West Bengal Health Scheme: সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বা স্পন্সরড স্কুলের শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীরা কি ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ স্কিম (West Bengal Health Scheme)-এর আওতায় আসবেন? এই বহু প্রতীক্ষিত প্রশ্নের উত্তর পেতে আরও অন্তত চার মাস অপেক্ষা করতে হবে। শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চের করা একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছে। আদালত সরাসরি কোনো রায় না দিয়ে, এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব স্কুল শিক্ষা দপ্তরের উপরেই দিয়েছে।
মামলার মূল ভিত্তি ছিল স্বাস্থ্যের অধিকারে বৈষম্য
শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চের পক্ষ থেকে কিংকর বাবু জানান, আদালতে তাদের প্রধান যুক্তি ছিল স্বাস্থ্যের অধিকারে বৈষম্য। তাদের দাবি, সরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা যে স্বাস্থ্য সুবিধা পান, সেই একই সুবিধা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বা স্পন্সরড স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও পাওয়া উচিত। এই বিষয়ে দ্বৈত নীতি চলতে পারে না।
তাদের পক্ষ থেকে আদালতে নিম্নলিখিত যুক্তিগুলি পেশ করা হয়:
- বৈষম্যহীনতার দাবি: স্বাস্থ্যের মতো একটি মৌলিক বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে কোনো প্রকার বৈষম্য (discrimination) করা অনুচিত।
- একই নিয়ম চালু করার আবেদন: সরকারি স্কুলের জন্য এক নিয়ম এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের জন্য অন্য নিয়ম, এই ব্যবস্থার অবসান ঘটানো প্রয়োজন।
- তথ্য ও হিসাব: এই মূল যুক্তির পাশাপাশি অন্যান্য প্রাসঙ্গিক হিসাব-নিকাশ ও তথ্যও আদালতে পেশ করা হয়েছিল।
হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশ
কলকাতা হাইকোর্ট মামলার রায়দানের সময় আবেদনকারীদের দাবির যোগ্যতা বা মেরিট নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। অর্থাৎ, সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষকরা এই সুবিধা পাওয়ার যোগ্য কি না, সেই বিষয়ে আদালত কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হয়নি।
পরিবর্তে, আদালতের রায়ের কপির ৬ নম্বর পয়েন্ট অনুযায়ী, মাননীয় বিচারপতি ৫ নম্বর রেসপন্ডেন্ট অর্থাৎ, স্কুল শিক্ষা দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি এবং কমিশনারকে এই বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। হাইকোর্ট কার্যত বলটি রাজ্য স্কুল শিক্ষা দপ্তরের কোর্টে ঠেলে দিয়েছে।
চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য ৪ মাসের সময়সীমা
আদালত স্কুল শিক্ষা দপ্তরকে এই বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট এবং যুক্তি সহকারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। দপ্তরকে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি স্থির করতে হবে:
১. শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ স্কিমের সুবিধা দেওয়া যাবে কি না।
২. যদি সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তবে তার সপক্ষে বিস্তারিত যুক্তি পেশ করতে হবে।
৩. একইভাবে, যদি সুবিধা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়, তবে তার কারণও যুক্তি দিয়ে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে।
এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার জন্য স্কুল শিক্ষা দপ্তরকে সর্বোচ্চ চার মাসের সময় দেওয়া হয়েছে। এই সময়সীমার মধ্যে তাদের সিদ্ধান্ত জানাতে হবে। আপাতত, এই রিট পিটিশনটি নিষ্পত্তি (disposed of) করা হয়েছে। যদি দপ্তরের সিদ্ধান্ত শিক্ষকদের পক্ষে না আসে, তবে সেই সিদ্ধান্তের কারণ খতিয়ে দেখে ভবিষ্যতে আবার নতুন করে মামলা করার রাস্তা খোলা থাকছে।














