনেক শিক্ষকই প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নিতে অনিচ্ছুক। এর বিপরীতে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের প্রধান শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি অনেকটাই বেশি, যা একটি বড় বৈষম্য তৈরি করেছে।
নতুন পদোন্নতির কাঠামো কেমন হতে পারে?
শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পদের (সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, অধ্যাপক) মতো প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্যও তিন-স্তরীয় পদোন্নতির কাঠামো চালু করার কথা ভাবা হচ্ছে। এই নতুন কাঠামোতে সহকারী শিক্ষক, সহযোগী শিক্ষক, এবং আরও একটি উচ্চ-স্তরের শিক্ষক পদ তৈরি হতে পারে। এই বিষয়ে ইতিমধ্যে দুটি বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে শিক্ষকদের কর্মজীবনে দুটি বা তিনটি পদোন্নতির সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
শিক্ষক সংগঠনগুলোর প্রতিক্রিয়া
পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের মতে, এই পদক্ষেপটি কেবল শিক্ষকদের মনোবল বাড়াবে না, বরং রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তবে, নতুন পদোন্নতির কাঠামোর পাশাপাশি প্রধান শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার দাবি জানিয়েছে তারা।