Teacher Recruitment: ৩৬১ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিলের আশঙ্কা! সুপ্রিম কোর্টের ৬টি কড়া প্রশ্নে চরম উদ্বেগ!

By Bangla News Dunia Desk - Pallab

Published on:

Teacher Recruitment: সুপ্রিম কোর্টে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানিতে প্রায় ৩৬১ জন শিক্ষকের চাকরির ভবিষ্যৎ ঘিরে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে। বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের এজলাসে এই মামলার শুনানিতে শিক্ষকদের নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং তার বৈধতা নিয়ে কঠোর পর্যবেক্ষণ করা হয়, যার ফলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের চাকরি বাতিলের আশঙ্কা তীব্র হয়েছে।

মামলার মূল প্রেক্ষাপট

এই মামলাটি মূলত ৩৬১ জন শিক্ষকের নিয়োগের বৈধতা নিয়ে। মূল অভিযোগ হলো, পূর্বে গঠিত তিন সদস্যের একটি কমিটি এই শিক্ষকদের চাকরি বহাল রাখার বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা ভুল ছিল। মামলাকারী বা পিটিশনারদের আইনজীবী আদালতে দাবি করেন যে, শিক্ষকদের ন্যূনতম যোগ্যতা (Minimum Eligibility Criteria) ছিল এবং তাদের নিয়োগ সঠিকভাবেই হয়েছিল। কিন্তু যখনই আদালত জানতে চায় যে কোন নির্দিষ্ট নিয়ম বা ‘Rules’ মেনে এই নিয়োগ করা হয়েছিল, তখনই জটিলতা বাড়ে।

শুনানির বিবরণ ও বিচারপতির পর্যবেক্ষণ

শুনানির সময় বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত জানতে চান, কোন নিয়মাবলী অনুসরণ করে এই শিক্ষকদের নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছিল। জবাবে পিটিশনারের আইনজীবী ২০১৫ ও ২০১৬ সালের নোটিফিকেশনের কথা উল্লেখ করেন। তবে বিচারপতি নির্দিষ্ট ‘Recruitment Rules’ বা নিয়োগ বিধি দেখতে চান।

শুনানির সময় বিচারপতি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তোলেন, যা মামলাটিকে এক নতুন দিকে मोड़ দেয়:

  • নিয়োগ বিধি: বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ২০১৫ সালের রুলস কি শুধুমাত্র মাইনরিটি বা মাদ্রাসার জন্য প্রযোজ্য ছিল? এবং ২০১৬ সালের নোটিফিকেশনটি কীভাবে কার্যকর হলো?
  • শূন্যপদ ও অনুমোদন: নিয়োগের পূর্বে শূন্যপদ বা ভ্যাকেন্সি কি ডিআই (DI – District Inspector) দ্বারা অনুমোদিত ছিল?
  • বিজ্ঞাপন: নিয়োগের জন্য যথাযথভাবে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল কিনা?
  • স্কুলের স্বীকৃতি: যে মাদ্রাসা বা স্কুলে নিয়োগ হয়েছে, তার ‘Recognition’ বা স্বীকৃতির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছিল বলে বিচারপতি নথিপত্র দেখে মন্তব্য করেন।

রাজ্যের আইনজীবী এবং পিটিশনারদের আইনজীবীর মধ্যে দীর্ঘ সওয়াল-জবাবের পর বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, সঠিক নিয়ম না মেনে এবং ডিআই-এর অনুমোদন ছাড়া কোনও নিয়োগ হলে তা অবৈধ হিসেবেই গণ্য হতে পারে।

সুপ্রিম কোর্টের ৬টি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন

মামলার নিষ্পত্তির জন্য বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ৬টি সুনির্দিষ্ট প্রশ্ন রেখেছেন। এই প্রশ্নগুলির সন্তোষজনক উত্তর এবং প্রমাণ দাখিল করতে না পারলে শিক্ষকদের চাকরি বাতিল হতে পারে।

১. স্বীকৃতির প্রমাণ: সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসাটি যে সরকার স্বীকৃত (Recognized), তার প্রমাণ দেখাতে হবে।
২. ম্যানেজিং কমিটি: নিয়োগটি ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে হয়ে থাকলে, সেই কমিটি যথাযথ নিয়ম মেনে গঠিত হয়েছিল কিনা, তার প্রমাণ দিতে হবে।
৩. স্টাফ প্যাটার্ন ও শূন্যপদ: সেই সময়ে স্কুলের স্টাফ প্যাটার্ন কী ছিল এবং শূন্যপদের বিস্তারিত তথ্য আদালতে পেশ করতে হবে।
৪. ডিআই অনুমোদন: উক্ত পদের জন্য ডিআই (DI)-এর অনুমোদন বা অ্যাপ্রুভাল ছিল কিনা, তার প্রমাণ দাখিল করতে হবে।
৫. বিজ্ঞপ্তি: নিয়োগের জন্য যে বিজ্ঞপ্তি (Advertisement) দেওয়া হয়েছিল, তা আদালতে পেশ করতে হবে।
৬. নির্বাচন প্রক্রিয়া: সেখানে নতুন করে কোনো নির্বাচন প্রক্রিয়া (Fresh Selection Process) বা ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছিল কিনা, তার প্রমাণ দিতে হবে।

পরবর্তী পদক্ষেপ

আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, পরবর্তী শুনানির ৭২ ঘণ্টা আগে রাজ্য সরকার বা মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনকে একটি হলফনামা (Affidavit) দিয়ে এই ৬টি প্রশ্নের উত্তর জমা দিতে হবে। যদি এই প্রশ্নগুলির যথাযথ উত্তর না পাওয়া যায়, তবে ৩৬১ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। মামলাটির পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ১৭ই ডিসেম্বর।

Bangla News Dunia Desk - Pallab

মন্তব্য করুন