SSC 26000 Case: এসএসসি ২৬,০০০ চাকরি বাতিল মামলায় আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়। আজ, ১৩ই অক্টোবর ২০২৫, সুপ্রিম কোর্টের ১২ নম্বর কোর্টে মাননীয় বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে এই মামলার একটি শুনানি ছিল। মূলত গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি পদের বৈধ চাকরিপ্রার্থীদের পক্ষ থেকে এই আবেদন করা হয়েছিল, যারা কোনো দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নন। তবে, দিনের শেষে চাকরিপ্রার্থীদের জন্য কোনো সুখবর এলো না, বরং আদালত তাদের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। এই ঘটনাটি রাজ্যের হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যত্ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
শুনানির বিস্তারিত বিবরণ
এদিন, মামলাটি ২১ নম্বর সিরিয়ালে লিস্টেড ছিল এবং শুনানি শুরু হয় বেলা পৌনে বারোটা নাগাদ। আবেদনকারীদের আইনজীবী জানান যে তারা সম্পূর্ণ বৈধভাবে চাকরি পেয়েছেন এবং তাদের এসএলএসটি শিক্ষকদের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়। তারা আদালতের কাছে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য আবেদন জানান, যেমনটা এসএলএসটি পরীক্ষার ক্ষেত্রে করা হয়েছে। তাদের মূল বক্তব্য ছিল যে, যেহেতু তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া এখনো শুরুই হয়নি, তাই তাদের বিষয়টি আলাদাভাবে বিবেচনা করা হোক।
কিন্তু, বিচারপতি কোনোভাবেই এই আর্জিতে কর্ণপাত করেননি। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, যেহেতু পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াটিই বাতিল করে দেওয়া হয়েছে, তাই নতুন করে কোনো গ্রান্ট বা রিলিফ দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। এমনকি, আবেদনকারীদের আইনজীবী যখন মামলার জাজমেন্টের কিছু অংশ তুলে ধরতে চান, তখনও বিচারপতি সেই আবেদন খারিজ করে দেন। তিনি বলেন, “এই সিস্টেমটা টোটালটাই আমরা স্টপ করে দিয়েছি, সেখানে নতুন করে গ্রান্ট করার কোনো জায়গা নেই।”
আদালতের পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশ
বিচারপতি আরও জানান যে, গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডির ক্ষেত্রে টেন্টেড (দুর্নীতিগ্রস্ত) এবং আনটেন্টেড (বৈধ) প্রার্থীদের আলাদা করে দেখার কোনো প্রশ্নই ওঠে না, কারণ পুরো প্যানেলই বাতিল করা হয়েছে। তিনি আবেদনকারীদের পরামর্শ দেন যে, তারা যেন কলকাতা হাইকোর্টে নতুন করে রিট পিটিশন দায়ের করেন। এরপর, আবেদনকারীদের আইনজীবী মামলাটি তুলে নেওয়ার অনুমতি চাইলে, আদালত সেই অনুমতি প্রদান করে। ফলে, মামলাটি খারিজ হয়ে যায়।
এই রায়ের ফলে, যে সমস্ত গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি কর্মীরা বৈধভাবে চাকরি পেয়েছিলেন, তাদের ভবিষ্যৎ আরও একবার অনিশ্চয়তার মুখে পড়ল। সুপ্রিম কোর্টের এই কঠোর মনোভাব বুঝিয়ে দিচ্ছে যে, এই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আদালত কোনো রকম আপোসের পথে হাঁটতে রাজি নয়। এখন দেখার বিষয়, কলকাতা হাইকোর্টে নতুন করে আবেদন করার পর চাকরিপ্রার্থীরা কোনো সুরাহা পান কিনা। এই ঘটনাটি রাজ্য সরকারের নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়েও বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিল, যার প্রভাব পড়তে পারে আগামী দিনের সমস্ত সরকারি চাকরির পরীক্ষায়।