ব্যাংকিং খাতে এবার আসছে বিরাট পরিবর্তন। কারণ, আর্থিক শক্তি বাড়াতে আর ক্ষতির ভারসাম্য রক্ষা করতে ব্যাংকগুলিকে ছোট ছোট ইউনিটে এবার একীভূত করার পরিকল্পনা করেছে অর্থ মন্ত্রক। বহুদিন ধরেই এ নিয়ে আলোচনা চলছিল। এবার সেই প্রস্তাব ক্যাবিনেটের টেবিলে পৌঁছতে চলেছে।
জানা যাচ্ছে, এই মেগা ব্যাংক মার্জার সম্পন্ন হলে দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থার রূপরেখা সম্পূর্ণরূপে বদলে যাবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছে, এতে ব্যাংক আরও শক্তিশালী হবে। এমনকি NPA অর্থাৎ নন পারফর্মিং অ্যাসেট অনেকটাই কমবে। পাশাপাশি বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় ভারতীয় ব্যাংকগুলির অবস্থান আরও শক্তপোক্ত হবে।
কোন কোন ব্যাংক এবার একীভূত হতে পারে?
বেশ কয়েকটি রিপোর্ট অনুযায়ী যে সমস্ত ব্যাংকগুলিকে একীভূত করার প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে সেগুলি হল- ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাংক, সেন্ট্রাল ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া, ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া, ব্যাংক অফ মহারাষ্ট্র, ইউকো ব্যাংক এবং পাঞ্জাব এন্ড সিন্ধ ব্যাংক। পাশাপাশি ইউনিয়ন ব্যাংক এবং ব্যাংক অফ ইন্ডিয়াকেও একত্রিত করার প্রস্তুতি চলছে।
আর যদি এই ব্যাংকগুলোকে একত্রিত করা হয়, তাহলে নতুন সম্মিলিত ব্যাংকটি হবে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাবলিক সেক্টর ব্যাংক। তবে কোন ব্যাংক কোনটির সঙ্গে মিশবে সে বিষয়ে এখনও স্পষ্ট তথ্য সামনে আসেনি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর।
দেশে থাকতে পারে মাত্র চারটি বড় সরকারি ব্যাংক
এই প্রস্তাব অনুযায়ী দেশে শেষ পর্যন্ত শুধুমাত্র চারটি বড় পাবলিক সেক্টর ব্যাংক টিকে থাকবে। আর সেগুলি হল স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া, পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক, কানাড়া ব্যাংক এবং ব্যাংক অফ বরোদা। বাকি সমস্ত ছোট সরকারি ব্যাংকগুলি এই চারটির সঙ্গে একীভূত হয়ে যাবে।
ব্যাংক মার্জারে কী কী প্রভাব পড়বে?
বলাবাহুল্য, কেন্দ্র সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে সরাসরি প্রভাব পড়বে কোটি কোটি গ্রাহকদের উপর এবং প্রায় ২ লক্ষ ৩০ হাজার ব্যাংক কর্মীর উপর। প্রথমত, মার্জারের পর একই এলাকায় একাধিক শাখা থাকা অপ্রয়োজনীয় হয়ে উঠবে। ফলে হাজার হাজার শাখা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
দ্বিতীয়ত, একই কাজে অনেক কর্মী জড়ো হলে প্রমোশন পাওয়া কঠিন হবে। তাই বদলি বা ট্রান্সফার হতে পারে। কর্মীদের পদোন্নতির সম্ভাবনা বাড়বে। তৃতীয়ত, পাবলিক সেক্টর ব্যাংকে নিয়োগ কমতে পারে। ফলে কর্মসংস্থানে প্রভাব পড়তে পারে। এছাড়া একীভূত ব্যাংকে প্রক্রিয়া আরও ডিজিটাল হয়ে উঠবে।
আরও পড়ুনঃ নতুন বছরে কি অনেকটাই সস্তা হবে রান্নার গ্যাসের দাম?
অতীতেও হয়েছে ব্যাংক মার্জার
প্রসঙ্গত, ভারতের ব্যাংক একীভূতকরণ নতুন কিছু নয়। কারণ, ২০১৯ সালে মেগা মার্জারের সময় দেশের ব্যাংকের সংখ্যা ২৭টি থেকে কমে ১২টিতে নেমে এসেছিল। আর ২০১৭ সালে স্টেট ব্যাংকের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল বেশ কিছু রাজ্যের আলাদা আলাদা ব্যাংক। পাশাপাশি ২০১৯ সালেও বেশ কিছু ব্যাংক একীভূত হয়েছিল।














