পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) দুর্নীতি নিয়ে রাজ্য যখন তোলপাড়, ঠিক তখনই আইনজীবী ফিরদৌস শামিম এক সাক্ষাৎকারে আরও ভয়ঙ্কর ভবিষ্যতের দিকে ইঙ্গিত করেছেন। তাঁর মতে, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে যে ব্যাপক অনিয়ম দেখা গেছে, আসন্ন প্রাইমারি টেট (TET) পরীক্ষার ফলাফল এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির মাত্রা তাকেও ছাপিয়ে যেতে পারে।
কেন প্রাইমারি নিয়ে উদ্বেগ বেশি?
সাক্ষাৎকারে আইনজীবী ফিরদৌস শামিম স্পষ্টভাবে সতর্ক করেছেন যে, “এসএসসি-র থেকে প্রাইমারির দুর্নীতি আরও ভয়াবহ।” যদিও এসএসসি দুর্নীতিতে OMR কারচুপি, র্যাঙ্ক জাম্পিং, এবং মেয়াদোত্তীর্ণ প্যানেল থেকে নিয়োগের মতো গুরুতর অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, শামিমের ইঙ্গিত অনুযায়ী প্রাইমারি নিয়োগে অনিয়মের জাল আরও গভীরে বিস্তৃত। তিনি মনে করেন, সেখানে দুর্নীতির প্রকৃতি এবং পরিমাণ উভয়ই এসএসসি-কে অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে, যা লক্ষ লক্ষ চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যৎকে অন্ধকারে ঠেলে দেবে।
SSC দুর্নীতির প্রতিচ্ছবি
প্রাইমারির দুর্নীতি কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে, তা বোঝার জন্য এসএসসি-র দিকে একবার তাকানো যাক। ফিরদৌস শামিমের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, এসএসসি-তে:
- কমিশন নিজেই প্রায় ৬,২৭৬টি অবৈধ নিয়োগের কথা স্বীকার করেছে।
- আদালতের নির্দেশের পরেও “টেন্টেড” প্রার্থীদের সম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশে গড়িমসি করা হচ্ছে।
- তথ্য গোপন করে এবং স্বচ্ছতার অভাব দেখিয়ে পুরো প্রক্রিয়াকে জটিল করা হয়েছে।
আইনজীবীর আশঙ্কা, একই চক্র এবং একই মানসিকতা যদি প্রাইমারি নিয়োগেও কাজ করে থাকে, তবে তার ফলাফল হবে মারাত্বক।
স্বচ্ছতা এবং ন্যায়বিচারের দাবি
ফিরদৌস শামিম জোর দিয়ে বলেন, এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হলো স্বচ্ছতা। এসএসসি-র মতো প্রাইমারি নিয়োগের ক্ষেত্রেও যদি তথ্য গোপন করার চেষ্টা করা হয়, তাহলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। তাঁর মতে, সরকারের উচিত অবিলম্বে সমস্ত দুর্নীতির তদন্ত করে অভিযুক্তদের তালিকা প্রকাশ করা এবং একটি স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা। তা না হলে, চাকরিপ্রার্থীদের সম্মিলিত ক্ষোভ এক “গণবিস্ফোরণের” জন্ম দিতে পারে, যা সামলানো কঠিন হবে।