TET Mandatory Supreme Court: টেট বাধ্যতামূলক মামলার সর্বশেষ পরিস্থিতি, নতুন জনস্বার্থ মামলা, বৃহত্তর বেঞ্চে স্থানান্তর

By Bangla News Dunia Desk - Pallab

Published on:

TET Supreme Court: শিক্ষকদের টেট (TET) বাধ্যতামূলক এবং শিক্ষা অধিকার আইন (RTE) সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে প্রযোজ্য হবে কিনা, সেই সংক্রান্ত একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মামলা সুপ্রিম কোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এই মামলার রায়ের ওপর নির্ভর করছে সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানগুলিতে শিক্ষক নিয়োগের ভবিষ্যৎ। সম্প্রতি, এই মূল মামলার সাথে আরও একটি নতুন জনস্বার্থ মামলা (PIL) যুক্ত করা হয়েছে, যা বিষয়টিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আসুন এই মামলার সম্পূর্ণ পটভূমি এবং বর্তমান পরিস্থিতি বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

মামলার পটভূমি: RTE আইন ও সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠান

২০০৯ সালে ভারতে শিক্ষা অধিকার আইন (Right to Education Act) লাগু হয়। কিন্তু ২০১২ সালে একটি সাংবিধানিক সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের ২৯ ও ৩০ নম্বর অনুচ্ছেদের পরিপ্রেক্ষিতে, সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে (Minority Institutions) আরটিই আইনের আওতার বাইরে রাখা হয়।

সমস্যার সূত্রপাত হয় যখন মহারাষ্ট্র সরকার একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আরটিই আইনকে সমস্ত বিদ্যালয়ের জন্য প্রযোজ্য করার চেষ্টা করে। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ‘আঞ্জুমান ইশাদ-এ-তালিম ট্রাস্ট’ প্রথমে বোম্বে হাইকোর্টে এবং পরে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করে। মূল প্রশ্ন ছিল, সাংবিধানিক ছাড় থাকা সত্ত্বেও সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানগুলির ওপর আরটিই আইন এবং তার অন্তর্গত টেট-এর মতো নিয়মাবলী চাপিয়ে দেওয়া যায় কি না।

সাম্প্রতিকতম রায় ও বৃহত্তর বেঞ্চে স্থানান্তর

গত ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে, সুপ্রিম কোর্ট অ-সংখ্যালঘু (Non-Minority) বিদ্যালয়গুলির ক্ষেত্রে একটি রায় ঘোষণা করে। কিন্তু বিচারপতিরা সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানগুলির মূল সাংবিধানিক প্রশ্নটির গুরুত্ব বিবেচনা করে, সেই মামলাটিকে শুনানির জন্য একটি বৃহত্তর বেঞ্চে (Larger Bench) পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। বর্তমানে এই মামলাটি একটি তিন সদস্যের বিচারপতির বেঞ্চে (Three Judge Matter) স্থানান্তরিত হয়েছে, যা ভারতের প্রধান বিচারপতির তত্ত্বাবধানে গঠিত হবে।

নতুন জনস্বার্থ মামলা (PIL)

এই পরিস্থিতির মধ্যেই, গত ২৪শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে নিখিল উপাধ্যায় নামে একজন আইনজীবী একটি নতুন জনস্বার্থ মামলা (PIL) দায়ের করেন। এই PIL-এর মূল বক্তব্য হলো:

  • সংবিধানে ‘সংখ্যালঘু’ (Minority) শব্দটির কোনো স্পষ্ট সংখ্যাভিত্তিক সংজ্ঞা দেওয়া নেই।
  • এই অস্পষ্টতার সুযোগে বহু প্রতিষ্ঠান নিজেদের সংখ্যালঘু তকমা দিয়ে আরটিই আইনের মতো জনগুরুত্বপূর্ণ নিয়ম এড়িয়ে যাচ্ছে।
  • তাই, সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানগুলিকে আরটিই আইনের বাইরে রাখার যে সিদ্ধান্ত, তা পুনর্বিবেচনা করা হোক।

গত ১৫ই অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে, আদালত এই নতুন জনস্বার্থ মামলাটিকেও মূল মামলার সাথে ট্যাগ করে (যুক্ত করে) বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আদালতের মতে, যেহেতু দুটি মামলার মধ্যেই আইনের গুরুত্বপূর্ণ এবং একই ধরনের সাংবিধানিক প্রশ্ন জড়িত, তাই একসাথেই এর শুনানি হওয়া বাঞ্ছনীয়।

বর্তমান পরিস্থিতি

বর্তমানে, এই মূল মামলার সাথে আরও বেশ কিছু রিভিউ পিটিশন এবং মডিফিকেশন অ্যাপ্লিকেশন জমা পড়েছিল। এই আবেদনগুলিও বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠানো হয়েছে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়, যদিও সেগুলি মূল মামলার সাথেই অবস্থান করছে। কিছু রিভিউ পিটিশনে ত্রুটি (Defect) থাকার কথাও জানা গেছে। পরবর্তী শুনানির তারিখ পড়লে বা বৃহত্তর বেঞ্চ গঠিত হলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।

টেট এবং আরটিই আইন সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানে প্রযোজ্য হবে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত এখন সুপ্রিম কোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চের হাতে। এই রায়ের প্রভাব সুদূরপ্রসারী হবে, কারণ এটি সরাসরি সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানগুলির শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং শিক্ষার মানের সাথে জড়িত। সমস্ত শিক্ষক এবং চাকরিপ্রার্থীদের এখন এই বৃহত্তর বেঞ্চের চূড়ান্ত রায়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

Bangla News Dunia Desk - Pallab

মন্তব্য করুন