Lump Sum Investment: এককালীন ৯ লাখ টাকা বিনিয়োগ! ১৫ বছরে মিলবে প্রায় ৫০ লাখ? এফডি নাকি মিউচুয়াল ফান্ড– কোথায় লাভ বেশি?

By Bangla News Dunia Desk - Pallab

Published on:

Lump Sum Investment: অনেকের হাতেই জীবনের কোনো না কোনো সময়ে এককালীন বা ‘লাম্প সাম’ (Lump Sum) টাকা আসে। হতে পারে সেটা অবসরকালীন প্রাপ্তি, পৈতৃক সম্পত্তির ভাগ বা কোনো বোনাস। এই বড় অঙ্কের টাকা সঠিক জায়গায় বিনিয়োগ করাটা একটা মস্ত বড় চ্যালেঞ্জ। অনেকেই ভাবেন, এই টাকা কি এফডি-তে রাখব, নাকি সোনা কিনব? আবার কেউ কেউ মিউচুয়াল ফান্ডের দিকেও ঝোঁকেন। কিন্তু আসল প্রশ্ন হলো, আজ যদি আপনার হাতে ৯ লাখ টাকা থাকে এবং আপনি যদি ১৫ বছরের জন্য সেটি বিনিয়োগ করেন, তবে কি সেটি ৫০ লাখ টাকায় পরিণত হওয়া সম্ভব?

বিনিয়োগের দুনিয়ায় ঝুঁকি এবং লাভের অঙ্ক সব সময় হাত ধরাধরি করে চলে। এককালীন বিনিয়োগের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, আপনি প্রথম দিন থেকেই পুরো টাকার ওপর সুদ বা রিটার্ন পেতে শুরু করেন। বাজার যখন নিম্নমুখী থাকে, তখন এককালীন বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ মনে হতে পারে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এটি অবিশ্বাস্য রিটার্ন দিতে সক্ষম। আজ আমরা একটি তুলনামূলক আলোচনার মাধ্যমে দেখে নেব– ফিক্সড ডিপোজিট (FD), সোনা (Gold) এবং মিউচুয়াল ফান্ড (Mutual Funds)– এই তিনটির মধ্যে কে আপনাকে ১৫ বছরে ৯ লাখ থেকে ৫০ লাখের লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে পারে।

বিনিয়োগের লক্ষ্য ও বাস্তবতা

ধরে নেওয়া যাক, আপনার বর্তমান বিনিয়োগযোগ্য অর্থ ৯ লাখ টাকা এবং আপনার লক্ষ্য ১৫ বছর পর ৫০ লাখ টাকা তৈরি করা। এর জন্য আমরা তিনটি জনপ্রিয় মাধ্যমের ঐতিহাসিক বা সম্ভাব্য রিটার্ন রেট ধরে হিসাব কষে দেখব।

তুলনামূলক হিসাবের টেবিল:

বিনিয়োগের মাধ্যম প্রত্যাশিত সুদের হার ১৫ বছর পর আনুমানিক লাভ মোট ফান্ডের পরিমাণ
ফিক্সড ডিপোজিট (FD) ৭% ১৫,৮৩,১২৮ টাকা ২৪,৮৩,১২৮ টাকা
সোনা (Gold) ১০% ২৮,৫৯,৫২৩ টাকা ৩৭,৫৯,৫২৩ টাকা
মিউচুয়াল ফান্ড (MF) ১২% ৪০,২৬,২০৯ টাকা ৪৯,২৬,২০৯ টাকা

বিশ্লেষণ: কে এগিয়ে, কে পিছিয়ে?

উপরের টেবিলটি লক্ষ্য করলে দেখা যাচ্ছে যে, এফডি বা ফিক্সড ডিপোজিট নিরাপদ হলেও লাভের অঙ্কে বেশ পিছিয়ে। ১৫ বছরে ৭ শতাংশ হারে সুদ ধরে ৯ লাখ টাকা বেড়ে মাত্র ২৪ লাখের আশেপাশে পৌঁছাবে, যা ৫০ লাখের লক্ষ্যের অর্ধেকেরও কম।

অন্যদিকে, সোনা বা গোল্ড একটি নিরাপদ এবং জনপ্রিয় মাধ্যম। ১০ শতাংশ গড় রিটার্ন ধরলে, ১৫ বছরে আপনার ৯ লাখ টাকা বেড়ে প্রায় ৩৭.৫ লাখে দাঁড়াতে পারে। এটি এফডি-র থেকে ভালো, কিন্তু ৫০ লাখের ম্যাজিক ফিগার ছুঁতে পারছে না।

সবশেষে আসছে মিউচুয়াল ফান্ড। যদি আমরা গড়ে ১২ শতাংশ রিটার্ন ধরি (যা শেয়ার বাজারের দীর্ঘমেয়াদী ইতিহাসে খুব সাধারণ), তবে দেখা যাচ্ছে ১৫ বছর পর আপনার ৯ লাখ টাকা বেড়ে প্রায় ৪৯.২৬ লাখ টাকায় পরিণত হতে পারে। অর্থাৎ, এটি আপনার ৫০ লাখের লক্ষ্যের একেবারে কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছে।

ঝুঁকি বনাম লাভ

যদিও মিউচুয়াল ফান্ড এখানে পরিষ্কার বিজয়ী, তবুও মনে রাখা প্রয়োজন যে এর সাথে বাজারের ঝুঁকি জড়িত। শেয়ার বাজার যখন চাঙ্গা থাকে, তখন মিউচুয়াল ফান্ড বা ইকুইটি থেকে সেরা রিটার্ন পাওয়া যায়। আবার বাজার যখন অস্থিতিশীল থাকে, তখন সোনা বা গোল্ড একটি শক্তিশালী ‘হেজ’ বা রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে। এফডি গ্যারান্টিযুক্ত রিটার্ন দিলেও, মুদ্রাস্ফীতির সাথে পাল্লা দিয়ে প্রকৃত সম্পদ বৃদ্ধিতে এটি অনেক সময় ব্যর্থ হয়।

তাই বিনিয়োগ করার আগে নিজের ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা যাচাই করা জরুরি। সব ডিম এক ঝুড়িতে না রেখে পোর্টফোলিও ডাইভারসিফাই করা বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে।

ডিসক্লেইমার: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য এবং এটি কোনোভাবেই আর্থিক পরামর্শ নয়। মিউচুয়াল ফান্ড বা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ বাজারগত ঝুঁকির সাপেক্ষ। বিনিয়োগ করার আগে অবশ্যই একজন সরকার স্বীকৃত আর্থিক উপদেষ্টার (Financial Advisor) পরামর্শ নিন।

Bangla News Dunia Desk - Pallab

মন্তব্য করুন