Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- অরিজিৎ সিংহ, মমতাশঙ্কর, তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার থেকে নগেন্দ্রনাথ রায়, গোকুলচন্দ্র দাস— বাংলা থেকে ন’জন বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁদের কৃতিত্বের জন্য এ বারের পদ্মশ্রী সম্মানের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। তবে এই ন’জনের মধ্যে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সন্ন্যাসী কার্তিক মহারাজকে পদ্ম–সম্মান দেওয়া নিয়েই বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে। তাঁকে পদ্ম সম্মান দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল, সিপিএম ও কংগ্রেস।
কার্তিক মহারাজকে পদ্মশ্রী দেওয়া এই পুরস্কারের রাজনীতিকরণের নিদর্শন বলেই তৃণমূল এবং বাম–কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করছেন। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য কার্তিক মহারাজকে পদ্ম–সম্মান দেওয়া যথাযথ বলেই মনে করছেন।
তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘কার্তিক মহারাজ প্রমাণ করে দিয়েছেন, পদ্মশ্রী বিজেপির সুপারিশেই হয়। বিজেপি এটাই প্রমাণ করে দিল, সব সময়ে পদ্মে–শ্রী থাকে না, বিশ্রীও থাকে। তাঁকে দেখে আমাদের হিন্দুত্ব শিখতে হবে না। কার্তিক মহারাজ হিন্দুত্বের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর নন। এই একজনকে পদ্ম–সম্মান দিয়ে বাকিদের কৃতিত্বে জল ঢেলে দেওয়া হয়েছে।’
তৃণমূলের এই তীব্র সমালোচনার মুখে কার্তিক মহারাজ বলেছেন, ‘উনি রাজনৈতিক দলের মুখপাত্র, উনি ওঁর মতো করে বলছেন।’ ২০২৪–এর লোকসভা নির্বাচনের সময়ে কার্তিক মহারাজ তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। একটি সভায় স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেলডাঙার এই সন্ন্যাসীর উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘এলাকায় এলাকায় গিয়ে ধর্মের নামে বিজেপি করে বেড়ান! আমি বলছি, আপনি করুন। কিন্তু বিজেপি–র চিহ্ন বুকে লাগিয়ে রেখে করুন। লুকিয়ে লুকিয়ে কেন?’
তৃণমূলনেত্রীর এই অভিযোগ কার্তিক মহারাজ অস্বীকার করলেও বিতর্ক তাঁর পিছু ছাড়েনি। কার্তিক মহারাজের নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমে বহু সাধারণ মানুষও প্রশ্ন তুলেছেন।
যদিও শুভেন্দুর যুক্তি, ‘কার্তিক মহারাজ শুধু একজন আধ্যাত্মিক নেতা নন। তিনি যে ১৩টি স্কুল তৈরি করেছেন, অনেকেই জানেন না। বেলডাঙায় তিনি হাসপাতাল তৈরি করেছেন। তিনি শুধু গীতা পড়ার জন্য প্রচার করেননি, তিনি ধর্ম–বর্ণ নির্বিশেষে শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। তাই কার্তিক মহারাজ–সহ বাকিদের নির্বাচন যথাযথ হয়েছে।’
২০২৪–এর লোকসভা নির্বাচনের সময়ে মুর্শিদাবাদ জেলায় কার্তিক মহারাজের ভূমিকা নিয়ে কংগ্রেসের একাংশ আগেই প্রশ্ন তুলেছিল। তিনি পদ্ম–সম্মানের জন্য নির্বাচিত হওয়ায় অধীর চৌধুরী বলেছেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের যদি এই মানসিকতা হয় যে, তাঁদের পার্টির নেতাকে পুরস্কার দেবে, তা হলে এই পুরস্কারের গুরুত্ব থাকবে না। যে কমিটি এই পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তাদের উপরে রাজনৈতিক প্রভাব সৃষ্টি করা হচ্ছে। ফলে সেই পুরস্কারের গুরুত্ব থাকছে না।’ একই সুরে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘এই রকম মহারাজ অনেক রয়েছেন। দিল্লির সরকার পদ্ম–সম্মানকে কলুষিত করেছে।’
আরও পড়ুন:– SBI ব্যাংকে নতুন করে কর্মী নিয়োগ চলছে! আবেদন পদ্ধতি সহ বিস্তারিত দেখেনিন
আরও পড়ুন:– সবে শেষ হয়েছিল নির্মাণ, হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল চারতলা ভবন, বহু মানুষের চাপা পড়ার আশঙ্কা, দেখুন ভিডিও
