US Trade Deal: আমেরিকা ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী বাণিজ্য চুক্তি বা ট্রেড ডিল নিয়ে জল্পনার অবসান যেন হচ্ছেই না। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে ইউনাইটেড স্টেটস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ (USTR)-এর একটি মন্তব্য রীতিমতো শোরগোল ফেলে দিয়েছে। খোদ মার্কিন আধিকারিকরাই স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন যে, ভারতের সাথে তাদের শর্ত অনুযায়ী চুক্তি করা মোটেই সহজ কাজ নয়। তাঁদের ভাষায়, “India is a very difficult nut to crack”। অর্থাৎ, আমেরিকা চাইলেই ভারতকে চাপে ফেলে নিজেদের শর্ত মানাতে পারছে না। বিশ্ব রাজনীতিতে ভারতের এই অনড় অবস্থান বর্তমানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
বানিজ্য চুক্তিতে প্রধান অন্তরায় ও আমেরিকার দাবি
আমেরিকার দাবি, তারা ভারতকে সর্বকালের সেরা অফার বা “Best Ever Offer” দিয়েছে। কিন্তু নয়াদিল্লি সেই টোপ গিলতে নারাজ। এর পেছনে মূল কারণ হলো কৃষি ক্ষেত্র। আমেরিকা চায় তাদের দেশের কৃষিপণ্য এবং কর্পোরেট ফার্মগুলো ভারতের বিশাল বাজারে অবাধ প্রবেশাধিকার পাক। কিন্তু ভারত সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, মার্কিন কৃষকদের বিপুল সরকারি ভর্তুকি এবং উন্নত পরিকাঠামোর সাথে ভারতের প্রান্তিক কৃষকদের তুলনা চলে না। তাই অসম প্রতিযোগিতায় (Unfair Competition) ভারতীয় কৃষকদের ঠেলে দিয়ে কৃষি বাজার খুলে দেওয়া সম্ভব নয়। ট্রাম্প প্রশাসন জেদ ধরে বসে আছে যে, তাদের মনপসন্দ চুক্তি না হলে তারা পিছু হটবে না।
শুল্ক নীতি এবং সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকা
বর্তমানে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের ওপর প্রায় ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে রেখেছে, যা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে ঠান্ডা লড়াই চলছে। তবে এখানে ভারতের হাতে একটি বড় তুরুপের তাস রয়েছে। ভারত তাড়াহুড়ো না করে “ধৈর্যশীল অপেক্ষা” বা Patiently Wait নীতি গ্রহণ করেছে।
- সুপ্রিম কোর্টের রায়: আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্পের এই শুল্ক নীতির বৈধতা নিয়ে মামলা চলছে। খুব শীঘ্রই আদালত ঠিক করবে এই বাড়তি শুল্ক আইনসম্মত কি না।
- ভারতের লাভ: যদি আদালত এই শুল্ককে অবৈধ ঘোষণা করে, তবে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কমে ২০ শতাংশের আশেপাশে নেমে আসবে। সেক্ষেত্রে ভারতকে কোনো নতুন চুক্তিতে সই না করেই বড় জয় পেতে দেখা যাবে। একেই বিশেষজ্ঞরা “Do Nothing, Still Win” কৌশল বলছেন।
| বিষয় | বিবরণ |
|---|---|
| পাকিস্তানের ওপর মার্কিন শুল্ক | ১৯% |
| ভারতের ওপর মার্কিন শুল্ক | ৫০% |
| মার্কিন কংগ্রেসের মন্তব্য | ব্যর্থ বিদেশ নীতি (Failed Foreign Policy) |
ট্রাম্পের বিদেশ নীতি নিয়ে সমালোচনা
খোদ আমেরিকার মাটিতেই ট্রাম্পের ভারত নীতি সমালোচিত হচ্ছে। ‘হাউস অফ ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটি’-র সদস্যরা ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে “ব্যর্থ বিদেশ নীতি” বলে অভিহিত করেছেন। তাঁদের মতে, নোবেল শান্তি পুরস্কারের প্রতি ব্যক্তিগত মোহ বা ‘Obsession’-এর কারণে ট্রাম্প ভারতের মতো কৌশলগত মিত্রের সাথে সম্পর্ক খারাপ করেছেন। যেখানে পাকিস্তানের মতো দেশের ওপর মাত্র ১৯ শতাংশ শুল্ক, সেখানে ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানো নিয়ে খোদ মার্কিন সাংসদরাই অবাক। এই নীতির কারণে গত কয়েক বছরে দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে কোনো ফলপ্রসূ বৈঠকও সম্ভব হয়নি।
Follow Us














