SIR Form: বিবাহিত মহিলারা কীভাবে SIR ফর্ম ফিলাপ করবেন? দেখুন ২০০২ সালের তথ্যের ভিত্তিতে সঠিক নিয়ম ও পদ্ধতি

By Bangla News Dunia Desk - Pallab

Published on:

SIR Form: পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকা যাচাইকরণ এবং তথ্যের সঠিকতা বজায় রাখার জন্য SIR (Supplementary Information Register) ফর্ম পূরণ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। বিশেষ করে বিবাহিত মহিলাদের ক্ষেত্রে এই ফর্ম পূরণের সময় বেশ কিছু বিভ্রান্তি তৈরি হয়, কারণ বিয়ের পর তাদের ঠিকানা এবং পদবী অনেক ক্ষেত্রে পরিবর্তিত হয়ে যায়। এই নিবন্ধে আমরা বিবাহিত মহিলারা কীভাবে নির্ভুলভাবে SIR ফর্ম পূরণ করবেন, তার বিস্তারিত পদ্ধতি আলোচনা করব। ২০০২ সালের ভোটার তালিকার তথ্যের ভিত্তিতে ফর্মটি কীভাবে পূরণ করতে হবে, তা নিচে ধাপে ধাপে দেওয়া হলো।

ফর্মের সাধারণ অংশ পূরণের নিয়ম (সকলের জন্য প্রযোজ্য)

ফর্মের উপরের অংশটি প্রতিটি আবেদনকারীকেই পূরণ করতে হবে। এখানে বর্তমান সময়ের (২০২৫) সঠিক তথ্য দিতে হবে।

  • নাম ও ঠিকানা: আপনার বর্তমান ভোটার কার্ডে যে নাম, এপিক (EPIC) নম্বর এবং ঠিকানা রয়েছে, ঠিক সেটাই লিখবেন।
  • ছবি: ফর্মের নির্দিষ্ট স্থানে বর্তমান ভোটার কার্ডের ছবি এবং একটি সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজ ছবি লাগাতে হবে।
  • জন্ম তারিখ: ভোটার কার্ডে যদি শুধু জন্মের সাল থাকে বা ‘XX’ থাকে, তবুও ফর্মে আপনাকে সঠিক দিন, মাস ও সাল উল্লেখ করতে হবে।
  • পিতা বা অভিভাবকের নাম: বিবাহিত মহিলাদের ভোটার কার্ডে স্বামীর নাম থাকলেও, বংশপরিচয় সুনিশ্চিত করতে এই ফর্মে পিতার নাম লেখা বাঞ্ছনীয়। তবে যদি ফর্মে স্বামীর নাম লেখার জন্য আলাদা জায়গা থাকে, তবেই সেখানে স্বামীর নাম লিখবেন।
  • অন্যান্য তথ্য: আধার নম্বর (ঐচ্ছিক) এবং একটি সচল মোবাইল নম্বর দেবেন। পরিবারের সদস্য যেমন বাবা, মা বা স্বামীর নাম এবং তারা যদি ২০২৫ সালের ভোটার তালিকায় থাকেন, তবে তাদের এপিক নম্বর লিখবেন। কেউ মৃত হলে শুধু নাম লিখবেন।

পরিস্থিতি ১: যাদের নাম ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে ছিল না

যাদের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় ওঠেনি, তাদের ফর্মের বাঁদিকের কলাম বা নির্দিষ্ট অংশটি পূরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে বাবা, মা, দাদু বা ঠাকুমার ২০০২ সালের তথ্যের ভিত্তিতে আবেদন করতে হবে।

  • আত্মীয়ের নাম: আপনি যার তথ্যের ভিত্তিতে ফর্ম ফিলাপ করছেন (যেমন—বাবা), তার নাম লিখবেন।
  • এপিক নম্বর (২০০২): ২০০২ সালের ভোটার লিস্ট দেখে সেই সময়ের এপিক নম্বরটি হুবহু বসাবেন।
  • সম্পর্ক: ২০০২ সালের লিস্টে ওই আত্মীয়ের নামের পাশে ‘সম্পর্ক’ ঘরে যা লেখা ছিল (যেমন—পিতা বা স্বামী), সেটাই কপি করে বসাবেন। নতুন করে বর্তমান সম্পর্ক হিসাব করার প্রয়োজন নেই।
  • ঠিকানা ও বিধানসভা: ২০০২ সালের জেলা, বিধানসভার নাম, পার্ট নম্বর এবং ক্রমিক সংখ্যা লিস্ট দেখে হুবহু লিখবেন। জেলার নাম পরিবর্তন হলেও (যেমন বর্ধমান), পুরনো নামই ব্যবহার করবেন।

পরিস্থিতি ২: যাদের নাম ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে ছিল

যাদের বয়স একটু বেশি এবং ২০০২ সালে বা তার আগে বিয়ের আগে বাবার বাড়িতে ভোটার লিস্টে নাম ছিল, তাদের ফর্মের ডানদিকের কলাম বা নিজের তথ্যের অংশটি পূরণ করতে হবে।

  • নির্বাচকের নাম (২০০২): ২০০২ সালে বিয়ের আগে আপনার যে নাম ও টাইটেল ছিল (যেমন বিয়ের আগে মুখার্জী, এখন দত্ত), সেই অবিবাহিত অবস্থার নামটিই লিখবেন।
  • এপিক নম্বর: ২০০২ সালের এপিক নম্বরটি বসাবেন।
  • আত্মীয়ের নাম: সেই সময়ের লিস্টে অভিভাবক হিসেবে যার নাম ছিল (সাধারণত বাবা), তার নাম লিখবেন। নামের বানান ভুল থাকলেও লিস্ট অনুযায়ী লিখবেন।
  • ঠিকানা: ২০০২ সালের ঠিকানা, জেলা ও বিধানসভার তথ্য হুবহু পুরনো লিস্ট দেখে পূরণ করবেন।

জরুরি টিপস ও সতর্কতা

ফর্ম জমা দেওয়ার আগে নিচের বিষয়গুলি অবশ্যই খেয়াল রাখবেন:

  1. ভাষা: ফর্মটি বাংলায় পূরণ করলে পুরোটা বাংলায় এবং ইংরেজিতে করলে পুরোটা ইংরেজি ক্যাপিটাল লেটারে পূরণ করবেন। সংখ্যাগুলো ইংরেজিতে লেখা ভালো।
  2. হুবহু তথ্য: ২০০২ সালের তথ্যের ক্ষেত্রে বর্তমানের সাথে মিল না থাকলেও, পুরনো লিস্টে যা আছে সেটাই বসাবেন। বানান ভুল থাকলেও তা সংশোধন করবেন না।
  3. স্বাক্ষর: ফর্মের নিচে আবেদনকারীকে অবশ্যই সই করতে হবে।
  4. বিএলও-র পরামর্শ: দাদু বা ঠাকুমার তথ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে যদি ফর্মে সঠিক সম্পর্কের অপশন না পান, তবে জমা দেওয়ার সময় বিএলও (BLO)-র সাথে কথা বলে নেবেন।

সঠিক তথ্য এবং হাতের কাছে ২০০২ সালের ভোটার লিস্ট রেখে ফর্মটি পূরণ করলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

Bangla News Dunia Desk - Pallab

মন্তব্য করুন