Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুর্ঘটনার কবলে পড়া জেজু ফ্লাইটের ব্ল্যাক বক্সের সন্ধান মিলল। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে ১৭৯ জন যাত্রীর। জীবিত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছেন দুই ক্রু। কী ভাবে বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারাল, কী ভাবে সেটি রানওয়ের পাঁচিলে গিয়ে ধাক্কা মারল, ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার হওয়ায় তা অনেকটাই স্পষ্ট হবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
জানা গিয়েছে, মৃতদের তালিকায় ছিলেন ৩ থেকে ৭৮ বছর বয়সি যাত্রীরা। ছিলেন চার ক্রু এবং দু’জন থাইল্যান্ডের বাসিন্দা। ২৫ এবং ৩৩ বছর বয়সি দুই জেজু এয়ার ফ্লাইটের ক্রু-কে ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। যদিও তাঁরা গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। এখনও পর্যন্ত আতঙ্কের ছাপ রয়েছে তাঁদের চোখেমুখে।
দক্ষিণ কোরিয়ার ডেপুটি পরিবহণমন্ত্রী জু জং-ওয়ান বলেন, ‘দু’টি ব্ল্যাক বক্স, ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার এবং ককপিট ভয়েস রেকর্ডার উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। ইতিমধ্যেই সেগুলি তদন্তকারী অফিসারদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।’
আরো পড়ুন:– ১১ নম্বরে রোজ ১১১ মিনিট! আয়ু বাড়ায় ১১ বছর, দাবি গবেষণায়। বিস্তারিত জানুন
জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত জেজু এয়ারের ওই বিমানটি ১৫ বছরের পুরোনো ছিল। ব্যাঙ্কক থেকে মুয়ান এয়ারপোর্টের দিকে যাত্রার সময়ে সেটি কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে সতর্কবার্তাও পেয়েছিল। পাইলটকে জানানো হয়েছিল পাখির সঙ্গে ধাক্কা লাগার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রথম ওয়ার্নিংয়ের পর পাইলট ‘মে ডে’ বার্তা পাঠিয়েছিলেন বলেও খবর। প্রথমবার অবতরণের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। এর পর দ্বিতীয়বার বিমানটিকে ল্যান্ডিং করানোর চেষ্টা করতে গিয়েই বিপত্তি বাধে। রানওয়েতে স্কিড করে যায় বিমানের চাকা। সেটি সজোরে ধাক্কা মারে পাঁচিলে এবং তার পরের ঘটনা সকলেই দেখেছেন ভাইরাল হওয়া একাধিক ভিডিয়োতে। দাউদাউ জ্বলে ওঠে বিমানের একাংশ। আর একটি অংশ ভেঙে টুকরো হয়ে যায়। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় চারপাশ। ভিডিয়ো ফুটেজ দেখে তদন্তকারীদের অনুমান, বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ার বিকল হয়ে গিয়েছিল, তার জেরেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন পাইলট।
ঠিক কী কারণে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা?
আরও বেশ কয়েক মাস লেগে যেতে পারে এই বিমান দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে। তবে কিছু পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। মূলত পাখির সঙ্গে ধাক্কা এবং ল্যান্ডিং গিয়ারে যান্ত্রিক ত্রুটির বিষয়টি ধরেই এগোতে চাইছেন তাঁরা। দক্ষিণ কোরিয়ার পরিবহণ মন্ত্রক স্বীকার করেছে কন্ট্রোল টাওয়ার বিমানটিকে সতর্ক করেছিল সম্ভাব্য পাখির ধাক্কা নিয়ে। এয়ারপোর্ট অথরিটির পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, জরুতি অবতরণের চেষ্টা করেছিল বিমানটি। কিন্তু গতি কমাতে ব্যর্থ হন পাইলট। এর জেরেই সম্ভবত নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রানওয়ের পাঁচিলে গিয়ে সজোরে ধাক্কা মারে বিমানটি।
কী এই মে-ডে কল?
‘মে-ডে’ কল অর্থাৎ জরুরি ভিত্তিতে পাঠানো বার্তা। সাধারণত মাঝআকাশে বিমান বিকল হয়ে থাকলে পাইলটরা, মাঝসমুদ্রে বিপদে পড়লে জাহাজের ক্যাপ্টেনরা এই বার্তা পাঠিয়ে থাকেন। জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা থাকলে এমন বার্তা পাঠানো হয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে, যাতে দ্রুত সাহায্য মেলে।
আরো পড়ুন:– ভয়াবহ ১০ বিপর্যয় যা বিপুল ক্ষতি করেছে এ বছরে, জানুন বিস্তারিত
আরো পড়ুন:– জ়িনাতকে ধরতে বন দপ্তরের সফল অভিযানকে কুর্নিশ মমতার, কী লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী?