সম্প্রতি ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে যেখানে বলা হয়েছে যে, যাদের ই-শ্রম (e-Shram) কার্ড আছে, তারা সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি মাসে ৩০০০ টাকা করে পাবেন। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর অনেক শ্রমিক ও সাধারণ মানুষ এই খবর শুনে উত্তেজিত ও কৌতূহলী হয়ে পড়েছেন। কিন্তু ভিডিওতে কী বলা হয়েছে এবং আসল সত্যটা কী, সেটাই আমরা এখানে বিস্তারিতভাবে জানব।
ভিডিওর মূল বক্তব্য
ভিডিওটির শুরুতে বলা হয়েছে, অনেক মানুষ মোবাইলে একটি এসএমএস পাচ্ছেন, যেখানে লেখা রয়েছে — “আপনার ই-শ্রম কার্ডে প্রতি মাসে ৩০০০ টাকা প্রদান করা হবে।” বক্তা জানিয়েছেন, এই বার্তাটি দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে এবং বহু মানুষ বিশ্বাসও করছেন যে সরকার থেকে সত্যিই টাকা আসবে। তবে ভিডিওর মধ্যেই বক্তা ব্যাখ্যা করেছেন যে এই মেসেজের অনেকটাই ভুয়া (fake) হতে পারে।
ভিডিওতে বলা হয়েছে, শ্রম মন্ত্রণালয় বা কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এমন কোনো অফিসিয়াল ঘোষণা এখনো প্রকাশিত হয়নি। ই-শ্রম প্রকল্পের উদ্দেশ্য মূলত অসংগঠিত খাতের শ্রমিকদের তথ্য সংরক্ষণ ও নথিভুক্ত করা। ভবিষ্যতে সেই তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন সরকারি সুবিধা দেওয়া হতে পারে, কিন্তু “প্রতি মাসে ৩০০০ টাকা” পাওয়ার কোনো প্রকৃত স্কিম এখন পর্যন্ত চালু হয়নি।
বিভ্রান্তিকর বার্তা ও প্রতারণার আশঙ্কা
ভিডিওর বক্তা বলেছেন, অনেক সময় এই ধরনের এসএমএসে একটি লিঙ্ক বা ওয়েবসাইট দেওয়া থাকে — যেখানে ক্লিক করতে বলা হয় বা ব্যক্তিগত তথ্য (আধার নম্বর, ব্যাঙ্কের ডিটেলস, OTP ইত্যাদি) চাইতে পারে। তিনি সতর্ক করেছেন যে এগুলো হতে পারে ফিশিং বা প্রতারণামূলক লিঙ্ক, যেগুলির মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে ঠকানো হয়।
এছাড়া কিছু ভুয়া ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজ ইচ্ছাকৃতভাবে এমন খবর ছড়াচ্ছে যাতে মানুষ বিভ্রান্ত হয় এবং তারা ভিউ বাড়াতে পারে।
জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান
ভিডিওর শেষ অংশে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, কেউ যদি এমন মেসেজ পান, তাহলে সেটিকে যাচাই করুন। অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://eshram.gov.in ছাড়া অন্য কোনো জায়গায় তথ্য দেবেন না। কোনো লিঙ্কে ক্লিক করবেন না এবং OTP বা ব্যাঙ্ক সম্পর্কিত তথ্য কাউকে পাঠাবেন না।
যদি মেসেজ সন্দেহজনক মনে হয়, তাহলে সেটি সঙ্গে সঙ্গে সাইবার ক্রাইম হেল্পলাইন ১৯৩০ বা স্থানীয় থানায় রিপোর্ট করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
উপসংহার
ভিডিওটির মূল উদ্দেশ্য ছিল মানুষকে সচেতন করা যে, “ই-শ্রম কার্ড থাকলেই ৩০০০ টাকা পাওয়া যাবে” — এই দাবি ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর। সরকার থেকে এমন কোনো ঘোষণা এখনো হয়নি। তাই এই ধরনের মেসেজে বিশ্বাস না করে যাচাই করে নেওয়াই একমাত্র সঠিক পথ। সচেতন থাকুন, প্রতারণা থেকে নিজেকে রক্ষা করুন।