SSC 10 no Case: কলকাতা হাইকোর্টে আজ এসএসসির (SSC) বহু চর্চিত ১০ নম্বর মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হল। বিচারপতি অমৃতা সিনার বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়, যা মূলত “যোগ্য বনাম যোগ্য” চাকরিপ্রার্থীদের লড়াই হিসেবে পরিচিত। শুনানিতে রাজ্যের একাধিক খ্যাতনামা আইনজীবী উপস্থিত থাকলেও, এটি খুব সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য চলে। তবে এই অল্প সময়ের মধ্যেই মামলার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দিক উঠে আসে।
আজকের শুনানিতে সিনিয়র অ্যাডভোকেট কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মীনাক্ষী গোস্বামী এবং আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবী আশিষ বাবু উপস্থিত ছিলেন। মামলার শুরুতে আবেদনকারীদের আইনজীবী জানান যে, এই মামলায় মোট ২৫ জন আবেদনকারী রয়েছেন এবং এর সাথে একাধিক সম্পর্কিত আবেদনও যুক্ত আছে।
শুনানির মূল বিষয়বস্তু ও আদালতের পর্যবেক্ষণ
শুনানির কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল নবম-দশম শ্রেণীর কর্মরত শিক্ষকদের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার জন্য অতিরিক্ত ১০ নম্বর দেওয়ার নিয়মটি। আবেদনকারীদের পক্ষের প্রধান প্রশ্ন ছিল, যে শিক্ষকরা ইতিমধ্যে বছরের পর বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন, তাদের কেন আবার টিচিং ডেমনস্ট্রেশন বা পড়ানোর প্রদর্শনী দিতে হবে?
এই প্রসঙ্গে আবেদনকারীদের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ের কথা উল্লেখ করে চাকরি বাতিল হওয়া প্রার্থীদের “সর্বোচ্চ সুবিধা” দেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু বিচারপতি অমৃতা সিনা স্পষ্ট জানান যে, সুপ্রিম কোর্টের আদেশে সরাসরি চাকরি বাতিল হওয়া প্রার্থীদের সর্বোচ্চ সুবিধা দেওয়ার মতো কোনো নির্দিষ্ট নির্দেশিকা ছিল না। বরং, নিয়োগ প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছতার সাথে এবং যথাযথ বিবেচনার মাধ্যমে সম্পন্ন করার কথা বলা হয়েছিল।
বিচারপতি আরও বলেন, “নিয়ম তো নিয়মই। এই নিয়মটি (১০ নম্বর সংক্রান্ত) ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।” এর থেকে স্পষ্ট যে, এই বিষয়টি শীর্ষ আদালতেও বিচারাধীন রয়েছে।
কমিশনের আপত্তি ও পরবর্তী পদক্ষেপ
অন্যদিকে, স্কুল সার্ভিস কমিশনের (WBBSSC) আইনজীবী এই রিট পিটিশনের গ্রহণযোগ্যতা (maintainability) নিয়েই প্রশ্ন তোলেন। তাদের যুক্তি, পরীক্ষার্থীরা নিয়োগের সমস্ত নিয়মাবলী জেনেই পরীক্ষায় বসেছিলেন। তাহলে এতদিন পর তারা সেই নিয়মকে কেন চ্যালেঞ্জ করছেন?
উভয় পক্ষের সওয়াল-জবাব শোনার পর বিচারপতি এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন। আগামী ১২ নভেম্বর এই সংক্রান্ত একাধিক মামলা একসাথে শোনা হবে। ওই দিনের শুনানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে, কারণ “১০ নম্বর আগে না পরে” এই বিতর্কের নিষ্পত্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মামলার পর্যবেক্ষকদের মতে, যদি এই মামলায় অভিজ্ঞ শিক্ষকরা হেরে যান, তবে ২০১৬ সালের প্রায় ৬০-৭০% যোগ্য এবং বিতর্কমুক্ত শিক্ষক চাকরি থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। সেক্ষেত্রে ফ্রেশার বা নতুন চাকরিপ্রার্থীরা সেই সুযোগ পাবেন। যোগ্য ও অভিজ্ঞ শিক্ষকদের স্বার্থে এই মামলার রায় অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।












