Robert Kiyosaki Bitcoin: সাম্প্রতিক সময়ে ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজারে বড়সড় ধস নেমেছে। সোমবার বিটকয়েনের দর ৯০,০০০ ডলারের নিচে নেমে গেছে। ২০২১ সালের মে মাসের পর থেকে এক মাসে এত বড় পতন আর দেখা যায়নি। বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারীরা যখন ঝুঁকি এড়াতে ডিজিটাল অ্যাসেট এবং শেয়ার বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন, ঠিক তখনই উল্টো সুর গাইলেন জনপ্রিয় বই ‘রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড’-এর লেখক রবার্ট কিয়োসাকি। বাজারের এই মন্দা পরিস্থিতিতেও তিনি বিটকয়েনের ওপর পূর্ণ আস্থা রাখছেন।
বিটকয়েনের পতন ও রবার্ট কিয়োসাকির বার্তা
নভেম্বর মাসে বিটকয়েনের দর ১৮,০০০ ডলারেরও বেশি কমেছে, যা ডলারের অঙ্কে ২০২১ সালের পর সর্বোচ্চ মাসিক ক্ষতি। এই পরিস্থিতিতে যেখানে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা শঙ্কিত, সেখানে রবার্ট কিয়োসাকি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’-এ (সাবেক টুইটার) নিজের বিনিয়োগ দর্শন তুলে ধরেছেন। তিনি জানিয়েছেন যে তিনি কেবল উপদেশ দেন না, বরং তা নিজের জীবনেও প্রয়োগ করেন।
কিয়োসাকি জানান, তিনি ১৯৬৫ সাল থেকে রুপো, ১৯৭২ সাল থেকে সোনা, ২০১৯ সাল থেকে বিটকয়েন এবং ২০২৩ সাল থেকে ইথেরিয়াম সঞ্চয় করে আসছেন। তিনি একটি চমকপ্রদ তথ্য শেয়ার করেছেন—২০০০ সালে তিনি যেই সোনা কিনেছিলেন, তা দিয়েই সম্প্রতি তিনি সাড়ে ৪ মিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি বাড়ি কিনেছেন। অথচ সেই সোনার জন্য তার খরচ হয়েছিল মাত্র ৪,৫০,০০০ ডলার।
সময়ের সাথে টাকার মূল্য কতটা কমেছে?
কিয়োসাকি তার পোস্টে মুদ্রাস্ফীতি এবং ডলারের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাসের একটি ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছেন। তিনি দেখিয়েছেন কীভাবে গত ১০০ বছরে ১০০ ডলারের মূল্য বা ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। নিচে একটি তালিকার মাধ্যমে তার দেওয়া তথ্য তুলে ধরা হলো:
| বছর | ১০০ ডলারের ক্রয়ক্ষমতা |
|---|---|
| ১৯০০ | ৮ মাসের মুদি বাজার করা যেত |
| ১৯৬০ | মূল্য কমে দাঁড়ায় ৩৭ ডলারে |
| ২০০০ | মূল্য কমে দাঁড়ায় ৬ ডলারে |
| ২০২৫ (সম্ভাব্য) | মূল্য কমে দাঁড়াবে ৩.৮০ ডলারে |
‘লুজার’ হবেন না: কিয়োসাকির পরামর্শ
বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতি যখন ধসে পড়ার মুখে, তখন কীভাবে নিজেকে বিজয়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা যায়, সে বিষয়ে কিয়োসাকি তার ‘মানি টিপ #২’ শেয়ার করেছেন। তার সোজাসাপ্টা কথা, “লুজার হওয়া বন্ধ করুন।”
তিনি ব্যাখ্যা করেছেন যে, যারা পুরনো ধ্যান-ধারণা আঁকড়ে ধরে থাকে এবং বাবা-মায়ের শেখানো পুরনো আর্থিক নীতি মেনে চলে, তারাই শেষ পর্যন্ত হেরে যায়। তার বিখ্যাত বই ‘রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড’-এ তিনি ১৯৯৬ সালেই সতর্ক করেছিলেন যে, যারা কেবল টাকা জমিয়ে রাখে (Savers), তারা আসলে লুজার। বর্তমানের এই পড়তি বাজারেও যারা পুরনো আর্থিক চিন্তাধারা আঁকড়ে ধরে থাকবে, তাদের অবস্থা শোচনীয় হবে। তার মতে, পুরনো আইডিয়া বা চিন্তাভাবনা এখন অনেক ব্যয়বহুল, তাই নতুন করে ভাবার সময় এসেছে।
দাবিত্যাগ: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে। যেকোনো ধরণের আর্থিক বিনিয়োগের আগে অবশ্যই একজন নিবন্ধিত আর্থিক উপদেষ্টার পরামর্শ নিন। ক্রিপ্টোকারেন্সি বা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ।














