Bangla News Dunia , পল্লব চক্রবর্তী : শখে পায়রা পালন করেন ? দেশে এখন বাণিজ্যিকভাবে পালন করছেন কেউ কেউ। বিশেষ করে বেকারত্ব দূর করতে পায়রা পালন ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে। বেশি জায়গারও প্রয়োজন হয় না। অন্যদিকে কম খরচে অল্প সময়ে বাচ্চা পাওয়া যায়, বাজারে দামও বেশি। খুব সহজেই পায়রা পালন করে আয় করা সম্ভব।
লাভজনক পালনের জন্য বাড়তি জ্ঞান ও শিক্ষার প্রয়োজনও হয় না। শুধু সামান্য নজরদারি আর সতর্ক হলেই পাখি পালন করে বেকারত্ব দূর করা যায়। পায়রা প্রতি মাসে দুটি করে ডিম দেয়। বাচ্চার বয়স ২১ দিন হলে বিক্রির উপযোগী হয়।
পায়রার বিভিন্ন জাত রয়েছে। বলা হয় পৃথিবীতে ৬০০ জাতের পায়রা রয়েছে। ‘জালালি পায়রা’ উন্নত জাতের দেশি পায়রা। মাংস উৎপাদনের জন্য হোয়াইট কিং, টেক্সেনা, সিলভার কিং, হামকাচ্চা, কাউরা, হোমার, গোলা, ডাউকা, লক্ষ্যা ও পক্কা উল্লেখযাগ্য পায়রার জাত। আমাদের দেশে শখের বশে সিরাজী, ময়ুরপঙ্খী, লাহোরি, ফ্যানটেইল, জেকোভিন, মুখি, গিরিবাজ, টাম্পলার, লোটন প্রভৃতি কবুতর বেশি চাষ করা হয়।
পায়রার জন্য ঘর তৈরি পদ্ধতি আগে জেনে নিতে হবে। ক্ষতিকর প্রাণী ও পাখি যাতে পায়রাকে খেয়ে ফেলতে না পারে তাই প্রয়োজন উঁচু ও শক্ত ঘর তৈরি করতে হবে। ঘর সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে। প্রতি মাসে ১ বার করে ঘর পরিষ্কার করে দিতে হবে। ডিম পাড়ার সময় যাতে সহজেই খড় সংগ্রহ করতে পারে সে জন্য পায়রার ঘরের আশপাশে খড় রেখে দিতে হয়। ঘর রাখতে হবে সবসময় শুকনো
পায়রা সাধারণত জোয়ার, ভুট্টা, ধান, চাল, কলাই, কাউন, মটর, খেসারি, সরিষা, গম পায়রার পছন্দনীয় খাবার। এসব খাদ্য প্রতিদিন প্রত্যেকটি পায়রার জন্য ৩৫ থেকে ৬০ গ্রাম খাদ্য প্রয়োজন।
পায়রার জন্য প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যে ভুট্টা ভাঙা ৩৫ গ্রাম, গম ভাঙা ২০ গ্রাম, সরিষা দানা ১৫ গ্রাম, ছোলা ভাঙা ২০ গ্রাম, সয়াবিন ভাঙা ৫ গ্রাম, চালের কুঁড়া ৪.৫ গ্রাম, লবণ ০.৫ গ্রাম।
রোগ ও প্রতিকার ?
পায়রার খুব বেশি রোগের প্রকোপ দেখা যায় না। তবে যেসব রোগ হয় সেগুলোর মধ্যে বসন্ত, কলেরা, রক্ত আমাশয় যাকে বলা হয়ে থাকে ককসিডিওসিস, আরও আক্রমণ করতে পারে কৃমি। পায়রার বসন্ত রোগে পালকবিহীন স্থানে ফোস্কা পড়ে। গলার ভেতর ঘা হয়, খেতে পারে না। রোগ দেখা দিলে আক্রান্ত পায়রার গুটিতে টিংচার আয়োডিন বা স্যাভলন লাগানো যেতে পারে। পায়রার বয়স যখন চার সপ্তাহ তখন পিজিয়ন পক্স টিকা বুকে ও পায়ের পালক তুলে সিরিঞ্জ দিয়ে দিলে বসন্ত রোগ হয় না।
রোগ দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গ বা রোগের আশঙ্কা করলে জলে মিশিয়ে ই.এস.বি-৩ আ এমবাজিন জাতীয় ওষুধ খাওয়াতে হবে প্যাকেটের নির্দেশনা মতো। কৃমি হলে পায়রা দুর্বল হয়ে পড়ে ও ডায়রিয়া হয়। জলের পিপাসা বাড়ে। রক্তশূন্যতা দেখা যায়। ঠিকমতো পায়রার যত্ন নিলে এটি পালন করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া যায়।
আরও খবর পেতে ফলো করুন আমাদের চ্যানেল