Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- এই শতকের মানবতার সাঙ্কেতিক ভাষা বা কোড লিখবে কৃত্রিম মেধা বা এআই ৷ মঙ্গলবার ফ্রান্সের প্যারিসে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশ্ববাসীকে এই বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি ৷
প্যারিসের এই ‘এআই অ্যাকশন সামিট’-এ ভারতকে সহ-সভাপতিত্ব করার আমন্ত্রণ জানিয়েছে ফ্রান্স ৷ প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁর বক্তৃতায় প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁকে তাঁর বন্ধু বলে উল্লেখ করেন এবং এই এআই সামিট-এর আমন্ত্রণের জন্য কৃতজ্ঞতা জানান ৷
এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করে প্রধানমন্ত্রী মোদি লেখেন, “বিশ্বের নেতা, নীতি প্রণেতা, বিশেষজ্ঞ, উদ্ভাবক এবং তরুণদের একত্র করার লক্ষ্যে প্যারিসে অনুষ্ঠিত এআই অ্যাকশন সামিট একটি প্রশংসনীয় প্রচেষ্টা ৷ এখানে এআই নিয়ে সবাই একটি অর্থপূর্ণ কথোপকথনে অংশ নিয়েছে ৷”
তিনি বলেন, “রাজনীতি, অর্থনীতি, নিরাপত্তা এবং সমাজকে নতুন আকৃতি দিচ্ছে কৃত্রিম মেধা ৷ এই শতাব্দীতে মানবতার কোড লিখছে এআই ৷ কিন্তু মানব ইতিহাসে অন্য সব প্রযুক্তি যেভাবে মাইলফলক ছুঁয়েছে, এটা তার থেকে আলাদা ৷ দিনে দিনে অভূতপূর্ব মাত্রা ও গতিতে এগিয়ে চলেছে কৃত্রিম মেধা ৷ তার চেয়েও দ্রুতগতিতে এআই ছড়িয়ে পড়ছে ৷ আমাদের অংশীদারি মূল্যবোধ, ঝুঁকিগুলি তুলে ধরা এবং নিজেদের মধ্যে বিশ্বাস গড়ে তুলতে প্রশাসন ও পরিমাপক স্থাপন করতে হবে ৷ তাই এবার সমগ্র বিশ্বের একসঙ্গে কাজ করা প্রয়োজন ৷”
প্রযুক্তির গণতন্ত্র প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, “আমাদের প্রযুক্তিকে গণতান্ত্রিক করে তোলা উচিত ৷ এর প্রয়োগ মানবকেন্দ্রিক হয়ে উঠুক ৷ সাইবার নিরাপত্তা, ভুল তথ্য এবং ডিপফেকের সঙ্গে জড়িত সমস্যাগুলির মোকাবিলা করতে হবে ৷” তথ্য বা ডেটা যেন কখনও পক্ষপাতদুষ্ট না হয়ে ওঠে ৷ এই বিষয়ে জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিশ্বাস এবং স্বচ্ছতাকে আরও ব্যাপ্ত করতে আমাদের উন্মুক্ত উৎসের পদ্ধতি বা ওপেন সোর্স সিস্টেম তৈরি করতে হবে ৷ পক্ষপাতহীন উন্নত মানের স্বাধীন ডেটা সেন্টার গড়ে তুলতে হবে ৷ প্রযুক্তিকে গণতান্ত্রিক, মানব-নির্ভর তার প্রয়োগ করতে হবে ৷ আমাদের স্থানীয় বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে প্রযুক্তির শিকড় গ্রোথিত রয়েছে, এটা নিশ্চিত করতে হবে ৷”
কৃত্রিম মেধার দাপটে মানুষ চাকরি হারাবে- প্যারিসের এআই সামিটে বিশ্বের তাবড় রাষ্ট্রনেতাদের সামনে এই তত্ত্ব খারিজ করে দেন প্রধানমন্ত্রী ৷ তিনি বলেন, “কৃত্রিম মেধার কারণ কাউকে তাঁর চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হবে, এআই-কে নিয়ে এটাাই সবচেয়ে বড় ভয় ৷ কিন্তু ইতিহাস দেখিয়েছে যে প্রযুক্তির কারণে চাকরি উধাও হয়ে যায়নি ৷ শুধু এর ধরনটা পাল্টেছে ৷ এআই পরিচালিত ভবিষ্যতে আমাদের জনগণের দক্ষতা এবং পুনঃদক্ষতার ক্ষেত্রে আমাদের আরও বিনিয়োগ করতে হবে ৷”
এদিন বক্তৃতার শুরুতে প্রধানমন্ত্রী এআই-এর সুবিধে এবং সীমাবদ্ধতা- দু’টি দিকই তুলে ধরেন ৷ তিনি জানান, এআই অ্যাপ-এর মাধ্যমে কোনও চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনের ব্যাখ্যা পাওয়া যেতে পারে ৷ ভাষার জটিলতা ছাড়া সহজভাবে সেই প্রেসক্রিপশনকে ব্যাখ্যা করে বোঝাতে পারবে এআই অ্যাপ ৷ এই অ্যাপ-এরই সীমাবদ্ধতাও আছে ৷
তিনি বলেন, “আমাদের গভীরভাবে ভাবতে হবে ৷ উদ্ভাবন এবং প্রশাসন নিয়ে আমাদের খোলামেলা আলোচনা করতে হবে ৷ প্রশাসন মানেও সবার প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা ৷ বিশেষত বিশ্বের দক্ষিণ গোলার্ধে ৷ এখানে সামর্থ্যের অভাব আছে, তা কম্পিউ করা হোক বা, শক্তি, মেধা, তথ্য অথবা অর্থনৈতিক উৎসই হোক ৷”
আরও পড়ুন:- কলকাতা টু বারাণসী 6 ঘণ্টায় ! তৈরি হচ্ছে নয়া এক্সপ্রেসওয়ে