BLO App Update: পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত বুথ লেভেল অফিসার বা বিএলও-দের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খবর সামনে এসেছে। বর্তমানে স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন বা SIR-এর কাজ জোরকদমে চলছে। এই আবহে বিএলও অ্যাপে একটি নতুন আপডেট এসেছে, যা অনেক ক্ষেত্রেই চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বহু ফর্ম ফিলাপ করার পরেও সেগুলি ‘লজিক্যাল ডিসক্রিপেন্সি’ বা যৌক্তিক অসামঞ্জস্যের কারণে ফেরত আসছে। কেন এমন হচ্ছে এবং কীভাবে এই সমস্যার দ্রুত সমাধান সম্ভব, তা নিয়ে বিস্তারিত নির্দেশিকা নিচে আলোচনা করা হলো।
বিএলও অ্যাপের নতুন ফিচার: লজিক্যাল ডিসক্রিপেন্সি
বিএলও অ্যাপের ‘Special Intensive Revision’ বিভাগের একদম নিচের দিকে একটি নতুন অপশন যুক্ত হয়েছে, যার নাম ‘Reverify Logical Discrepancies’। এখানে ক্লিক করলেই দেখা যাচ্ছে যে, ইতিপূর্বে সাবমিট করা বেশ কিছু ফর্ম সিস্টেমে গৃহীত হয়নি এবং নির্দিষ্ট কিছু কারণে ফেরত পাঠানো হয়েছে। প্রতিটি নামের নিচেই লাল কালিতে উল্লেখ করা থাকছে ঠিক কী কারণে সেই ফর্মটি পুনরায় যাচাইয়ের জন্য পাঠানো হলো।
ফর্ম ফেরত আসার প্রধান কারণসমূহ
সিস্টেমের অ্যালগরিদম বেশ কিছু নির্দিষ্ট লজিক মেনে কাজ করছে। যখনই ২০০২ সালের তথ্যের সঙ্গে বর্তমান তথ্যের কোনো গরমিল পাওয়া যাচ্ছে, তখনই সেটি অবজেকশন হিসেবে মার্ক করা হচ্ছে। এর প্রধান কারণগুলি হলো:
- পারিবারিক লিংকেজ বা জেন্ডার সমস্যা: ভোটার কার্ডের তথ্যের সাথে ২০০২ সালের তথ্যের লিংকেজ করার সময় যদি বাবা ব্যতীত অন্য কারোর (যেমন মা, দাদু বা ঠাকুমা) সাথে ম্যাপ করা হয়, তবে সিস্টেম অনেক সময় জেন্ডার বা লিঙ্গ নির্ধারণে ভুল করছে। এটি একটি অন্যতম প্রধান কারণ।
- বাবার নামে গরমিল: বর্তমান এপিক বা ভোটার কার্ডে থাকা বাবার নামের সাথে ২০০২ সালের ডেটায় থাকা বাবার নামের মিল না থাকলে ফর্ম ফেরত আসছে। অনেক সময় ২০০২ সালের হার্ডকপি লিস্টে নাম ঠিক থাকলেও অনলাইনে হয়তো শুধু পদবি (যেমন ‘দত্ত’ বা ‘রায়’) দেখাচ্ছে, যা বর্তমান পূর্ণাঙ্গ নামের সাথে মিলছে না।
- নামের বানানে পার্থক্য: সামান্য বানানের তফাত থাকলেও সমস্যা হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, যদি ২০০২ সালে নাম থাকে ‘রবীন্দ্র নাথ’ আর বর্তমানে থাকে ‘রবীন্দ্রনাথ’, তবে সিস্টেম এটিকে আলাদা ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত করতে পারে।
- বয়সজনিত অসঙ্গতি: আবেদনকারী এবং যার সাথে লিংক করা হচ্ছে (পিতা/মাতা), তাদের বয়সের পার্থক্য যদি ১৮ বছরের কম হয়, তবে তা লজিক্যাল এরর হিসেবে গণ্য হচ্ছে। এছাড়া ৪৫ বছরের বেশি বয়সী কেউ যদি দাবি করেন যে ২০০২ সালে তার নাম ছিল না, তবে সেটিও সন্দেহের তালিকায় পড়ছে।
বিএলও-দের করণীয় এবং সমাধান
এই সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য অ্যাপের মধ্যেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী বিএলও-দের পদক্ষেপ নিতে হবে:
১. তথ্য সঠিক থাকলে (No Action Required): যদি বিএলও যাচাই করে দেখেন যে আবেদনকারীর দেওয়া তথ্য এবং পারিবারিক সম্পর্ক সম্পূর্ণ সঠিক (যেমন মায়ের সাথে লিংক করা বৈধ), তবে চিন্তার কিছু নেই। সেক্ষেত্রে ‘No Action Required’ অপশনটি বেছে নিয়ে ‘Yes’ করলেই রেকর্ডটি আপডেট হয়ে যাবে।
২. ডকুমেন্ট আপলোড: যদি দেখা যায় সিস্টেমের ভুলে ২০০২ সালের ডেটায় নাম অসম্পূর্ণ দেখাচ্ছে (যেমন শুধু পদবি আছে), তবে ‘View’ অপশনে গিয়ে সঠিক প্রমাণপত্র (যেমন আধার কার্ড বা পুরনো ভোটার লিস্টের কপি) আপলোড করে তথ্য আপডেট করতে হবে।
৩. তথ্য সংশোধন (Edit): যদি বাস্তবে নামের বানান বা ফোন নম্বরে ভুল থাকে, তবে ‘Edit Detail’ অপশনে গিয়ে তা ম্যানুয়ালি ঠিক করে দিতে হবে।
অ্যাপের যান্ত্রিক ত্রুটি বা গ্লিচ থেকে সাবধান
বর্তমানে বিএলও অ্যাপে একটি বড় টেকনিক্যাল সমস্যা বা ‘বাগ’ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তালিকায় থাকা প্রথম ব্যক্তির নামের উপর ক্লিক করলে বা সিলেক্ট করতে গেলে, স্বয়ংক্রিয়ভাবে দ্বিতীয় ব্যক্তির প্রোফাইল খুলে যাচ্ছে। এই ত্রুটির ফলে একজনের কাজ করতে গিয়ে ভুলবশত অন্যজনের ডেটা পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার মারাত্মক ঝুঁকি রয়েছে।
সমাধান: এই সমস্যা এড়াতে অভিজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন যে, তালিকার কাজ ওপর থেকে শুরু না করে একদম নিচ থেকে বা শেষ দিক থেকে শুরু করুন। অথবা, আপনি যে নির্দিষ্ট নামটিতে কাজ করতে চান, তার ঠিক আগের নামটিতে ক্লিক করলে কাঙ্ক্ষিত প্রোফাইলটি খোলার সম্ভাবনা থাকে। কাজে যাতে ভুল না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর রাখা প্রয়োজন।














