Sanchar Saathi App: মোবাইল গ্রাহক এবং স্মার্টফোন কোম্পানিগুলোর জন্য অত্যন্ত স্বস্তির খবর। কেন্দ্রীয় সরকার স্মার্টফোনে ‘সঞ্চার সাথী’ (Sanchar Saathi) অ্যাপ প্রি-ইনস্টল বা আগে থেকে ইনস্টল করে রাখার বাধ্যতামূলক নির্দেশিকা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। গত সোমবারই টেলিকমিউনিকেশন বিভাগ বা DoT একটি নির্দেশিকা জারি করেছিল, যেখানে বলা হয়েছিল ২০২৬ সালের মার্চ মাস থেকে সমস্ত নতুন ফোনে এই অ্যাপটি থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু প্রবল জনরোষ এবং গোপনীয়তা ভঙ্গের অভিযোগ ওঠার পর, মাত্র দুদিনের মধ্যেই সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এল মোদী সরকার।
বুধবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৫, কেন্দ্রীয় যোগাযোগ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে যে, নতুন স্মার্টফোনগুলিতে আর এই সাইবার সুরক্ষা অ্যাপটি বাধ্যতামূলকভাবে প্রি-ইনস্টল করতে হবে না। সরকারের এই ইউ-টার্ন বা সিদ্ধান্ত বদলের ফলে সাধারণ মানুষের মনে জমে থাকা ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা বা প্রাইভেসি সংক্রান্ত ভয় অনেকটাই দূর হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
কেন হঠাৎ সিদ্ধান্ত বদল করল সরকার?
সরকারি সূত্রে খবর, এই নির্দেশিকা প্রত্যাহারের পেছনে প্রধানত দুটি কারণ কাজ করেছে। প্রথমত, বিরোধী দল এবং ডিজিটাল রাইটস বা ডিজিটাল অধিকার রক্ষা সংস্থাগুলি সরকারের এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছিল। তাদের অভিযোগ ছিল, এর মাধ্যমে সরকার নাগরিকদের ওপর নজরদারি চালাতে পারে এবং এটি গ্রাহকের ব্যক্তিগত পছন্দের অধিকার খর্ব করে।
দ্বিতীয়ত এবং সরকারি প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গত কয়েকদিনে এই অ্যাপটির গ্রহণযোগ্যতা সাধারণ মানুষের মধ্যে অভূতপূর্বভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, বাধ্যতামূলক করার খবর চাউর হতেই মাত্র একদিনে প্রায় ৬ লক্ষ মানুষ নতুন করে এই অ্যাপটি ডাউনলোড করেছেন।
সরকারের বক্তব্য:
“যেহেতু সঞ্চার সাথী অ্যাপের গ্রহণযোগ্যতা এবং ব্যবহার সাধারণ মানুষের মধ্যে দ্রুত বাড়ছে, তাই মোবাইল প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির জন্য এটি প্রি-ইনস্টল করা আর বাধ্যতামূলক রাখার প্রয়োজন নেই বলে সরকার মনে করছে।”
সঞ্চার সাথী অ্যাপের বর্তমান পরিসংখ্যান
কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সাইবার জালিয়াতি রুখতে এবং সন্দেহজনক কল রিপোর্ট করতে এই অ্যাপটি অত্যন্ত কার্যকর। নিচে অ্যাপটি সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেওয়া হলো:
| বিবরণ | পরিসংখ্যান |
|---|---|
| মোট ব্যবহারকারী | ১.৪ কোটি (প্রায়) |
| একদিনে নতুন রেজিস্ট্রেশন | ৬ লক্ষ |
| দৈনিক জালিয়াতির রিপোর্ট | ২,০০০ (প্রায়) |
| লঞ্চের সাল | ২০২৩ |
আসল নির্দেশিকায় কী বলা হয়েছিল?
গত ১ ডিসেম্বর, টেলিকমিউনিকেশন বিভাগ বা DoT জানিয়েছিল যে, ডুপ্লিকেট বা নকল IMEI নম্বরযুক্ত ফোনের মাধ্যমে টেলিকম সুরক্ষা বিঘ্নিত হচ্ছে। এই সমস্যা মোকাবিলায় ২০২৬ সালের মার্চ মাস থেকে সমস্ত নতুন হ্যান্ডসেটে ‘সঞ্চার সাথী’ অ্যাপটি আগে থেকেই ইনস্টল থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। কিন্তু প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ে সরকার সেই অবস্থান থেকে সরে আসতে বাধ্য হলো।
সরকার অবশ্য পুনরায় আশ্বস্ত করেছে যে, এই অ্যাপটি সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং এর একমাত্র উদ্দেশ্য হলো সাইবার অপরাধীদের হাত থেকে নাগরিকদের রক্ষা করা। ব্যবহারকারীরা চাইলে যেকোনো সময় এই অ্যাপটি আনইনস্টল বা ফোন থেকে মুছে ফেলতে পারেন।














