একটাই উপায়ে প্রাণভিক্ষা পেতে পারেন কেরালার নার্স, কী এই ‘ব্লাড মানি’? জেনে নিন

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- ইয়েমেনে ফাঁসির সাজা দেওয়া হয়েছে নিমিশা প্রিয়াকে। রক্ত জল করা পয়সা দিয়ে আইনজীবীর ফি মেটানো থেকে শুরু করে প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা চাওয়া, তাঁকে বাঁচাতে পরিবারের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট রশদ আল-আলিমি ইতিমধ্যেই হত্যাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ডে অনুমোদন দিয়েছেন। আগামী এক মাসের মধ্যেই তাঁর ফাঁসি হওয়ার সম্ভাবনা। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই ভেঙে পড়েছে কেরালার নার্সের পরিবার। চোখের সামনে সমস্ত রাস্তা বন্ধ তাঁদের। কী উপায় মৃত্যুদণ্ডের হাত থেকে বাঁচতে পারেন নিমিশা প্রিয়া?

ভারত সরকার জানিয়েছে, সবরকমভাবে নিমিশা প্রিয়ার পরিবারকে সহায়তা করা হবে। বিদেশ মন্ত্রকের বার্তার পর ক্ষীণ হলেও আশা জিইয়ে রাখছে নিমিশা প্রিয়ার পরিবার।

কী উপায়ে রদ হতে পারে নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড?

একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, শরিয়া আইন অনুযায়ী, আর্থিক সহায়তার বিনিময়ে দোষীর সঙ্গে সমঝোতা করতে পারেন নিহতের পরিবার। এই আর্থিক সাহায্যকেই শরিয়া আইনে বলা হয় ‘দিয়্যা’ কিংবা ‘ব্লাড মানি’। অপরাধ করলে এই ‘ব্লাড মানি’-র মাধ্যমে ক্ষমা ভিক্ষা চাইতে পারেন একজন অপরাধী। সে ক্ষেত্রে নিমিশা প্রিয়ার হাতে যে ব্যক্তি খুন হন তাঁর পরিবার চাইলে ‘ব্লাড মানি’ নিয়ে প্রাণভিক্ষা দিতে পারেন কেরালার নার্সকে।

জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে আইনজীবীর মাধ্যমে নিমিশা প্রিয়ার পরিবার নিহতের পরিজনদের হাতে ৪০ হাজার মার্কিন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ৩৪ লক্ষ টাকার বেশি) ‘ব্লাড মানি’ হিসেবে তুলে দেন। তবে আরও ৪ লক্ষ মার্কিন ডলার প্রয়োজন। ভারতীয় মুদ্রায় যা ৩ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকারও বেশি। এ টাকা জোগাড় করতে পারলে তবেই প্রাণভিক্ষা পেতে পারেন কেরালার নার্স।

আরও পড়ুন:– প্যান কার্ড নিস্ক্রিয় হতে চলেছে নতুন বছরে? এইভাবে প্যান কার্ড স্ট্যাটাস চেক করে জানুন

২০২০ সালে তৈরি হয়েছিল ‘সেভ নিমিশা প্রিয়া ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকশন কাউন্সিল’। এই সংগঠন ক্রাউড ফান্ডিং করছিল নিমিশা প্রিয়ার ফাঁসি রদের চেষ্টায়।

এ ছাড়াও ভারত সরকারের হস্তক্ষেপ এই মামলায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মনে করছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুভাষ চন্দ্রণ কেআর। তিনি নিমিশা প্রিয়ার মা প্রেমা কুমারীর হয়ে দিল্লি হাইকোর্টে লড়ছেন। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘নিহতের পরিবারের সঙ্গে সমঝোতা করার রাস্তা এখনও খোলা রয়েছে। ব্লাড মানির বিনিময়ে নিহতের পরিবারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারেন নিমিশা প্রিয়ার পরিবার। প্রাণভিক্ষা চাইতে পারেন তাঁরা। এ বিষয়ে ভারত সরকার সহায়তা করতে পারে পরিবারকে। ইয়েমেনের আদিবাসী নেতাদের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসার ক্ষেত্রে ভারত সরকার মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে পারে। আর্থিক সহায়তাও করতে পারে ব্লাড মানি জোগাড় করার ক্ষেত্রে।

আরও পড়ুন:– ‘এবার ঘুরে দাঁড়ানোর পালা’- কার উদ্দেশ্যে বার্তা সলমন খানের ?

কী দোষ নিমিশা প্রিয়ার?

২০১৭ সালে ইয়েমেনের নাগরিক তালাল আবদোকে হত্যার দায়ে সাজা কাটছেন কেরালার নার্স নিমিশা প্রিয়া। কেরালার পালক্কড়ের বাসিন্দা নিমিশা প্রিয়া একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স। ইয়েমের বেসরকারি হাসপাতালে গত কয়েক বছর ধরে কর্মরত তিনি। অর্থের অভাবে তাঁর স্বামী ও নাবালিকা মেয়ে দেশে ফিরে আসেন ২০১৪ সালে। সে বছরই গৃহযুদ্ধ শুরু হয় ইয়েমেনে। নতুন করে ভিসা ইস্যু করা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আর ইয়েমেনে যেতে পারেনি নিমিশার স্বামী-সন্তান।

এর পর ২০১৫ সালে তালাব আবদো মাহদির সাহায্যে ইয়েমেনের রাজধানী সানাতে একটি ক্লিনিক খোলেন নিমিশা। ইয়েমেনের নিয়ম অনুযায়ী, সে দেশের নাগরিক না হলে নিজস্ব ক্লিনিক খোলা যায় না। নিমিশাকে সাহায্যের বদলে মেহদি কেরালাতেও একমাস ঘুরে যান। সে সময়ে নিমিশার বিয়ের ফটো চুরি করে পরবর্তীতে সেটিকে বিকৃত করেন তিনি।

কেরালার নার্সের মৃত্যুদণ্ডে অনুমোদন ইয়েমেনের প্রেসিডেন্টের, কী জানাল দিল্লি?

ইয়েমেনে ফেরার পর নিমিশাকে ফুঁসলিয়ে ক্লিনিকের মালিকানা সংক্রান্ত সমস্ত কাগজ নিজের নামে করে নেন মেহদি। অভিযোগ, এর পর বিয়ের বিকৃত ছবি দেখিয়ে নিমিশাকে নিজের স্ত্রী হিসেবে দাবি করে ব্ল্যাকমেল শুরু করেন মেহদি। নিমিশার অভিযোগ, মেহদি তাঁকে শারীরিক হেনস্থাও করতেন। পাসপোর্টও নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন। মেহদির বিরুদ্ধে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নিমিশা তবে পদক্ষেপ করার বদলে ওই নার্সকেই ছ’দিনের জন্য জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।

এর পর ২০১৭ সালে জেলের ওয়ার্ডেনের পরামর্শ নিয়ে মেহদিকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ান নিমিশা। পাসপোর্ট উদ্ধার করার চক্করে ঘুমের ওষুধের ডোজ় বেশি হয়ে যায় এবং মৃত্যু হয় তালাল আবদো মেহদির।

আরও পড়ুন: টাকাতেই কি আটকে সুখের ঠিকানা ? উত্তরের খোঁজে ঋত্বিক-শোলাঙ্কি 

 

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন