WBPMS Online Apply: পশ্চিমবঙ্গের গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বসবাসকারী নাগরিকদের জন্য এখন ডিজিটাল পরিসেবা আরও সহজ হয়ে উঠেছে। একটা সময় ছিল যখন ইনকাম সার্টিফিকেট বা স্থায়ী বাসিন্দা সার্টিফিকেটের জন্য পঞ্চায়েত অফিসে বারবার যাতায়াত করতে হতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে সেই পুরনো হাতে লেখা সার্টিফিকেটের দিন শেষ। এখন স্কুল, কলেজ বা চাকরির পরীক্ষা, যেকোনো ক্ষেত্রেই ডিজিটাল সার্টিফিকেটের চাহিদা বাধ্যতামূলক। এই ডিজিটাল সার্টিফিকেট এখন আপনি বাড়িতে বসেই নিজের স্মার্টফোন ব্যবহার করে তৈরি করে নিতে পারবেন। রাজ্য সরকারের ‘WBPMS’ পোর্টালের মাধ্যমে এই সুবিধা এখন সকলের হাতের মুঠোয়।
আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র
অনলাইন আবেদন শুরু করার আগে আপনাকে কিছু নির্দিষ্ট নথিপত্র স্ক্যান করে বা ছবি তুলে রেডি রাখতে হবে। এই নথিগুলি ছাড়া আবেদন অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। নিচে একটি তালিকা দেওয়া হলো যা আপনাকে তৈরি রাখতে হবে:
- পাসপোর্ট সাইজ ছবি: আবেদনকারীর একটি পরিষ্কার রঙিন ছবি।
- ভোটার কার্ড: ভোটার কার্ডের এপিঠ ও ওপিঠ একটি পেজে স্ক্যান করতে হবে।
- আধার কার্ড: আধার কার্ডের উভয় দিক স্পষ্টভাবে স্ক্যান করা প্রয়োজন।
- পঞ্চায়েত মেম্বার ফরম্যাট: এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথি। আপনার স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যের কাছ থেকে একটি নির্দিষ্ট ফরম্যাটে সই ও স্ট্যাম্প নিয়ে আসতে হবে। এটি প্রমাণ করে যে আপনি ওই এলাকার বাসিন্দা।
ডকুমেন্টস আপলোড করার সময় ফাইলের সাইজ ঠিক রাখা অত্যন্ত জরুরি। নিচের টেবিলে ফাইলের সাইজ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হলো:
| নথির নাম | ফাইলের ধরণ | সর্বোচ্চ সাইজ |
|---|---|---|
| পাসপোর্ট ছবি | JPG / JPEG | ১০০ KB |
| ভোটার কার্ড | PDF / JPG | ১৫০ KB – ২ MB |
| আধার কার্ড | PDF / JPG | ২ MB |
| মেম্বার ফরম্যাট | ২ MB |
অনলাইনে ধাপে ধাপে আবেদনের পদ্ধতি
সঠিক পদ্ধতিতে আবেদন করলে মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যেই আপনি সার্টিফিকেট হাতে পেয়ে যাবেন। নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:
পোর্টাল অ্যাক্সেস ও লগইন
প্রথমে আপনার মোবাইলের ব্রাউজার থেকে গুগলে গিয়ে ‘WBPMS’ লিখে সার্চ করুন। সেখান থেকে ‘সিটিজেন কর্নার’ অপশনে যান। এরপর আপনার মোবাইল নম্বর দিয়ে ওটিপি ভেরিফিকেশন করে পোর্টালে লগইন করুন।
এলাকা ও ব্যক্তিগত তথ্য পূরণ
লগইন করার পর আপনাকে নিজের জেলা, ব্লক এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের নাম নির্বাচন করতে হবে। যদি আপনার সংসদের নম্বর জানা থাকে তবে তা উল্লেখ করতে পারেন। এরপর আবেদনকারীর নাম, অভিভাবকের নাম, এবং সম্পূর্ণ ঠিকানা সঠিকভাবে পূরণ করুন। নামের বানান যেন ভোটার বা আধার কার্ডের সাথে মিল থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন।
সার্টিফিকেট নির্বাচন ও আপলোড
আপনি কোন সার্টিফিকেট চাইছেন তা এখানে সিলেক্ট করতে হবে। সাধারণত ‘রেসিডেন্সি সার্টিফিকেট’ অটোমেটিক সিলেক্ট থাকে। যদি ‘ইনকাম সার্টিফিকেট’ প্রয়োজন হয়, তবে তাতে টিক দিন এবং আপনার বার্ষিক আয় ও আয়ের উৎস (যেমন চাষাবাদ বা ব্যবসা) লিখে দিন। এরপর একে একে সমস্ত স্ক্যান করা নথিপত্র সঠিক জায়গায় আপলোড করে ‘সাবমিট’ বাটনে ক্লিক করুন।
সার্টিফিকেট ডাউনলোড করবেন কীভাবে?
আবেদন জমা দেওয়ার পর আপনাকে অন্তত ২৪ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে। এরপর পুনরায় একই পদ্ধতিতে লগইন করে ‘অ্যাপ্লিকেশন স্ট্যাটাস’ অপশনে যেতে হবে। যদি আপনার আবেদনটি পঞ্চায়েত প্রধান বা আধিকারিক দ্বারা অনুমোদিত হয়ে যায়, তবে সেখানে ‘Ready to Download’ অপশনটি দেখতে পাবেন। সেখানে ক্লিক করলেই আপনার ডিজিটাল সই করা রঙিন সার্টিফিকেটটি ডাউনলোড হয়ে যাবে। এটি আপনি প্রিন্ট করে যেকোনো সরকারি বা বেসরকারি কাজে ব্যবহার করতে পারবেন।














