অবশেষে সমস্ত স্তরের শিক্ষকদের পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য প্রকল্পের (West Bengal Health Scheme) আওতায় আনার দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাজ্যের প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত সমস্ত শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ইউনাইটেড অ্যাসোসিয়েশন এই মামলা দায়ের করেছে। দীর্ঘদিন ধরে এই বঞ্চনার অবসানের জন্য শিক্ষক সংগঠনগুলি আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিল, অবশেষে তা আইনি লড়াইয়ের পথে গড়াল।
মামলার প্রেক্ষাপট এবং আইনি পদক্ষেপ
এই মামলাটির প্রধান আইনজীবী হিসেবে রয়েছেন রাজ্যের প্রবীণ আইনজীবী সৌম্য মজুমদার এবং ওসমান গনি মল্লিক। তাদের নেতৃত্বে এই আইনি লড়াই চালানো হচ্ছে। এই উদ্যোগের ফলে রাজ্যের হাজার হাজার শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের মধ্যে আশার আলো সঞ্চার হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য প্রকল্পের ইতিহাস এবং বর্তমান পরিস্থিতি
পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য প্রকল্পটি ২০০৮ সালে বামফ্রন্ট সরকারের আমলে চালু হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে এই প্রকল্পের আওতায় শুধুমাত্র সরকারি কর্মচারী এবং সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা ছিলেন। এই প্রকল্পের সুবিধাগুলি হল:
- ক্যাশলেস চিকিৎসার সুযোগ।
- শুধুমাত্র রাজ্যের মধ্যেই নয়, ভেলোর এবং ব্যাঙ্গালোরের মতো শহরের হাসপাতালেও চিকিৎসার সুবিধা।
পরবর্তীকালে, এই প্রকল্পের আওতায় সরকার-পোষিত কলেজের শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, পঞ্চায়েত কর্মী, আইএএস/আইএফএস অফিসার এবং এমনকি অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষকদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
শিক্ষকদের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ
শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী, শিক্ষকদের মধ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে কোনো বৈষম্য করা উচিত নয়। তা সত্ত্বেও, প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকরা এই প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। অথচ, তাদের পাঠ্যক্রম, দায়িত্ব, যোগ্যতা এবং বেতন কাঠামো সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের মতোই। এই বৈষম্য দূর করার জন্যই শিক্ষক ঐক্য মঞ্চ দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছে।
আন্দোলনের পরবর্তী পদক্ষেপ
ইউনাইটেড অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে যে আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি তাদের আন্দোলনও চলবে। আগামী ১৩ই অক্টোবর একটি বিক্ষোভ কর্মসূচির পরিকল্পনা করা হয়েছে। এরপর নবান্ন এবং শিক্ষা দপ্তরে ডেপুটেশন জমা দেওয়া হবে। সমস্ত শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের, তাদের রাজনৈতিক পরিচয় নির্বিশেষে, এই আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে, কারণ এটি তাদের ন্যায্য অধিকার। আইনজীবী দল আশাবাদী যে আগামী সপ্তাহেই মামলাটি আদালতে উঠবে এবং দ্রুত এর সমাধান হবে।