একাধিক সাংবাদিকের নামে খুনের মামলা দায়ের, ইউনূস জমানায় বাংলাদেশে ‘কণ্ঠরোধ’ হচ্ছে সংবাদ মাধ্যমের?

By Bangla News Dunia Desk - Pallab

Published on:

ryhdf copy copy

Bangla News Dunia , Rajib : কলম, ক্যামেরাকে ‘কাবু’ করার চেষ্টার অভিযোগে একাধিকবার বিদ্ধ হয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরে গণমাধ্যমের উপর কোনও ‘অদৃশ্য শিকল’ পরানো থাকবে না বলে আশা করেছিলেন সংবাদ জগতের মানুষজন। কিন্তু বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর একাধিক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ইউনূস সরকার তিন দফায় বাংলাদেশের সাংবাদিকদের ‘প্রেস অ্যাক্রিডিয়েশন কার্ড’-ও বাতিল করেছে। যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের একাংশ।

সম্প্রতি বাংলাদেশের দু’টি প্রথম সারির সংবাদ মাধ্যমের অফিসের সামনে ‘বাংলাদেশের জনগণ’ ব্যানারে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখায় একটি গোষ্ঠী। বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল এই সংবাদ মাধ্যমগুলি ‘ভারতপন্থী’ সংবাদ প্রচার করছে। পরে অবশ্য বিক্ষোভকারীদের হঠিয়ে দেয় বাংলাদেশের শৃঙ্খলারক্ষা বাহিনী। কিন্তু এই সমস্ত ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে, সংবাদমাধ্যমের সুর মুক্ত হলেই কি অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে একটি পক্ষ?

ইউনূস জমানায় একাধিক বাংলাদেশের সাংবাদিকের নামে দায়ের হয়েছে হত্যা মামলা

গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। ওই দিনই মীরপুরে গুলি লেগে মৃত্যু হয়েছিল মোহম্মদ ফজলুর নামে এক ব্যক্তির। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা দখলের পর এই হত্যা মামলায় ১৬৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম দাবি করছে, ওই দেশের ভাসানটেক থানায় দায়ের করা এই হত্যা মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে ২৫ জন সাংবাদিক।

অভিযুক্তদের তালিকায় নাম রয়েছে বাংলাদেশের বেসরকারি চ্যানেলের সাংবাদিক শাহনাজ শারমীনেরও। তিনি অবশ্য বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছেন, ওই দিন বঙ্গভবনে ছিলেন তিনি। সেখান থেকে লাইভ কভারেজ হচ্ছিল। রাত ১১টার পর তিনি ফেরত আসেন নিজের অফিসে। প্রশ্ন উঠেছে, সেক্ষেত্রে কী ভাবে এই হত্যা মামলায় নাম জড়াল তাঁর?

এই সাংবাদিক বলেন, ‘আমার নামে মামলা থাকলে আমি তো আশঙ্কা মুক্ত হতে পারব না।’ ফলে কাজে প্রভাব পড়ছে বলেও দাবি তাঁর।

অগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালীন রাজধানীর উত্তরা এলাকায় ফজলুল করিম নামে এক ব্যক্তির খুনের ঘটনায় বাংলাদেশের দুই সাংবাদিক শাকিল আহমেদ ও ফারজানা রুপাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

বাংলাদেশের সম্পাদক পরিষদও সাংবাদিকদের হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সংগঠনটির সভাপতি মাহফুজ আনাম বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এই ধরনের ঘটনা স্বাধীন সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে।’ নোবেলজয়ী ইউনূস সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত তা নয়, বিশ্বাস মাহফুজের।

পাশাপাশি মুহাম্মদ ইউনূসের জমানায় তিন দফায় বাংলাদেশের সাংবাদিকদের স্থায়ী অস্থায়ী ‘প্রেস অ্যাক্রিডিয়েশন কার্ড’ বাতিল নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়েছিল আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলিতেও। সেখানে নাম ছিল একটি মার্কিন সংবাদ সংস্থার ব্যুরো চিফেরও। এর জন্য আলাদা করে কোনও কারণ দর্শায়নি বাংলাদেশ সরকার, অভিযোগ এমনটাই। অনেকেই এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা দাবিও জানিয়েছিলেন। একইসঙ্গে অভিযোগ, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের খবর নিরপেক্ষভাবে সামনে আনতে পারছে না সেই দেশের সংবাদ মাধ্যম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু সাংবাদিক এই নিয়ে জানাচ্ছেন, তাঁরা এই সমস্ত ঘটনা প্রকাশের ক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রথম সারির দু’টি সংবাদ মাধ্যমের অফিসের বাইরে বিক্ষোভের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ)। ২৭ নভেম্বর এই আন্তর্জাতিক সংগঠন জানায়, এই বিক্ষোভ কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে)-ও একটি বিবৃতি দিয়ে জানায়, ইউনূস সরকার সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় কাজ করবে বলে আশাবাদী তারা।

যদিও সংবাদমাধ্যমের ‘কণ্ঠরোধ’-এর কোনও চেষ্টা করা হচ্ছে না, দাবি করেছেন অন্তর্বর্তী সরকার অন্যতম উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। সাংবাদিকদের হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করার বিষয়টিও তিনি সমর্থন করছেন না বলেও জানান তিনি। অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্দোষ কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেই বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে।’

পাশাপাশি তিনি জানান, বাংলাদেশের তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রকের তরফে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। যে সব সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা মনে করছেন তাঁদের বিরুদ্ধে ‘হয়রানিমূলক মামলা’ করা হয়েছে তাঁরা অভিযোগ জানাতে পারবেন। কমিটি সেগুলি খতিয়ে দেখবে।

‘প্রেস অ্যাক্রিডিয়েশন কার্ড’ বাতিল প্রসঙ্গে নাহিদ অবশ্য দাবি করেছেন, ওই ব্যক্তিরা সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে অপকর্ম করছিলেন। রাজনৈতিক দলের কর্মীদেরও এই কার্ড দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন তিনি। তাই সেই সমস্ত অযোগ্য ব্যক্তিদের কার্ড বাতিল করেছে সরকার, দাবি এই উপদেষ্টার।

বহু সাংবাদিক শেখ হাসিনার দল আওয়ামি লিগের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক হিসেবে কাজ করেছেন বলেও অভিযোগ তাঁর। যদিও আওয়ামি লিগ রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকেই সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধের অভিযোগ তুলে আসছিলেন।

আরো পড়ুন :- রফতানিতে রেকর্ড গড়ল ভারত ! সফল মোদী সরকার

আরো পড়ুন:এবার মহাসমুদ্রে ডুব দিয়ে এলিয়েন খুঁজবে নাসা, কিভাবে? জানতে হলে পড়ুন

আরো পড়ুন :- NIT দুর্গাপুরে কর্মী নিয়োগ চলছে! সরাসরি ইন্টারভিউর মাধ্যমে, বেতন ২০,০০০/- টাকা

এই রকম খবর পেতে দয়া করে আমাদের চ্যানেল ফলো করুন

আরো পড়ুন :- SBI থেকে LPG, OTP! ১ ডিসেম্বর থেকে বদলে যাচ্ছে ৪ নিয়ম

আরো পড়ুন :- রাহানে, আইয়ার বা রিঙ্কু সিং! নিজেকে KKR-র অধিনায়ক ঘোষণা করলেন ‘তারকা’

আরো পড়ুন :- বীরভূমের কোর কমিটির চেয়ারম্যান তিনিই, কালীঘাটের বৈঠকের পরেই ঘোষণা অনুব্রতর

Bangla News Dunia Desk - Pallab

মন্তব্য করুন