SIR Form Fill Up: নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ভোটার তালিকা সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ চলছে, যার জন্য এসআইআর (SIR) এর ইনুম্যারেশন ফর্ম পূরণ করতে হচ্ছে। বিশেষ করে বিবাহিতা, বিধবা এবং ডিভোর্সি মহিলারা এই ফর্মটি পূরণ করার সময় কিছু নির্দিষ্ট সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এই প্রতিবেদনে আমরা ধাপে ধাপে আলোচনা করব কীভাবে আপনারা নির্ভুলভাবে এই ফর্মটি পূরণ করতে পারেন।
এই ফর্মের তথ্যের ভিত্তিতে ভোটার কার্ডে কোনো সংশোধন হবে না, তার জন্য আলাদা ফর্ম পূরণ করতে হবে। এটি মূলত রক্তের সম্পর্কের ভিত্তিতে তথ্য যাচাইয়ের একটি প্রক্রিয়া।
ফর্মের প্রাথমিক বিষয়গুলি
ফর্মটি হাতে নেওয়ার পর প্রথমেই উপরের দিকে আপনার এলাকার বিএলও (BLO)-এর নাম এবং ফোন নম্বর দেখতে পাবেন। তার ঠিক নিচেই ২০২৫ সালের ভোটার তালিকা অনুযায়ী আপনার ভোটার কার্ড নম্বর, ঠিকানা, বিধানসভার নাম এবং রাজ্যের নাম লেখা থাকবে। এছাড়াও, ফর্মে একটি কিউআর (QR) কোড এবং আপনার ভোটার কার্ডের ছবি দেওয়া থাকবে।
কোন তথ্যগুলি অবশ্যই পূরণ করতে হবে?
ফর্মটি পূরণের জন্য কিছু আবশ্যিক তথ্য আপনাকে দিতেই হবে।
- সাম্প্রতিক ফটো: ফর্মের নির্দিষ্ট জায়গায় “সাম্প্রতিক ফটো সাটুন” লেখা অংশে আপনার একটি বর্তমান সময়ের রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগাতে হবে।
- জন্ম তারিখ: যদি আপনার ভোটার কার্ডে সম্পূর্ণ জন্ম তারিখ (দিন, মাস, বছর) না থাকে, তবে আধার কার্ড অনুযায়ী তা পূরণ করুন। যাদের ভোটার কার্ডে সম্পূর্ণ তারিখ আছে, তারা সেটিই লিখবেন।
- আধার নম্বর: এটি দেওয়া বাধ্যতামূলক না হলেও, থাকলে অবশ্যই নির্দিষ্ট ঘরে লিখে দিন।
- ফোন নম্বর: আপনার চালু থাকা মোবাইল নম্বরটি নির্দিষ্ট ঘরে লিখতে হবে।
ফর্মটি আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোনো একটি ভাষাতে পূরণ করতে পারেন।
অভিভাবকের বিবরণ লেখার নিয়ম
এই অংশে আপনাকে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে তথ্য পূরণ করতে হবে।
- পিতার নাম: এখানে অবশ্যই মহিলার বাবার নাম লিখতে হবে।
- পিতার ভোটার কার্ড: যদি পিতা জীবিত থাকেন এবং তাঁর ভোটার কার্ড থাকে, তবেই সেই নম্বরটি নির্দিষ্ট ঘরে লিখুন। পিতা মৃত হলে এই ঘরটি সম্পূর্ণ ফাঁকা রাখতে হবে। কোনো রকম ক্রস (X) চিহ্ন বা এন/এ (N/A) লেখার প্রয়োজন নেই।
- মাতার নাম: মা জীবিত থাকলে তাঁর নাম এবং ভোটার কার্ড নম্বর লিখুন। মা মৃত হলে শুধুমাত্র তাঁর নামটি লিখলেই হবে, ভোটার কার্ড নম্বরের ঘরটি ফাঁকা থাকবে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: মৃত পিতা-মাতার নামের আগে “মৃত”, “স্বর্গীয়” বা “লেট” এই ধরনের কোনো শব্দ ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই।
স্বামী বা স্ত্রীর বিবরণ: বিশেষ নির্দেশিকা
মহিলাদের স্ট্যাটাস অনুযায়ী এই অংশটি ভিন্ন ভিন্ন ভাবে পূরণ করতে হবে।
- বিবাহিতা মহিলা: আপনি যদি বিবাহিতা হন, তবে স্বামীর নাম লিখুন। স্বামী জীবিত হলে এবং তাঁর ভোটার কার্ড থাকলে, সেই নম্বরটিও উল্লেখ করুন।
- বিধবা মহিলা: বিধবা হলে শুধুমাত্র স্বামীর নামটি লিখুন। তাঁর ভোটার কার্ড নম্বর লেখার কোনো প্রয়োজন নেই।
- ডিভোর্সি মহিলা: যদি আপনার বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গিয়ে থাকে, তবে স্বামীর নাম লেখার কোনো প্রয়োজন নেই। এই ঘরটি সম্পূর্ণ ফাঁকা রাখুন। মনে রাখবেন, এই এসআইআর প্রক্রিয়াটি শুধুমাত্র রক্তের সম্পর্কের (Blood Relation) উপর ভিত্তি করে করা হচ্ছে।
২০০২ সালের ভোটার লিস্টের তথ্য পূরণ
এই অংশটি দুটি ভাগে বিভক্ত এবং আপনাকে আপনার পরিস্থিতি অনুযায়ী যেকোনো একটি ভাগ পূরণ করতে হবে।
১. যদি আপনার নাম ২০০২ সালের লিস্টে থাকে
যেসব মহিলার নাম ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে ছিল, তাঁদের ওই লিস্ট থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এই অংশটি পূরণ করতে হবে। লিস্ট থেকে আপনার নিজের নাম, এপিক (EPIC) নম্বর, আত্মীয়ের নাম (যেমন স্বামী) এবং সম্পর্ক খুঁজে বের করে ফর্মে লিখুন। যাদের ২০০২ সালের পর বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে, কিন্তু লিস্টে স্বামীর নাম রয়েছে, তাঁদের সেই অনুযায়ী স্বামীর নামই লিখতে হবে। এছাড়াও, ২০০২ সালের লিস্ট অনুযায়ী জেলা, রাজ্য, বিধানসভার নাম ও নম্বর, অংশ নম্বর এবং ক্রমিক সংখ্যা ফর্মে উল্লেখ করতে হবে।
২. যদি আপনার নাম ২০০২ সালের লিস্টে না থাকে
যদি আপনার নাম ২০০২ সালের লিস্টে না থাকে কিন্তু আপনার কোনো রক্তের সম্পর্কের পূর্বপুরুষের (যেমন বাবা, মা, দাদু) নাম থাকে, তবে সেই তথ্য ব্যবহার করতে হবে। লিস্ট থেকে সেই ব্যক্তির নাম, এপিক নম্বর (যদি থাকে), আত্মীয়ের নাম এবং সম্পর্ক খুঁজে বের করে ফর্মে লিখুন। একইভাবে জেলা, রাজ্য, বিধানসভার নাম ও নম্বর, অংশ নম্বর এবং ক্রমিক সংখ্যা ওই লিস্ট অনুযায়ী পূরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে সম্পর্কটি বিএলও-কে বুঝিয়ে বলতে হতে পারে।
ফর্ম জমা দেওয়া
সমস্ত তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করার পর, ফর্মের নিচের নির্দিষ্ট জায়গায় সই করে আপনার এলাকার বিএলও-এর কাছে জমা দিন।














