ইরফান হাবিব কংগ্ৰেসের মঞ্চে রাজ্যপালের রাজনীতি থামালেন।

By Bangla news dunia Desk

Published on:

Bangla News Dunia, দিশা দে :- সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে এ বার প্রতিবাদের আঁচ গিয়ে পড়ল কেরলের কান্নুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ইন্ডিয়ান হিস্ট্রি কংগ্রেস’(আইএইচসি)-এর মঞ্চেও। আর সেই বিক্ষোভের সামনে পড়ে উদ্বোধনী বক্তৃতা থামিয়ে দিতে বাধ্য হলেন কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান

শনিবার সিএএএনআরসি-র সমর্থনে উদ্বোধনী মঞ্চ থেকেই সওয়াল করেছিলেন কেরলের রাজ্যপাল। টেনে এনেছিলেন দেশভাগ ও কাশ্মীর প্রসঙ্গ। কিন্তু, তাঁর বক্তব্য ‘উত্তেজক’ বলে পাল্টা অভিযোগ করেন বিক্ষোভকারীরা। সে সময় মঞ্চে থাকা ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিবকেও রাজ্যপালের কথার প্রতিবাদ করতে দেখা যায়।

কান্নুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮০তম ইন্ডিয়ান হিস্ট্রি কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। শনিবার সেখানেই বিতর্ক দানা বাঁধল। আর সেই বিতর্কে জড়িয়ে পড়লেন কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান। নাম জড়াল ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিবেরও। ঘটনার সূত্রপাত রাজ্যপালের বক্তব্য ঘিরে।
আরিফ খান তাঁর বক্তব্যে টেনে আনেন সিএএ ও কাশ্মীর প্রসঙ্গ। বলেন, মহাত্মা গাঁধী এবং জওহরলাল নেহরু দেশভাগের পর পাকিস্তানে থাকা অ-মুসলিমদের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা সিএএ পূরণ করেছে। এর পরই রাজ্যপাল বলতে থাকেন, ‘‘দেশ ভাগের জন্য কেরল ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এখানকার মানুষের সহমর্মিতা রয়েছে।
Arif Mohammad Khan
এমনকি তাঁরা কোনও বিষয় না জেনেই প্রতিবেশী যখন প্রতিবাদ দেখান তখন তাতে যোগ দেন। দেশ ভাগ উত্তর ভারতের মানুষের ভাবনায় আঘাত দিয়েছিল।’’ পাকিস্তান কাশ্মীর ইস্যু জিইয়ে রাখতে চায় বলেও এ দিন মন্তব্য করেন তিনি।

[ আরো পড়ুন :- কলকাতা চোরাই সোনা পাচারের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। ]

সিএএ ও এনআরসি নিয়ে বিক্ষোভ দেখানোর জন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলেন পড়ুয়া প্রতিনিধিদের একাংশ। রাজ্যপালের এই বক্তব্যে আগুনে ঘি পড়ে। সঙ্গে সঙ্গেই বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া, জওহরলাল নেহরু ও আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র প্রতিনিধিরা। তাঁরা রাজ্যপাল আরিফ খানের বক্তব্য ‘উত্তেজনাপূর্ণ’ বলেও অভিযোগ করতে থাকেন। সেই সঙ্গে সিএএ ও এনআরসি বিরোধী স্লোগানও দিতে থাকেন তাঁরা। প্ল্যাকার্ড দেখিয়েও প্রতিবাদ জানান তাঁরা।

এর পরেও বক্তৃতা চালিয়ে যেতে থাকেন রাজ্যপাল। কিন্তু, বাধা পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তিনি। রাজ্যপালকে মঞ্চ থেকেই বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, ‘‘আপনারা যখনই বিতর্ক ও আলোচনার জন্য দরজা বন্ধ করে দেবেন তখনই আপনারা হিংসার সংস্কৃতি তৈরি করবেন।’’ বিক্ষোভকারীরা আলোচনা করতে ভয় পাচ্ছে বলেই এগিয়ে আসছে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

রাজ্যপাল যখন দেশভাগ প্রসঙ্গ টেনে বক্তৃতা করছেন তখন তার প্রতিবাদ জানান আইএইচসি-র প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইরফান হাবিবও। কিন্তু, রাজ্যপাল বক্তৃতা থামাতে অস্বীকার করেন। উল্টে হাবিবের উদ্দেশে জানান, কাশ্মীর ইস্যুতে তাঁর বক্তব্য থামানোর কোনও অধিকার নেই। হাবিব ‘সালিশি’ করার চেষ্টা করছেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন আরিফ খান।

রাজ্যপালের রোষ থেকে বাদ যাননি বিক্ষোভকারীরাও। তাঁদের উদ্দেশে একের পর এক তোপ দাগতে থাকেন ক্ষুব্ধ আরিফ খান। বিক্ষোভ চালিয়ে গেলে তাঁদের ওই জায়গা থেকে বার করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি। বার বার অভিযোগ করতে থাকেন, বিক্ষোভকারীরা একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিয়েই আইএইচসি-তে ঢুকেছে। এর মধ্যে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছয়। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের থামানোর চেষ্টা করতে গেলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দেখা দেয় তুমুল উত্তেজনা। ওই ঘটনায় চার পড়ুয়াকে আটক করা হয়েছে।

[ আরো পড়ুন :- কাশ্মীর নিয়ে ইসলামী দেশগুলির বৈঠকে রাজি হলো সৌদি। ]

Bangla news dunia Desk

মন্তব্য করুন