TET Mandatory Case: চাকরিরত শিক্ষকদের বাধ্যতামূলক টেট মামলায় (TET Case) এক নতুন উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের ১ সেপ্টেম্বরের রায়ের পর থেকে যে অস্থিরতা চলছিল, তা এবার এক নতুন মাত্রা পেয়েছে। সাম্প্রতিক পাওয়া খবর অনুযায়ী, এই মামলার সঙ্গে যুক্ত দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মডিফিকেশন অ্যাপ্লিকেশন (Modification Application) সুপ্রিম কোর্টের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে রহস্যজনকভাবে ‘উধাও’ হয়ে গেছে। এই ঘটনায় মামলাকারী এবং লক্ষ লক্ষ শিক্ষক এক গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন।
হঠাৎ অদৃশ্য দুটি মডিফিকেশন অ্যাপ্লিকেশন
গত ১ সেপ্টেম্বর, শীর্ষ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে মোট ১৯টি রিভিউ পিটিশন, ২টি মডিফিকেশন অ্যাপ্লিকেশন এবং ১টি রিট পিটিশন দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, ওই দুটি মডিফিকেশন অ্যাপ্লিকেশন আর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে না। এই ঘটনাটি মামলায় এক নতুন চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
অদৃশ্য হয়ে যাওয়া আবেদন দুটির বিবরণ নিচে দেওয়া হলো:
- প্রথম আবেদন: একটি মডিফিকেশন অ্যাপ্লিকেশন (M.A.) ১৪ই অক্টোবর মিস্টার প্রমোদ কুমারের পক্ষ থেকে ফাইল করা হয়েছিল।
- দ্বিতীয় আবেদন: অন্য একটি M.A. ২৭শে অক্টোবর বিশ্বনাথ দাস এবং অন্যান্যদের দ্বারা দায়ের করা হয়েছিল।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই অ্যাপ্লিকেশন দুটির নির্দিষ্ট ডায়েরি নম্বর দিয়ে অনুসন্ধান করলেও এখন ওয়েবসাইটে তার কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অ্যাপ্লিকেশনগুলি কি প্রত্যাহার করা হয়েছে, নাকি এর পেছনে কোনো প্রযুক্তিগত ত্রুটি বা অন্য কোনো আইনি জটিলতা রয়েছে, সে বিষয়ে কোনো স্পষ্ট তথ্য মেলেনি। বর্তমানে ওয়েবসাইটে শুধুমাত্র ১৯টি রিভিউ পিটিশন এবং ১টি রিট পিটিশনই দৃশ্যমান রয়েছে।
কেন্দ্র ও রাজ্যের নীরবতায় বাড়ছে ধোঁয়াশা
টেট মামলার রায় প্রকাশের পর দুই মাসেরও বেশি সময় (২ মাস ৭ দিন) অতিক্রান্ত হলেও কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে কোনো উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে এই বিষয়ে কোনো অর্ডিন্যান্স আনা হবে কিনা, সেই বিষয়েও কোনো স্পষ্ট ইঙ্গিত মেলেনি, যা শিক্ষক সমাজকে আরও হতাশ করেছে।
অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক মহল রাজ্য সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকলেও, এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কোনো রিভিউ পিটিশন দায়ের করা হয়নি। যদিও দেশের অন্যান্য কিছু রাজ্য এবং বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন ব্যক্তিগত উদ্যোগে রিভিউ পিটিশন দায়ের করেছে, পশ্চিমবঙ্গের এই নীরবতা একাধিক প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর অনিশ্চয়তা
এই মামলার ভবিষ্যৎ ঘিরেও তৈরি হয়েছে একাধিক প্রশ্নচিহ্ন, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
- প্রধান বিচারপতির অবসর: সুপ্রিম কোর্টের বর্তমান প্রধান বিচারপতি, যিনি এই মামলার মূল বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত, তিনি আগামী ২৩ নভেম্বর অবসর গ্রহণ করতে চলেছেন। তাঁর অবসরের আগে মামলার শুনানি হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
- শুনানির তারিখ: জমা পড়া ১৯টি রিভিউ পিটিশনের শুনানির জন্য এখনও কোনো নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা হয়নি।
- বেঞ্চ গঠন: মামলার সংখ্যালঘু (Minority) সংক্রান্ত বিষয়টির শুনানির জন্য এখনও পর্যন্ত কোনো বেঞ্চ গঠন করা হয়নি।
সব মিলিয়ে, দুটি গুরুত্বপূর্ণ আবেদনের আকস্মিক ‘ভ্যানিশ’ হয়ে যাওয়া এবং কেন্দ্র ও রাজ্যের আপাত নিষ্ক্রিয়তা টেট মামলাকে এক গভীর অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে। মামলাকারী এবং রাজ্যের শিক্ষকরা এখন পরবর্তী আপডেটের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।














