Airfare Regulation: বিমান ভাড়া আকাশছোঁয়া! লাগামছাড়া দামে সুপ্রিম কোর্টের কড়া পদক্ষেপ, কেন্দ্রকে নোটিশ

By Bangla News Dunia Desk - Pallab

Published on:

Airfare Regulation: সাধারণ ভারতীয়দের জন্য বিমান ভ্রমণ ক্রমশ সাধ্যাতীত হয়ে উঠছে। অ্যালগরিদম-চালিত ভাড়ার ওঠানামা এবং লাগেজ বহন সংক্রান্ত নিয়মের পরিবর্তনের কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই বিষয়ে দায়ের করা একটি জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে সোমবার সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলিকে নোটিশ জারি করেছে।

বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার একটি বেঞ্চ কেন্দ্র, ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (DGCA) এবং এয়ারপোর্টস ইকোনমিক রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়াকে (AERA) চার সপ্তাহের মধ্যে তাদের জবাব দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছে। এই মামলাটি দায়ের করেছেন সমাজকর্মী এস. লক্ষ্মীনারায়ণন। চার সপ্তাহ পরেই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।

অস্বচ্ছ মূল্য নির্ধারণ এবং যাত্রীদের দুর্ভোগ

আবেদনকারীর পক্ষে বরিষ্ঠ আইনজীবী রবীন্দ্র শ্রীবাস্তব এবং দর্পণ ওয়াধওয়া আদালতে সওয়াল করেন। তারা যুক্তি দেন যে, অস্বচ্ছ ডাইনামিক প্রাইসিং ব্যবস্থার কারণে “কয়েক ঘন্টার মধ্যেই বিমান ভাড়া দ্বিগুণ বা এমনকি তিনগুণ হয়ে যেতে পারে”। এর ফলে বিশেষত রোগী, ছাত্রছাত্রী এবং পরিযায়ী শ্রমিকরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন, কারণ তারা আগে থেকে ভ্রমণের পরিকল্পনা করতে পারেন না।

আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বিভিন্ন সংকটকালীন পরিস্থিতিতে, যেমন এপ্রিল ২০২৫-এর পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলা এবং মহাকুম্ভের সময়, টিকিটের দাম “কয়েক ঘণ্টার মধ্যে চার থেকে ছয় গুণ” বেড়ে গিয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, শ্রীনগর থেকে দিল্লির স্বাভাবিক ভাড়া ৬,০০০-৮,০০০ টাকা হলেও, সেই সময় তা ৬৫,০০০ টাকায় পৌঁছেছিল। আবেদনে বলা হয়েছে, “জরুরী পরিস্থিতিতে যখন নাগরিকরা বিমানে যাতায়াত করতে বাধ্য হন, তখন এই ধরনের শোষণমূলক মূল্য নির্ধারণ জীবনের অধিকারের উপর সরাসরি আক্রমণ।”

অত্যাবশ্যক পরিষেবা হিসেবে বিমান চলাচল

মামলায় আরও যুক্তি দেওয়া হয়েছে যে, অত্যাবশ্যক পরিষেবা রক্ষণাবেক্ষণ আইন (Essential Services Maintenance Act) অনুযায়ী বিমান ভ্রমণকে একটি অপরিহার্য পরিষেবা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তাই রেল, বিদ্যুৎ এবং স্বাস্থ্যক্ষেত্রের মতোই এক্ষেত্রেও নিয়ন্ত্রক তদারকি প্রয়োজন। শুধুমাত্র বাজারের হাতে মূল্য নির্ধারণের বিষয়টি ছেড়ে দেওয়া সংবিধানের ১৪ এবং ২১ নম্বর অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন, যা সমতা এবং মর্যাদার সঙ্গে জীবনযাপনের অধিকার নিশ্চিত করে।

ব্যাগেজ অ্যালাউন্স হ্রাস সংক্রান্ত অভিযোগ

আবেদনে এয়ারলাইনসগুলির একতরফাভাবে ইকোনমি ক্লাসের যাত্রীদের জন্য বিনামূল্যে চেক-ইন ব্যাগেজের ওজন ২৫ কেজি থেকে কমিয়ে ১৫ কেজি করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এটিকে ৪০ শতাংশ হ্রাস হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে, এর ফলে যাত্রীদের হারানো ১০ কেজির জন্য অতিরিক্ত ৬,০০০ টাকা পর্যন্ত দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, “বিমান ভাড়া বা আনুষঙ্গিক ফি পর্যালোচনা বা তার ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণ করার ক্ষমতা কোনও কর্তৃপক্ষের নেই,” যার ফলে এয়ারলাইনসগুলি সাধারণ পরিষেবাগুলিকে রাজস্ব আয়ের স্রোতে পরিণত করছে।

মামলার আবেদনকারী মার্চ ২০২৫-এর রাজ্যসভা স্থায়ী কমিটির একটি প্রতিবেদনের উল্লেখ করে আদালতের কাছে একটি স্বাধীন বিমান শুল্ক এবং উপভোক্তা সুরক্ষা কমিশন (Aviation Tariff and Consumer Protection Commission) গঠনের নির্দেশ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। এই কমিশনের ভাড়া কাঠামো নিরীক্ষণ, অভিযোগের নিষ্পত্তি এবং জরিমানা আরোপ করার মতো আধা-বিচারিক ক্ষমতা থাকবে। আবেদনটিতে ভারতীয় বায়ুযান অধিনিয়ম, ২০২৪ কার্যকর করা এবং ২৫ কেজি ব্যাগেজ অ্যালাউন্স পুনর্বহাল করার দাবি জানানো হয়েছে।

Bangla News Dunia Desk - Pallab

মন্তব্য করুন