Indian Railways: ট্রেনে ভ্রমণ করার সময় টিকিট সঙ্গে রাখা একান্ত প্রয়োজন, নতুবা বড়সড় জরিমানার মুখে পড়তে হতে পারে। বর্তমান ডিজিটাল যুগে অনেকেই স্টেশনের লম্বা লাইনে না দাঁড়িয়ে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমেই টিকিট কাটতে পছন্দ করেন। বিশেষ করে অসংরক্ষিত বা জেনারেল টিকিটের ক্ষেত্রে ইউটিএস (UTS) অ্যাপটি যাত্রীদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয়। কিন্তু সম্প্রতি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া এবং সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছিল যে, রেলে ভ্রমণের সময় কেবল মোবাইলে টিকিট দেখালে আর চলবে না, যাত্রীদের অবশ্যই টিকিটের প্রিন্ট কপি বা হার্ড কপি সঙ্গে রাখতে হবে। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই নিত্যযাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক বিভ্রান্তি ও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। অবশেষে এই বিষয়ে মুখ খুলল ভারতীয় রেল।
গুজব বনাম বাস্তব: রেলের স্পষ্টিকরণ
যাত্রীদের আশ্বস্ত করে ভারতীয় রেলওয়ে সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে, অসংরক্ষিত টিকিটের প্রিন্ট কপি বাধ্যতামূলক করার খবরটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা। রেল মন্ত্রকের তরফে স্পষ্ট করা হয়েছে যে, এমন কোনও নতুন নিয়ম চালু করা হয়নি। টিটিই (TTE) বা টিকিট পরীক্ষকরা আগের মতোই যাত্রীদের মোবাইল ফোনে দেখানো ডিজিটাল টিকিট গ্রহণ করবেন। অর্থাৎ, ডিজিটাল ইন্ডিয়ার এই যুগে কাগজবিহীন বা পেপারলেস টিকিটিং ব্যবস্থাই বলবৎ থাকবে। যাত্রীদের অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই।
কাদের ফিজিক্যাল টিকিট প্রয়োজন?
রেলওয়ের নিয়মাবলী অনুযায়ী, টিকিটের ধরন ভেদে নিয়ম ভিন্ন হতে পারে। বিষয়টি পরিষ্কারভাবে বুঝে নেওয়া জরুরি:
- কাউন্টার টিকিট: আপনি যদি স্টেশনের টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট কাটেন, তবে অবশ্যই সেই ছাপানো টিকিটটি ভ্রমণের সময় আপনার সঙ্গে রাখতে হবে।
- অনলাইন ফিজিক্যাল মোড: অনলাইনে টিকিট কাটার সময় যদি আপনি ‘ফিজিক্যাল টিকিট’ অপশনটি বেছে নেন, তবে আপনাকে সেই টিকিটের প্রিন্ট আউট সঙ্গে রাখতে হবে।
- ডিজিটাল বা পেপারলেস টিকিট: যদি আপনি ইউটিএস (UTS) অ্যাপ বা অন্য কোনও মাধ্যমে ‘পেপারলেস’ বা ডিজিটাল টিকিট বুক করেন, তবে তার কোনও প্রিন্ট আউটের প্রয়োজন নেই। আপনার মোবাইলের স্ক্রিনে টিকিটটি দেখালেই তা বৈধ বলে গণ্য হবে।
চেকিং ব্যবস্থায় কড়াকড়ি ও সতর্কতা
যদিও মোবাইল টিকিট বৈধ, তবুও জালিয়াতি রুখতে রেলওয়ে তাদের চেকিং ব্যবস্থায় কিছুটা কড়াকড়ি এনেছে। অনেক সময় যাত্রীরা স্ক্রিনশট বা এডিট করা নকল টিকিট দেখিয়ে ভ্রমণ করার চেষ্টা করেন। এই প্রবণতা রুখতে রেলওয়ে আধিকারিকদের বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে টিকিট পরীক্ষকরা কিউআর কোড (QR Code) স্ক্যানারের সাহায্যে টিকিটের সত্যতা যাচাই করবেন। নির্দেশিকা অনুযায়ী, প্রতি ১০০ জন যাত্রীর মধ্যে অন্তত ১০ জনের অসংরক্ষিত টিকিট পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করা হবে যাতে কেউ ভুয়ো টিকিট ব্যবহার করতে না পারে।
ই-টিকিটের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে
রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব লোকসভায় একটি লিখিত জবাবে জানিয়েছেন যে, বর্তমানে ভারতীয় রেলে মোট সংরক্ষিত টিকিটের প্রায় ৮৭ শতাংশই ই-টিকিট। এই পরিসংখ্যান থেকেই বোঝা যায় যে সাধারণ মানুষ এখন কাউন্টারের ভিড় এড়াতে অনলাইন বুকিংয়ের দিকেই বেশি ঝুঁকছেন। সহজলভ্য ইন্টারনেট এবং স্মার্টফোনের দৌলতে রেলের এই পরিষেবা যাত্রীদের সময় ও শ্রম উভয়ই বাঁচাচ্ছে। সুতরাং, আপনি যদি বৈধ উপায়ে মোবাইলে টিকিট কেটে থাকেন, তবে নিশ্চিন্তে ভ্রমণ করুন, প্রিন্ট আউটের কোনও প্রয়োজন নেই।
Follow Us














