জয় রায় :- আমরা সকলেই ব্যায়ামের উপকারিতা জানি। তবে প্রতিটি ব্যায়াম করবার পূর্বে আমাদের সেই ব্যায়ামের সমন্ধে বিস্তারিত জ্ঞান থাকা দরকার। আমরা যদি সঠিক জ্ঞান ছাড়াই ব্যায়াম করি আর তাতে যদি কোনো ভুল ত্রূটি থাকে তবে আমাদের শরীরে বিপরীত প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। আর সব সময় প্রতিটি ব্যায়াম করবার পরে শবাসন করতে ভুলবেন না। চলুন উপবিষ্ট পবনমুক্তাসন ও ভুজঙ্গাসনের নিয়ম ও উপকারিতা জেনেনি –
উপবিষ্ট পবনমুক্তাসন
নিয়ম :- প্রথমে দু পা সামনে ছাড়িয়ে বসুন। আবারদু পায়ের হাটু এক সঙ্গে ভাঁজ করে বুক ও পেটের সঙ্গে লাগিয়ে দু হাতের সাহায্য চেপে ধরুন। এবার নিঃশাস স্বাভাবিক রেখে ৩০ সেকেন্ড সময় দিয়ে তিনবার করবেন এবং প্রতিবার করার পর একবার করে শবাসন করবেন।
কার্যকারিতা ও উপকারিতা :- এই আসনটির অভ্যাস পাকস্থলী , যকৃৎ প্লীহাকে সুস্থ ও সবল রাখে এবং তাদের কর্ম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এই আসন পেট থেকে বায়ু নিঃসরণ করে ও হজম শক্তি বাড়ায়। বহুমূত্র রোগে যারা ভুগছেন তারা এই আসনটি করলে উপকার পাবেন। যাদের হাঁপানিতে কষ্ট হয় তারা কিছুদিন পবনমুক্তাসন অভ্যাসের পর অবশ্যই উপবিষ্ট পবনমুক্তাসন অভ্যাস করবেন। কারণ নিঃশ্বাস স্বাভাবিক করতে এই আসনটি অদ্বিতীয়।
এই আসনটি আমাদের পেটের মধ্যে চাপের সৃষ্টি করে বলে পেটে অধিক পরিমানে রক্ত চালাচাল হয়। আর এর ফলে আমাদের পেটের সমস্ত সিস্টেম ভালো থাকে।
ভূজঙ্গাসন
ভুজঙ্গাসনে শরীর সাপের ফনা তোলার মতো দেখায় বলে এই আসনটির নাম ভূজঙ্গাসন।
নিয়ম :- প্রথমে উপুড় হয়ে শবাসনে শুয়ে পড়ুন ও পা জোড়া করে মাটিতে রাখুন দু হাতের তালু বুকের পাশে মাটিতে রাখুন। হাতের আঙ্গুল যেন কাঁধের সঙ্গে একই সমরেখায় থাকে। এবার কোমর থেকে শরীরের উপরাংশ মাটি থেকে যতদূর সম্ভব উপরে তুলুন। ঘাড় ও মেরুদণ্ডকে সাধ্যমত বাঁকাবেন এই অবস্থায় হাত দুটি শরীরের সঙ্গে থেকে থাকবে। এছাড়া তলপেট , উরু , হাটু ও পায়ের আঙ্গুল মাটির সাথে থেকে থাকবে।
এই অবস্থায় নিঃশাস স্বাভাবিক রেখে ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড থাকুন। এই ভাবে ব্যায়ামটি তিন অথবা চারবার করুন এবং প্রত্যেকবার এই আসনটি করার পর একবার করে শবাসন অবশই করবেন। এই আসনটি খুব ধীরস্থির ভাবে করবেন।
কার্যকারিতা ও উপকারিতা :- বর্তমানে কয়েকটি বিশেষ আসুক প্রতিদিন বেড়েই চলেছে , যেমন – সার্ভিক্যাল স্পন্ডলোসিস , পিঠের নানা রকম ব্যাথা ও বেদনা। ভূজঙ্গাসন পিঠের এই মাংস পেশি গুলিকে মজবুত ও কর্মক্ষম রাখে এবং বেথা বেদনা দূর করে।
এই আসনটির নিয়মিত অভ্যাস হজমশক্তি বৃদ্ধি করে ,যকৃৎ ও প্লীহাকে সুস্থ সবল করে , বাঁকা মেরুদন্ড সোজা করে। এই আসনটি নিয়মিত অভ্যাস করলে কোমরে বাত বা কোনোরকম ব্যাথা বেদনা আশ্রয় করতে পারে না। এই আসনটি প্রত্যেক মহিলার করা অতি অবশ্যই করা প্রয়োজন। কারণ ভূজঙ্গাসন ডিম্বাশয়ে ও জরায়ুতে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে সুস্থ রাখে এবং কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। স্ত্রী ব্যাধিতে এই আসনটি অনেক উপকারী।
এই ভূজঙ্গাসন হাই ব্লাড প্রেসার রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। কারণ মানসিক উদ্দেগ বা উত্তেজনা রক্তের মধ্যে এড্রিনালিন ক্ষরণে সাহায্য করে। ফলে রক্ত চাপ বৃদ্ধি পায়। কিন্তু এই আসনটির নিয়মিত অভ্যাস এড্রিনাল গ্রন্থিকে ত্রূটি মুক্ত কোরে কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।