অজয় দাস :- আমাদের প্রতোকেরই কিছু না কিছু ছোট খাটো রোগ হয়ে থাকে। যেমন – সর্দি , কাশি , জ্বর , আমাশা ইত্যাদি। তবে আমরা যদি এই রোগ গুলোরে ঘরোয়া চিকিৎসা জেনে নিতে পারি তবে আমাদের পক্ষেই ভালো। তবে চলুন কিছু রোগ ও তার ঘরোয়া চিকিৎসার ব্যাপারে জেনে নেওয়া যাক।
সর্দি ও কাশি :-
লক্ষণ :-নাকদিয়ে জল পড়া , হাঁচি গলা খুসখুস করা গা – হাত – পা কামড়ানো , বুকে ব্যাথা ইত্যাদি এই রজার প্রধান লক্ষণ। ঠান্ডা লাগা , জলে ভেজা , বাতাস লাগা ঘাম গায়ে শুকানো হঠাৎ করে গরম থেকে ঠান্ডায় যাওয়া বা ঠান্ডা থেকে গরমে যাওয়া এই রোগ সৃষ্টির কারণ।
চিকিৎসা :- বাসক পাতা ১ গ্রাম , তুলসী পাতা ১০ গ্রাম , ২৫০ গ্রাম জলে ফুটিয়ে ১০০ গাং হলে নামাতে হবে। এবারে জল ছেঁকে নিয়ে ৪ চামচ মধু মিশিয়ে দিনে দুবার করে খেতে হবে ৫ দিন ধরে।
বাসক পাতা ৪ গ্রাম , তুলসী পাতা ৪ গ্রাম আদা ৩ গ্রাম , তেজপাতা ৩ গ্রাম , পিপুল ৩ গ্রাম একত্রে ৩ কাপ জিলে সিদ্ধ করে এক কাপ হলে নামাতে হবে। এই জল হালকা গরম অবস্থায় চায়ের মতো করে খেতে হবে রোজ দুবেলা করে ৫ দিন।
বাচ্চাদের হুপিং কাশির জন্য ১০০ গ্রাম গাজরের রস ,৫০ গ্রাম মিছরি , ১০ গ্রাম বাসক পাতার রস এবং ১০ গ্রাম তুলসী পাতা থেঁতো করা রস একত্রে জাল দিয়ে যখন গাড়ো হবে তখন নামিয়ে ঠান্ডা করে শিশিতে ভরে রাখতে হবে। ঐ রস দিনে তিনবার রোগীকে খাওয়াতে হবে। প্রত্যেকবার এক চামচ রস গোলমরিচ গুঁড়ো মিশিয়ে খেতে হবে। এই পথ্য ১৫ দিন ধরে খেতে হবে।
পথ্য :- পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। টক খাওয়া যাবে না।
সর্দি- জ্বর :-
লক্ষণ :- ঠান্ডা লাগা , জলে ভেজা , বাতাস লেগে ঘাম বন্ধ হওয়া ইত্যাদি কারণে সর্দি জ্বর হয়। হাঁচি , নাক দিয়ে জল পড়া , গা হাত কামড়ানো , বুকে ব্যাথা , জ্বর জ্বর ভাব এই রোগেরপ্রধান লক্ষণ।
চিকিৎসা :- ১০ গ্রাম শিউলি পাতার রস , ১০ গ্রাম তুলসী পাতার রস , ১০ গ্রাম বাসক পাতার রস , ২ চামচ মধু একত্রে মিশিয়ে রোজ সকাল সন্ধ্যাতে খেতে হবে ৩/৪ দিন ধরে।
পথ্য :- কালোজিরে , আদা , পিঁয়াজ , রসুন কুচিয়ে তেলে ভেজে গরম ভাতের সাথে খেতে হবে।
সাধারণ জ্বর :-
লক্ষণ :- ঠান্ডা লাগা , হঠাৎ ঘাম বন্ধ হওয়া , অত্যাধিক পরিশ্রম করা ,আঘাত লাগা ,রাত্রি জাগা , গোসলের অনিয়ম ,হঠাৎ ঋতু পরিবর্তন ইত্যাদি কারণে এই জ্বর হয়। প্রথমে শীত , কাঁপুনি , গা ব্যাথা সহ জ্বর দেখা দেয়। কখনো শীত কখনো গরম ,গা জ্বালা ,অস্থিরতা , পিপাসা , মাথা ব্যাথা , কোষ্ঠ কাঠিন্য , ঘন ঘন নিঃশাস নেওয়া , অরুচি ,ময়লা জিভা ইত্যাদি হল এই রোগের প্রধান লক্ষণ।
চিকিৎসা :- ৫ গ্রাম শিউলি পাতার রস ,৫ গ্রাম তুলসী পাতার রস , ১ চামচ মধু সহ একত্রে খেতে হবে দিনে তিনবার করে তিন দিন।
পথ্য :- ডাল বা সবজি দিয়ে আটার রুটি ও দুধ খেতে হবে। ভাত না খাওয়া ভালো।
ম্যালেরিয়া জ্বর :-
লক্ষণ :- হঠাৎ করে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে আবার হঠাৎ করে ছেড়ে যায়। শরীর ব্যাথা , মাথা যন্ত্রনা করা ,কখনো প্রচন্ড কাশি আবার কখনো ঘাম ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়।
চিকিৎসা :- ১০ গ্রাম চিরতা , ১০ গ্রাম গুলঞ্চ ,১০ গ্রাম ক্ষেত পাপড়া ,১০ গ্রাম তুলসী পাতা ,৫ গ্রাম বাসক পাতা ১ কেজি জলে সিদ্ধ করতে হবে। এবার ২০০ গ্রাম হলে নামিয়ে ঠান্ডা করে ছেঁকে রেখে দিতে হবে। রোজ সকালে এই জল আধ কাপ করে নিয়ে তার সাথে এক চামচ মধু মিশিয়ে খেতে হবে ৭ দিন ধরে।
পথ্য :- জ্বর থাকলে ভাত না খাব উচিত তবে রুটি খাওয়া ভালো।