আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট: ‘উৎসব আসলে বাংলার মেয়েদের লাশ দেখে উৎসবে যেতে হয়। আর সব খুন, ধর্ষণের সঙ্গেই জড়িয়ে থাকে মুখ্যমন্ত্রীর দলের নেতাদের নাম।’ শুক্রবার বীরভূমের (Birbhum) রামপুরহাটে এসে এভাবেই কটাক্ষ করলেন সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষ (Shatarup Ghosh)।
রামপুরহাটে (Rampurhat) সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার ক্ষত এখনো দগদগে রয়েছে মানুষের মনে। এখনও নির্যাতিতার দেহের নিম্নাংশের হদিস মেলেনি। মূল অভিযূক্ত গ্রেপ্তার হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তাকে পরোক্ষে মদত দিয়েছে যারা তাদের নাম লোকমুখে ভেসে বেরালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে এদিন সিপিএমের তরফে মহামিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল। সভায় সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষ বলেন, ‘এ রাজ্যে এখন মেয়েদের লাশ না দেখে উৎসব হয় না। গত বছর আরজি করের অভয়ার লাশ দেখতে হয়েছিল। এবার রামপুরহাটের তেরো বছরের মেয়েটার ছিন্নভিন্ন দেহ দেখতে হয়েছে। যখন ভোট আসে তখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে যান ‘বাংলার নিজের মেয়ে’। রামপুরহাটের ক্ষেত্রেও দলের শিক্ষক নেতা, অঞ্চলের নেতাদের নাম জড়িয়েছে।’
এদিন বিচারের দাবিতে রামপুরহাটে বহু মানুষ দীর্ঘ পথ হেঁটেছেন। ‘বিচার চাই’ এই আওয়াজ তুলেছেন। আদিবাসী জনপদেও উঠেছে একই আওয়াজ, ‘ফাঁসি চাই’। শ্রীফলা মোড় থেকে শুরু হওয়া সেই মিছিলে শামিল হওয়া হাজার হাজার মানুষের প্রতিবাদী মেজাজে শারদ উৎসবের ঠাসা ভিড় ভেদ করেই এগিয়েছে। শেষ হয়েছে পাঁচমাথায়। এদিন বিক্ষোভ সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে আদিবাসী অধিকার মঞ্চের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক পুলিন বিহারী বাস্কে বলেন, ‘নাবালিকার খুনের নায্য বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। শেষ দেখে ছাড়া হবে রাজ্যজুড়ে চলা একের পর এক নৃশংসতার।’
সভা শেষ করে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য রামচন্দ্র ডোম, রাজ্যসভার সাংসদ আইনজীবি বিকাশ ভট্টাচার্য, শামিম আহমেদ, গৌতম ঘোষ, সোনামনি টুডু সহ আরও অনেকে। পরিবারের সঙ্গে দেখা করে বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, ‘অপরাধ আর তৃণমূল সমার্থক শব্দ। শুনেছি নিগৃতীতাকে আইনী সহায়তা দেওয়ার জন্য কৌশল করে এমন এক আইনজীবিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তিনি শাসকদলেরই অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। ফলে শুরু থেকেই নিগৃহীতার বিচার পাওয়া নিয়ে সন্দেহ দাঁনা বেঁধেছে। তবে আমরা সম্পূর্ণভাবে পরিবারের পাশে আছি।’