অবশেষে দীর্ঘ ১৭ বছর পর ফের জনগণনার প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে । কবে থেকে শুরু হবে সেই সময়ও জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল এতিমধ্যে।
২০০১ সালের পর দেশে শেষবার জনগণনা হয়েছিল ২০১১ সালে। ২০২১ সালে আবার জনগণনা হওয়ার কথা থাকলেও কোভিড-১৯ মহামারির কারণে তা হয়ে উঠেনি। তবে এবার ২০২৭ সালে হতে চলা জনগণনার প্রস্তুতি শুরু করে দিল কেন্দ্র।
তবে জেনে রাখা ভালো,এবার আর সরকারি আধিকারিকরা আগের মতো বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা করবেন না। এবার সমীক্ষা সম্পূর্ণ হবে স্বগণনার মাধ্যমে। এজন্য নাগরিকদের নিজেদের তথ্য অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সময় নির্ধারিত হয়েছে ১ থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত।
এছাড়া ২০২৭ সালে প্রথমবারের মতো ডিজিটাল পদ্ধতিতে জনগণনা শুরু হতে চলেছে। তার আগে পরীক্ষামূলক ধাপ হিসেবে ১০ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে প্রিটেস্ট পর্ব। ভারতের রেজিস্ট্রার জেনারেল ও সেনসাস কমিশনার মৃত্যুঞ্জয় কুমার নারায়ণের জারি করা এক বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এই সময় দেশের প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নির্বাচিত এলাকায় করা হবে হাউসলিস্টিং ও হাউসিং সেনসাস।
নাগরিকদের আর বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য নিতে হবে না। বরং তারা নিজেরাই অনলাইনে তথ্য দিতে পারবেন। স্বগণনার এই সুযোগ মিলবে ১ থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই প্রিটেস্টের মূল লক্ষ্য ২০২৭ সালের পূর্ণাঙ্গ জনগণনার আগে পুরো সিস্টেম, প্রশ্নপত্র ও প্রযুক্তিগত দিকগুলো পরীক্ষা করে দেখা। এটাই হবে ভারতের প্রথম ডিজিটাল জনগণনা, যেখানে জাতভিত্তিক হিসাবও রাখা হবে।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, প্রথম ধাপে (HLO) সংগ্রহ করা হবে আবাসন ও পরিবারের সুবিধা সংক্রান্ত তথ্য, আর দ্বিতীয় ধাপে (PE) নথিভুক্ত করা হবে নাগরিকদের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক তথ্য। পূর্ণাঙ্গ জনগণনার কাজ শুরু হবে ২০২৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে।
প্রসঙ্গত, এতদিন পর্যন্ত ভারতে জাতভিত্তিক জনগণনা সাধারণত করা হতো না, শুধুমাত্র তফসিলি জাতি ও উপজাতির ক্ষেত্রেই এই হিসাব রাখা হতো। তবে এবার সমস্ত জাতের বিবরণ অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে জানায় কেন্দ্রীয় সরকার।
২০১১ সাল থেকে বর্তমানে দেশের জনসংখ্যা কত সে সম্পর্কিত সঠিক ও নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য নেই সরকারের কাছে। একগুচ্ছ প্রশাসনিক, প্রযুক্তিগত ও আণুষাঙ্গিক অন্যান্য সমস্যা এজন্য দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে, কিন্তু ২০১১ সালের জনগণনার পর জানা গিয়েছিল, ওই সময় জনসংখ্যা ছিল ১২১ কোটির কিছু বেশি। বর্তমানে জনসংখ্যা কত তার সঠিক পরিসংখ্যান এখনও পর্যন্ত নেই।
উল্লেখ্য, ১৮৮১ থেকে ১৯৩১ সাল পর্যন্ত প্রতি দশকের জনগণনাতেই জাতভিত্তিক তথ্য নেওয়া হতো। স্বাধীনতার পর ১৯৫১ সাল থেকে কেবল তফসিলি জাতি (SC) ও তফসিলি উপজাতি (ST)-র তথ্য রাখা হতো। বাকি জাতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আর সংগ্রহ করা হয়নি। তবে এবার ২০২৭-এর জনগণনার সেই বন্ধ অধ্যায় আবার খুলতে চলেছ। এছাড়াও ভারতের বেশিরভাগ অঞ্চলের জন্য জনগণনার রেফারেন্স তারিখ হবে ১ মার্চ ২০২৭, আর লাদাখ এবং জম্মু ও কাশ্মীর, হিমাচলপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের অর্থাৎ পার্বত্য অঞ্চলের জন্য এটি হবে ১ অক্টোবর ২০২৬।
Caste Census India 2027: ফিরছে জনগণণা, এবার জাত ও জনতা একসাথে হিসাব, দেখুন বিস্তারিত!