Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- একদিকে ব্রিকস (BRICS) দেশ। একদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ যেন প্রকাশ্যে বিরোধ। এবার সরাসরি BRICS-এর সমালোচনায় ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর দাবি এতদিন ব্রিকস দেশগুলি বিভিন্ন পরিকল্পনা করলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপেই তা নাকি আর সফল হবে না। এক ধাপ এগিয়ে তিনি এটাও দাবি করলেন যে, ১৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকির পরেই ‘পাঁচ দেশের এই জোট ভেঙে পড়েছে’।
‘ডলারের বিরুদ্ধে ব্রিকসের পরিকল্পনা কখনই সফল হবে না’
ট্রাম্প বলেন, ব্রিকস দেশগুলি মার্কিন ডলারকে ধ্বংস করতে চায়। ওরা নিজেদের নতুন মুদ্রা চালু করার পরিকল্পনা করছে। এর আগে তিনি প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর স্পষ্ট বার্তা দিয়েছিলেন—যে দেশ ব্রিকসের এই নতুন মুদ্রাকে সমর্থন করবে, তাদেরই পণ্যে ১৫০ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে। ট্রাম্পের দাবি, এর পরেই ব্রিকস দুর্বল হয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন:- প্রতিমাসে 5000 টাকা দিচ্ছে মোদি সরকার। কিভাবে অনলাইনে আবেদন করবেন, দেখে নিন বিস্তারিত
‘BRICS is Dead’— দাবি ট্রাম্পের
সম্প্রতি ট্রাম্প ফের বলেন, ‘ব্রিকস দেশগুলি কখনই মার্কিন ডলারের বিকল্প আনতে পারবে না। যদি তারা সেই চেষ্টাও করে, সেক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘ব্রিকস দেশগুলো ডলারের আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করছে। আমেরিকা তা নীরবে মেনে নেবে না।’ তিনি ট্রুথ সোশ্যাল-এ পোস্ট করে বলেন, ‘ব্রিকস দেশগুলির উচিত নতুন মুদ্রা তৈরির চিন্তা বাদ দেওয়া, নাহলে কড়া শুল্ক বসবে।’
ব্রিকস দেশরাই বা কেন নতুন মুদ্রা চাইছে?
বিশ্বজুড়ে এখন একটি অর্থনৈতিক পরিবর্তনের হাওয়া চলছে। অনেকেই বলছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিজেদেরই আর্থিক পরিস্থিতি আগের মতো নেই। আবার তারই মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একের পর এক কড়া নীতি-নিয়ম চাপিয়ে চলেছে। এমন পরিস্থিতিতে এই BRICS দেশগুলি আর আগের মতো ডলারের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে চাইছে না।
বিগত কয়েক দশক ধরে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ডলারের আধিপত্য ছিল। তবে গত কয়েক বছরে ইউরো ও ইয়েনের ব্যবহার কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্রিকস দেশগুলি নিজেদের মধ্যে নতুন মুদ্রা চালু করলে ডলারের ভ্যালু কমে যেতে পারে। এতে আমেরিকার অর্থনীতিতে প্রভাব পড়তে পারে। সেই কারণেই এত চিন্তিত ট্রাম্প।
২০২২ সালে ১৪তম ব্রিকস সম্মেলনে প্রথম এই বিষয়ে আলোচনা হয়। এরপর ২০২৩ সালে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা ব্রিকস মুদ্রার পক্ষে সমর্থন জানান।
ব্রিকসের বর্তমান সদস্যরা হল ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চিন, দক্ষিণ আফ্রিকা, মিশর, ইথিওপিয়া, ইরান এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহী। এছাড়াও তুরস্ক, আজারবাইজান এবং মালয়েশিয়া-সহ আরও কয়েকটি দেশ সদস্যপদ চেয়েছে।
রাশিয়ার তীব্র সমালোচনা
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ২০২৩ সালের ব্রিকস সম্মেলনে আমেরিকার বিরুদ্ধে ডলারকে ‘অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ডলার ত্যাগ করতে চাই না, তবে আমেরিকা আমাদের বাধ্য করছে বিকল্প খুঁজতে।’
ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির পর ব্রিকস দেশগুলি কী পদক্ষেপ নেবে, এখন সেটাই দেখার।
আরও পড়ুন:- AC-র জন্য মিটারের লোড বাড়াতে কীভাবে আবেদন করবেন, কত টনে-কত টাকা? দেখে নিন এক ক্লিকে