Bangla News Dunia , পল্লব চক্রবর্তী : ঘন জঙ্গলের মধ্যে ভগ্নস্তুপ। ভেঙে পড়া ইঁটের দেওয়ালে শ্যাওলা ও পুরাতন গাছ ডালপালা মেলেছে। কথিত আছে, এখানেই বৈশ্য রাজা সুরথ বিশ্বের মধ্যে প্রথম দুর্গাপুজো করেন। দুর্গাপুরের কাঁকসার গড় জঙ্গলে গড় চণ্ডীধাম। মেধাশ্রমের পাশেই সুরথের এই দুর্গা মন্দিরের ভগ্নাশেষ ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। সেই ইতিহাস স্মরণ করেই দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন এলাকাবাসী।
কথিত আছে, মেধা মুনির নির্দেশে আজকের এই জায়গাতেই সপ্তম শতকে গভীর অরণ্যের মাঝে রাজা সুরথ ও সমাধি বৈশ্য বসন্তকালে দুর্গাপুজো শুরু করেছিলেন। বীরভূমের অন্তর্গত বোলপুরে বিশাল রাজ্য ছিল রাজা সুরথের। সুপুর ছিল রাজধানী। বহিরাগতদের আক্রমণে রাজ্য হারিয়ে সুরথ ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী সমাধি বৈশ্য ছদ্মবেশ ধারণ করেন। কাঁকসার অজয় নদের দক্ষিণে শাল, সেগুন, মহুয়ার গভীর জঙ্গলে মহর্ষি মেধা মুনির আশ্রমে আশ্রয় নেন তাঁরা।
কাঁকসার গড়জঙ্গল নামে পরিচিত। মেধা মুনির আদেশেই রাজা সুরথ ও সমাধি বৈশ্য মৃন্ময়ী দুর্গামূর্তি নির্মাণ করে শুরু করেন পুজো। রাজা তাঁর রাজ্য পুনরুদ্ধার করেন। আত্মজ্ঞান লাভ করেন তাঁর সহযোগী সমাধি বৈশ্য। বর্তমানে রাজা সুরথের সেই দুর্গা মন্দির সংস্কারের অভাবে জঙ্গলের মাঝে হারিয়ে গিয়েছে। এখনও ছড়িয়ে রয়েছে জীর্ণ মন্দিরের ভগ্ন বিশেষ। ভগ্ন মন্দির ভেদ করে উঠেছে বহু পুরাতন বটগাছ। রাঢ় বাংলার মহাতীর্থ ভূমি নামে পরিচিত এই গড়চণ্ডীধাম।
মেধাশ্রমের বর্তমান সেবাইত যোগীরাজ ব্রহ্মনন্দগিরি জানান, “মেধা মুনি প্রাচীন শাল গাছের তলায় বসে মহাকালী, মহালক্ষী ও মহা সরস্বতী – তিনরূপে চণ্ডীপাঠ করেছিলেন। রাজা সুরথ রাজ্যে ফিরেই কাঁকসার এখানে পাঁচিল দিয়ে ঘিরে তিনটি মন্দির নির্মাণ করেন। ধংস হয়েছে বহুদিন। তার নিদর্শন এখনও ছড়িয়ে রয়েছে গড়চণ্ডীধামের এদিক ওদিক। মেধা মুনির নির্দেশ মতো এবং রাজা সুরথ দুর্গাপুজো সূচনা করেন।
আরও খবর পেতে ফলো করুন আমাদের চ্যানেল