Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- ভিন রাজ্য থেকে ক্রিসমাসের ছুটি কাটাতে এসে বেলুড় মঠে বাবা–মায়ের হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিল একরত্তি মেয়ে। কিন্তু একটুও ঘাবড়ে না গিয়ে সোজা পুলিশের কাছে গিয়ে বাবা–মাকে খুঁজে দেওয়ার আবেদন জানায় সে।
বাবা–মায়ের ঠিক ঠিক নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর পর্যন্ত পুলিশকে জানিয়ে দেয় শিশুটি। শিশুর কাছ থেকে সে কথা জেনে তৎপর হয়ে ওঠেন বড়দিনের ছুটির ভিড় সামলাতে ব্যস্ত বালি থানার পুলিশ আধিকারিকরা। দ্রুত মেয়েটির বাবা–মাকে খুঁজে বের করেন তাঁরা।
কর্নাটকের হুবলির দম্পতি প্রদীপ ও পূজা কলকাতায় এসে বুধবার বেলুড় মঠে বেড়াতে যান। সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ বেলুড় মঠে এসে পৌঁছন তাঁরা। ঘুরে দেখেন নানা মন্দির। আচমকাই সকাল ১০টা নাগাদ ভিড়ের চাপে কোনও ভাবে হাতছাড়া হয়ে যায় তাঁদের ছয় বছরের শিশুকন্যা। দিশেহারা বাবা–মা একে ওকে জিজ্ঞাসা করেন কেউ তাঁদের মেয়েকে দেখেছে কি না।
স্কুলের প্রথম শ্রেণির ছাত্রীটি কিন্তু অভিভাবকের প্রশিক্ষণে জানত ভিড়ে হারিয়ে গেলে কী করতে হবে। গুটিগুটি পায়ে সে ততক্ষণে খুঁজে পৌঁছে গেছে বেলুড় মঠের মধ্যে থাকা পুলিশ ক্যাম্পে। সেখান উর্দিধারী পুলিশ আঙ্কলদের চিনতেও অসুবিধা হয়নি তার। একটুও ঘাবড়ে না গিয়ে পুলিশের কাছে এসে হিন্দিতে জানায় সে তার বাবা–মার কাছ ছাড়া হয়ে গেছে। ছ’বছরের শিশু নিজের বাবা মায়ের ফোন নম্বর, নাম সবই নির্ভুল ভাবে পুলিশকে জানায়।
আরো পড়ুন:– আরজি করে আট তলার ঘরের সিল ভাঙার চেষ্টা, নেপথ্যে কোন রহস্য?
ক্যাম্পের পুলিশ আধিকারিকরা মুহূর্তে সব বুঝে নিয়ে তার দেওয়া ফোন নম্বরে ফোন করে তার বাবার সঙ্গে কথা বলেন। মেয়ের খবর পেয়ে শিশুর বাবা–মা কিছুক্ষণের মধ্যেই হাজির হয়ে যান পুলিশ ক্যাম্পে। সেখানে মেয়েকে ফিরে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যান তাঁরা। দম্পতি জানান, খুব ছোট বয়স থেকেই মেয়েকে হারিয়ে গেলে কী করতে হবে শিখিয়েছেন তাঁরা। নিজের নাম, বাবা–মায়ের নাম, ফোন নম্বর সব সে জানত। হারিয়ে গেলেও সাধারণ বুদ্ধির জোরে শিশু নিজেই যাতে বিপদ থেকে উদ্ধারের পথ পেতে পারে তাই সচেতন অভিভাবক হিসেবে তাঁরা এ সব আগেই করেছিলেন তাঁরা।
শিশুকে বাবা–মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতে পেরে খুশির হাওয়া পুলিশ ক্যাম্পেও। বালি থানার আইসি কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে শিশু–সহ পরিবারটিকে বড়দিনের উপহার হিসেবে মিষ্টিমুখ করান। ক্যাম্পে থাকে অভিজ্ঞ পুলিশ আধিকারিকদেরও এ দিন অভিভাবকদের প্রতি পরামর্শ, স্কুলের পড়ার বাইরে শিশুকে যদি এমন সাধারণ জ্ঞানের শিক্ষা দেওয়া যায় যাতে সে পরিবারের নাম, ফোন নম্বর, ঠিকানা সঠিকভাবে বলতে পারে তাহলে শিশুর নিরাপত্তা অনেক জোরদার হতে পারে।
আরো পড়ুন:– নতুন বছরের শুরুতেই সর্বনাশ! বন্ধ হয়ে যেতে পারে WhatsApp, বিস্তারিত জানুন