Primary Teacher Recruitment Rules: পশ্চিমবঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এক বড়সড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলেছে। সম্প্রতি সামনে আসা নিয়োগ বিধির খসড়া অনুযায়ী, শিক্ষক যোগ্যতা পরীক্ষা বা TET-এর গুরুত্ব এক ধাক্কায় অনেকটাই বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে মূল্যায়নের মানদণ্ডে আসছে আমূল পরিবর্তন। এই নতুন বিধি চূড়ান্ত হলে আগামী দিনে প্রাথমিকে চাকরির লড়াই আরও কঠিন হতে চলেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, কিছুদিনের মধ্যেই এই বিষয়ে চূড়ান্ত নিয়োগ বিধি প্রকাশিত হতে পারে। তবে তার আগেই খসড়া বিধি ঘিরে চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।
নিয়োগের নম্বরের কাঠামোয় বড় রদবদল
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হল TET-এর ওয়েটেজে। আগে যেখানে TET-এর জন্য মাত্র ৫ নম্বর বরাদ্দ ছিল, নতুন খসড়া বিধি অনুযায়ী তা বাড়িয়ে ২৫ নম্বর করা হয়েছে। অর্থাৎ, TET-এর গুরুত্ব একবারে পাঁচগুণ বৃদ্ধি করা হল। এর থেকে স্পষ্ট যে, নিয়োগের ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীদের বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানের গভীরতাকেই বেশি প্রাধান্য দিতে চাইছে রাজ্য।
অন্যদিকে, শিক্ষাগত যোগ্যতার নিরিখে যে নম্বর বরাদ্দ ছিল, তা কমানো হয়েছে। উচ্চমাধ্যমিকের জন্য আগে যেখানে ১০ নম্বর ওয়েটেজ ছিল, তা কমিয়ে ৫ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে অ্যাকাডেমিক স্কোরের জন্য মোট বরাদ্দ নম্বর ৫০ থেকে কমিয়ে ৪০ করা হয়েছে।
এছাড়াও, এতদিন এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটির জন্য যে ৫ নম্বর বরাদ্দ ছিল, তা সম্পূর্ণভাবে তুলে দেওয়া হয়েছে। ইন্টারভিউয়ের আগে আরও ১০ নম্বর যুক্ত করার কথাও খসড়ায় উল্লেখ রয়েছে।
এক নজরে নম্বরের বিভাজন (পুরনো বনাম নতুন খসড়া)
| বিভাগ | পুরনো নম্বর | নতুন খসড়া নম্বর |
|---|---|---|
| TET | ৫ | ২৫ |
| উচ্চমাধ্যমিক | ১০ | ৫ |
| এক্সট্রা কারিকুলার | ৫ | ০ (বন্ধ) |
| অ্যাকাডেমিক (মোট) | ৫০ | ৪০ |
কেন এই পরিবর্তন?
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে রাজ্যজুড়ে টালমাটাল পরিস্থিতি চলছে। এই আবহে নিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও মেধাভিত্তিক করতে চাইছে সরকার। স্কুল সার্ভিস কমিশন ইতিমধ্যেই তাদের নিয়োগ বিধিতে বদল এনেছে। এবার প্রাথমিকের ক্ষেত্রেও সেই পথেই হাঁটা হল।
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ও এই পরিবর্তনের নেপথ্যে অনুঘটক হিসেবে কাজ করতে পারে। শীর্ষ আদালত জানায়, পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে কর্মরত শিক্ষকদেরও TET পাশ করতে হবে, অন্যথায় চাকরি থাকবে না। এই নির্দেশের ফলে রাজ্যের প্রায় ১ লক্ষ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। যদিও রাজ্য সরকার এই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন দায়ের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এই পরিস্থিতির মধ্যেই TET-এর গুরুত্ব বাড়ানোর সিদ্ধান্ত যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
এই নতুন খসড়া বিধি চূড়ান্ত হলে, TET উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের জন্য নিয়োগের পথ অনেকটাই পরিষ্কার হবে এবং মেধার ভিত্তিতেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।









