নোট নিয়ে জালিয়াতি বন্ধ করতে এবং নগদ লেনদেনকে আরও নিরাপদ করার জন্য এবার বিরাট পদক্ষেপের পথে হাঁটল ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক। এবার ১০ টাকা, ২০ টাকা, ১০০ টাকা ও ৫০০ টাকার নোটের ক্ষেত্রে নতুন গাইডলাইন জারি করেছে আরবিআই। আর এই নতুন নিয়মের মূল লক্ষ্য হল জাল নোটের প্রতারণা বন্ধ করা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে জোরদার করা।
কেন এই নতুন নির্দেশিকা?
আসলে ভারতে দিনের পর দিন ডিজিটাল লেনদেন বাড়লেও এখনও পর্যন্ত কোটি কোটি মানুষ নগদ লেনদেনের উপর নির্ভরশীল। তবে বাজারে জাল নোটের পরিমাণ দিনের পর দিন বেড়ে চলায় সাধারণ মানুষ চিন্তায় পড়ছে। তবে আরবিআই-এর নতুন নির্দেশিকা শুধুমাত্র নোটের ডিজাইন পরিবর্তন করবে না, বরং এটিএম থেকে টাকা তোলার নিয়মেও বড়সড় পরিবর্তন আনছে।
কী কী পরিবর্তন আসছে নোটে?
রিজার্ভ ব্যাংকের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এখন থেকে ১০ টাকা, ২০ টাকা, ১০০ টাকা এবং ৫০০ টাকার নোটে একাধিক নিরাপত্তামূলক পরিবর্তন করা হবে। আর সেগুলি হল—
- নোটে থাকা সিকিউরিটি থ্রেড এখন একাধিক রঙের ঝলকে দেখা যাবে, যা থেকে ভুয়ো নোট সহজেই চেনা যাবে।
- মহাত্মা গান্ধীর প্রতিচ্ছবি এবং আরবিআই লেখা ওয়াটারমার্ক এবার আরও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
- নোটে সূক্ষ্মভাবে RBI এবং টাকার মূল্য প্রিন্ট করে দেওয়া থাকবে, যা জালিয়াতি বন্ধ করতে সাহায্য করবে।
- নোটের কিছু অংশে উঁচু প্রিন্ট থাকবে, যা দৃষ্টিহীন ব্যক্তিদেরকে নোট চিনতে সাহায্য করবে।
- নোটের মূল্য এখন দেবনাগরী এবং ইংরেজি উভয় ভাষাতেই স্পষ্টভাবে লেখা থাকবে।
এটিএম-র নিয়ম আসছে বড়সড় পরিবর্তন
রিজার্ভ ব্যাংক আগেই নির্দেশ দিয়েছিল যে, ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে দেশের অন্তত ৭৫% এটিএম থেকে ১০০ ও ২০০ টাকার নোট যাতে তোলা যায়, তার জন্য এটিএম অপারেটরদের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে। পাশাপাশি ২০২৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে এই হার ৯০%-এ নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ৩১ ডিসেম্বর লাস্ট ডেট! এই কাজ না করলেই বন্ধ হবে আপনার প্যান কার্ড
৫০০ টাকা নিয়ে গুজব
তবে বিগত কিছুদিন ধরে বাজারে গুজব ছড়িয়েছিল যে, ৫০০ টাকার নোট নাকি বাতিল হতে চলেছে। কিন্তু আরবিআই স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, ৫০০ টাকার নোট বাতিলের কোনওরকম সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আগের মতোই বৈধ থাকবে এই নোট এবং তা বাজার থেকে তোলার কোনওরকম পরিকল্পনাও নেই। অর্থাৎ আগের মতোই এই নোট দিয়ে লেনদেন চালাতে পারবেন।
রিজার্ভ ব্যাংকের মতে, বর্তমানে জাল নোটের সমস্যা দিনের পর দিন দেশের অর্থনীতিকে ক্ষতি করছে। তাই নতুন ফিচারগুলো সাধারণ মানুষের নিরাপত্তাকে নিশ্চিত করবে এবং একই সঙ্গে বড় বড় ট্রানজেকশনকে আরও স্বচ্ছ করে তুলবে। পাশাপাশি ডিজিটাল লেনদেনের সাথে নগদ ব্যবস্থাতেও বিশ্বাসযোগ্যতা আসবে।













