SSC Experience Marks: স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC) দ্বারা শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মোড় এসেছে। অভিজ্ঞতার জন্য বরাদ্দ ১০ নম্বর ইন্টারভিউয়ের আগে যোগ হবে নাকি পরে, এই জটিল প্রশ্নকে কেন্দ্র করে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হওয়া একটি মামলার অর্ডারে সম্প্রতি সংশোধন করা হয়েছে। ২০ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চ এই সংশোধনটি করেন, যা রাজ্যের হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
শিশির দাস এবং অন্যান্যদের দায়ের করা এই মামলাটির (WPA 2457/2025) মূল বিষয়বস্তু হলো অভিজ্ঞতার ১০ নম্বর প্রদানের সময়কাল নিয়ে। এই সংশোধিত অর্ডারটি নিয়োগ প্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ এবং চাকরিপ্রার্থীদের জন্য নতুন দিশা নির্দেশ করেছে।
বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু কী?
মামলার মূল বিতর্কটি দুটি ভিন্ন দাবির উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। একদিকে, পিটিশনারদের দাবি যে এই অতিরিক্ত ১০ নম্বর চূড়ান্ত মেধা তালিকা বা মেরিট লিস্ট প্রকাশের সময় যুক্ত করা হোক। অন্যদিকে, স্কুল সার্ভিস কমিশনের যুক্তি হলো, ২০২৫ সালের নিয়ম অনুযায়ী, ইন্টারভিউয়ের জন্য তালিকা তৈরির সময়ই এই নম্বর যোগ করা উচিত। এই দুই ভিন্ন অবস্থানের কারণেই মামলাটি আদালতে গড়ায় এবং এর রায় নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও পদ্ধতির উপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে। এই বিতর্কের ফলে নিয়োগ প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হচ্ছে এবং প্রার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।
হাইকোর্টের সংশোধিত অর্ডারে নতুন কী আছে?
১২ তারিখের শুনানির পর, ২০ নভেম্বর ২০২৫-এ মামলাটি পুনরায় সংশোধনের জন্য মেনশন করা হয়। এই সংশোধিত অর্ডারে বিচারপতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ এবং নির্দেশ দিয়েছেন, যা নিম্নরূপ:
- সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন বিষয়: বিচারপতি সিনহা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন যে, অভিজ্ঞতার জন্য আদৌ ১০ নম্বর দেওয়া হবে কি না, সেই মূল বিষয়টিই বর্তমানে দেশের সর্বোচ্চ আদালত, অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। যদি সুপ্রিম কোর্ট এই নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্তটি বাতিল করে দেয়, তবে “আগে না পরে” যোগ করার প্রশ্নটিই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাবে।
- পিটিশনারদের জন্য সুযোগ: সংশোধিত অর্ডারে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। মধ্যবর্তী সময়ে, এই মামলার পিটিশনাররা তাদের প্রয়োজনীয় ছাড়ের জন্য সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করতে পারবেন। এটি তাদের আইনি লড়াইয়ের জন্য একটি নতুন পথ খুলে দিয়েছে।
- আসন্ন সুপ্রিম কোর্ট শুনানি: আগামী ২৪ এবং ২৬ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টে এই সংক্রান্ত মূল মামলাটির শুনানি হওয়ার কথা। মনে করা হচ্ছে, হাইকোর্টের এই পর্যবেক্ষণ এবং সংশোধিত অর্ডারটি সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে পিটিশনারদের যুক্তিকে আরও শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হতে পারে।
মামলার প্রভাব এবং ভবিষ্যৎ
এই মামলার চূড়ান্ত ফলাফল রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর গভীর প্রভাব ফেলবে, বিশেষ করে অপ্রশিক্ষিত (untrained) শিক্ষকদের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইতিমধ্যেই একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর ফলাফল এবং ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশিত হয়েছে এবং নবম-দশম শ্রেণীর ফলাফলও শীঘ্রই প্রকাশিত হওয়ার কথা। রাজ্যের লক্ষ লক্ষ চাকরিপ্রার্থী এখন সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত রায়ের দিকে তাকিয়ে আছেন, কারণ তার উপরই নির্ভর করছে তাদের চাকরির ভবিষ্যৎ এবং সমগ্র নিয়োগ প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত রূপ।
Follow Us














