Bangla News Dunia , পল্লব চক্রবর্তী : পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে গেল।এই সময় বাঙালিরা যেমন মেতে ওঠেন দুর্গাপুজোয় তেমনি অবাঙালিরা ৯ দিনের জন্য নবরাত্রিতে মেতে থাকেন। এই বছর ৭ অক্টোবর শনিবার থেকে শুরু হয়েছে নবরাত্রি চলবে ১৫ অক্টোবর দশমী পর্যন্ত।
কৃষ্ণপক্ষের অবসান করে সূচনা হয় দেবীপক্ষের। শুক্লপক্ষের প্রতিপদ থেকে নবমী পর্যন্ত ন’টি রাত্রি পর্যন্ত দুর্গার নয়টি রূপের পুজো করা হয়ে থাকে। প্রতিপদ থেকে নবমী পর্যন্ত নয় রাত্রি ধরে দুর্গার নয়টি শক্তির পুজো হয় তাকেই নবরাত্রি বলে। শরৎকালে এই উত্সব হয় বলে একে শারদ নবরাত্রিও বলা হয়ে থাকে। দশমীতে শেষ হয় এই পুজো।
রামায়ণ অনুসারে ত্রেতাযুগে শ্রীরামচন্দ্র শারদীয়া দুর্গাপূজার প্রচলন করেন। রাবণ বধ করে সীতাকে উদ্ধারের জন্য রামচন্দ্র দুর্গতিনাশিনী দুর্গার অকালবোধন করে নবরাত্রির ব্রত পালন করেছিলেন। ব্রহ্মা দুর্গার এই নয়টি রূপের নামকরণ করেছিলেন। নয়টি নামের নয়টি বৈচিত্র্যময় রূপভেদ রয়েছে। এই নয়টি রূপের নাম হল- শৈলপুত্রী, ব্রহ্মচারিণী, চন্দ্রঘন্টা, কুষ্মান্ডা, স্কন্দমাতা, কাত্যায়নী, কালরাত্রি, মহাগৌরী,সিদ্ধিদাত্রী।
নবরাত্রির প্রথম রাতে পুজো হয় নবদুর্গার প্রথম রূপ শৈলপুত্রীর। শৈল মানে হল পাহাড় বা পর্বত। হিমালয় পর্বতের কন্যা দুর্গার আরেক নাম শৈলপুত্রী। দেবীর বাহন হল ষাঁড়। তাঁর হাতে থাকে ত্রিশূল এবং অন্যহাতে থাকে পদ্ম।
দ্বিতীয় রাতে পুজো হয় নবদুর্গার দ্বিতীয় রূপ ব্রহ্মচারিণীর। ব্রহ্মাকে স্বয়ং জ্ঞান দান করেন, ভক্তকেও ইনিই ব্রহ্মপ্রাপ্তি করান। এক হাতে থাকে রুদ্রাক্ষের জপমালা এবং অন্য হাতে থাকে কমণ্ডলু।
তৃতীয় রাতে পুজো হয় নবদুর্গার তৃতীয় রূপ চন্দ্রঘণ্টার। এখানে তাঁর মাথায় থাকে চাঁদ।
নবরাত্রির চতুর্থ রাতে পুজো হয় নবদূর্গার চতুর্থ রূপ কুষ্মান্ডা। দুর্বিষহ ত্রিতাপ হল কুষ্মা, যিনি এই ত্রিতাপ নিজের উদরে ধারণ করেন। কথিত আছে, দেবী তাঁর এই রূপে মহাবিশ্বের সৃষ্টি করেছিলেন। এই মহাবিশ্বের স্রষ্টা হিসেবে পূজিতা হন।
পঞ্চম রাতে পুজো হয় নবদুর্গার পঞ্চম রূপ স্কন্দমাতার।
ষষ্ঠ রাতে পুজো হয় নবদুর্গার ষষ্ঠ রূপ কাত্যায়নীর। পুরাণ অনুযায়ী কাত্যায়ন নামে এক ঋষি ছিলেন। দেবী দুর্গা তাঁর কন্যা রূপে জন্ম নেন। তাই দুর্গার এই রুপের নাম কাত্যায়নী।
এখানে দেবী কৃষ্ণবর্ণা। ভীষণদর্শনা দেবীর তিন হাতে অস্ত্র। এক হাতে ভক্তদের প্রতি বরাভয়। এই রূপই উপাসিত হয় কালিকা রূপে। তবে এই রূপেও দেবী ভক্তের শুভ করেন। তাই অন্যদিকে তিনি শুভঙ্করী। দেবীর বাহন গর্দভ। নবরাত্রির সপ্তম রাতে পূজিতা হন দেবী কালরাত্রি।
হিমালয়-কন্যা ছিলেন গৌর বর্ণা। শিবের তপস্যা করে রৌদ্রে তিনি কৃষ্ণা হন। মহাদেব যখন গঙ্গাজল দিয়ে তাঁকে স্নান করান, তখন তিনি হয়ে ওঠেন গৌরী। তাঁর এই রূপের নাম হয় মহাগৌরী। দেবীর এক হাত শোভিত বরাভয় মুদ্রায়। বাকি তিন হাতে থাকে পদ্ম, ত্রিশূল ও ডমরু।
নবদুর্গার নবম তথা শেষ রূপ হল সিদ্ধিদাত্রী। সিংহবাহিনী দেবীর চার হাতে আশীর্বাদী মুদ্রা তিনি সিদ্ধি দান করেন। সিদ্ধিদাত্রীর আশীর্বাদেই সর্ব সিদ্ধি লাভ করেন মহাদেব।