অর্থাভাব যাতে কখনো স্বপ্ন পূরণের পথে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, সেই লক্ষ্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকার একের পর এক স্কলারশিপ চালু করে রেখেছে। ঠিক তেমনই একটি স্কলারশিপ হল সহানুভূতি স্কলারশিপ। মূলত প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদের উচ্চশিক্ষায় এগিয়ে যেতে সাহায্য করে এই স্কলারশিপ। আর এটি বিকাশ ভবনের তরফ থেকেই দেওয়া হয়।
জানা যাচ্ছে, চলতি বছরে এই স্কলারশিপের জন্য ইতিমধ্যে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু কারা এই স্কলারশিপের জন্য সুযোগ পাবে, আর কত টাকা দেওয়া হবে, কীভাবে আবেদন করতে হবে, বিস্তারিত জানতে হলে অবশ্যই প্রতিবেদনটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
কী এই সহানুভূতির স্কলারশিপ?
এই স্কলারশিপ মূলত শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্যই দেওয়া হয়। যারা স্কুল কিংবা কলেজে পড়াশোনা করছে এবং নিজেদের শারীরিক অসুবিধা সত্ত্বেও শিক্ষার স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করতে চাইছে তাদের জন্য এই স্কলারশিপটি সেরা। এই স্কলারশিপ পেতে গেলে শারীরিক প্রতিবন্ধকতার সার্টিফিকেট থাকতে হয় আর কমপক্ষে ৪০% প্রতিবন্ধকতা দরকার হয়।
কত টাকা পাওয়া যায়?
জানা যাচ্ছে, এই স্কলারশিপের মাধ্যমে রাজ্য সরকার প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি বছরে ১২,০০০ টাকা করে স্টাইপেন্ড দিয়ে থাকে। আর এই অর্থ দিয়ে মূলত পড়াশোনার খরচ, বই-খাতা, টিউশন ফি কিংবা অন্যান্য যেকোনও শিক্ষা সংক্রান্ত প্রয়োজন সহজেই মেটানো যায়। আর এই আর্থিক সহায়তা অনেক পরিবারকেও সাহায্য করে।
কারা আবেদন করতে পারবে?
সহানুভূতি স্কলারশিপে আবেদন করার জন্য কিছু যোগ্যতা থাকা দরকার। যেমন—
- আবেদনকারীকে অবশ্যই প্রতিবন্ধী হতে হবে। সে যেকোনও রকম হতে পারে। যেমন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, শ্রবণ প্রতিবন্ধী, অস্থি সংক্রান্ত প্রতিবন্ধী, মানসিক প্রতিবন্ধী ইত্যাদি।
- কমপক্ষে ৪০ শতাংশ প্রতিবন্ধকতা থাকতে হবে।
- শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম নবম শ্রেণীতে পাঠরত হতে হবে। স্কুল থেকে কলেজ, যে কেউ আবেদন করতে পারবে। তবে আগের পরীক্ষায় কমপক্ষে ৫০ শতাংশ নম্বর থাকতে হবে।
- পরিবারের বার্ষিক আয় ২ লক্ষ টাকার মধ্যে হতে হবে।
- পরবর্তী ক্লাসে ভর্তির রিসিপ্ট থাকতে হবে।
কীভাবে আবেদন করবেন?
এই স্কলারশিপে সম্পূর্ণ অফলাইনের মাধ্যমে আবেদন করা যায়। এর জন্য আপনাকে নিম্নলিখিত ধাপগুলি অনুসরণ করতে হবে—
- প্রথমে সরকারি ওয়েবসাইট থেকে আবেদন ফর্মটিকে ডাউনলোড করতে হবে।
- এরপর নিজের ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে ফর্মটি পূরণ করতে হবে।
- এরপর প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলি যুক্ত করতে হবে।
- তারপর নিজের জেলার জনশিক্ষা প্রচার আধিকারিকের অফিসে গিয়ে তা জমা দিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ ২৫ বছর ফ্রিতে মিলবে বিদ্যুৎ! সরকারের এই দারুণ স্কিম সম্পর্কে জানেন কি?
কোন কোন ডকুমেন্ট দরকার হবে?
আবেদন করার সময় অবশ্যই আবেদনকারীর আধার কার্ড, আগের পরীক্ষার মার্কশিট এবং সার্টিফিকেট, পরিবারের বার্ষিক আয়ের প্রমাণপত্র, রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ছবি, কাস্ট সার্টিফিকেট এবং প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট দরকার পড়ে।
তবে বলে রাখি, এই বছর সহানুভূতি স্কলারশিপে আবেদনের শেষ তারিখ ২৮ নভেম্বর, ২০২৫। তাই অবশ্যই নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে আবেদন সেরে নেবেন।














